সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
আমার আগের পোষ্ট টির প্রেক্ষিতে। এত চমৎকার সব মন্তব্য আপনারা করেছেন। আমি কৃতজ্ঞ।
আমাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিলেন।
বেশ ভারী মন নিয়েই লেখাটি লিখেছিলাম। কিছুটা আবেগতাড়িতভাবে।
অবশ্য আমার লুকানোর কিছু নাই। আমি এত সামান্য যে আমার আর কি আড়াল!
এক বিশিষ্ট মানুষের মন্তব্য আমাকে এই লেখা লিখিয়েছে।
তাঁকে ধন্যবাদ। নমস্কার।
আবার শুরু করব।
গল্প বলিয়ে মানুষ। আঞ্চলিক ইতিহাসের। বন্ধুরা ভালোবেসে ডাকেন সেনপাহাড়ী র কথক ঠাকুর বলে।
কতজনকে কত কথা ও কাহিনী শুনালাম আজ পর্যন্ত।
কত বিশিষ্ট মানুষ এলেন গেলেন থাকলেন " তেপান্তর নাট্য গ্রামে "। তাঁদের জন্য আঞ্চলিক ইতিহাস এর গল্প শোনানোর একটা সেশন থাকে।
কত জনকে নিয়ে ঘুরলাম। তাঁদের এই এলাকার মানে আমার " সেনপাহাড়ী পরগণা " র গল্প শোনালাম। এক বন্ধু এই মাত্র জিজ্ঞেস করলেন সেনপাহাড়ী কি! স্বাভাবিক প্রশ্ন।
বাঙ্গলার বিখ্যাত সেন রাজা দের পূর্বপুরুষ রা কর্ণাট দেশ থেকে এসে প্রথমে এই " গড় জঙ্গল " এলাকায় বসতি স্থাপন করেন। নাম তাই সেনপাহাড়ী পরগণা।
আমার কথা নয়। পণ্ডিত প্রবর সুকুমার সেনের কথা। এখনও চালু আছে রাজস্ব দপ্তরে। বলতে পারেন মোটামুটি এখনকার কাঁকসা থানা এলাকাই
পরগণা সেনপাহাড়ী। এই নিয়ে আমার লেখা কত জায়গায় যে আছে।
আমার " মাটির প্রদীপ। আঞ্চলিক ইতিহাস। প্রণব ভট্টাচার্য এর লেখালেখি। এই ফেসবুক পেজ খুলে দেখতে পারেন।
মাত্র দশ টাকা দামে অনেকগুলি পুস্তিকা লিখে ছাপিয়ে ছিলাম। সাধারণ মানুষের জন্য। আমি পণ্ডিত নই। পণ্ডিতদের জন্যও নই। যদিও আজকাল পি এইচ ডি করছেন এমন অনেকে আসেন আমার কাছে। আমি বলি ভাই আমি পথে হাঁটা মেঠো মানুষ। এই জঙ্গল দেশের মানুষ। আমার কাছে!
আমি এই ভাবেই গুণী জন সমাবেশেও বলি।
অধ্যাপক তমাল দাশগুপ্ত তাঁর সপ্তডিঙা ফাউন্ডেশনের পক্ষে মহাবোধি সোসাইটি হলে বক্তা হিসাবে ডেকেছেন। গেছি - বলেছি সেই আমার এই এলাকার কথা। ইছাই ঘোষের দেউল সংক্রান্ত নানা কথা। তাঁদের কে ধন্যবাদ জানাই এই অবসরে।
বাঙ্গালী শিকড় বিচ্ছিন্ন জাত। বাঙ্গালী কে তাঁর শিকড়ে ফিরতে হবে। জানতে হবে তার গৌরবোজ্জ্বল অতীত। আজকের অনেক বাঙ্গালী কে ছিলেন অতীশ দীপঙ্কর জানেন না।বাঙ্গালী নিজেকেই চেনে না। বাংলাদেশেও দেখেছি একই অবস্থা। আমি অতীত বিলাসী নই। বা শুধু অতীত যাপন করতে চাইনা। কিন্তু আমার ঐতিহ্য। সেই ঐতিহ্য এর প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। আমার অতীত কে আমি জানবনা। তমাল বাবু ভালো গবেষক। বাঙ্গালী র অতীত নিয়ে খুব ভালো কাজ করছেন। আশার কথা এলাকার ইতিহাস নিয়ে এখন অনেকে ভালো কাজ করছেন।
ডকুমেন্টটেশনের কাজ ভালো হচ্ছে।
চাই মানুষ তার মাটির কথা জানুক। তার লক্ষ্যে যেখানে যে আমাকে ডাকেন আমি যাই। বলি আমার এলাকার কথা। তার প্রতিবেশী এলাকার কথা। নদীর ওপারে বীরভূম। আমাদের এক পা ওপারে আর এক পা এপারে। সীমান্ত এলাকা।
সীমান্ত এলাকা। তাই নিত্য যাতায়াত। পারাপার।
আপনারা অনেকে ই জানেন গ্রামে গ্রামে ঘুরি।
গ্রাম তো উপেক্ষিত অবজ্ঞাত। কেন্দ্র থেকে দূরে।
সেই গ্রামের একটা ভাঙ্গা মন্দির নিয়ে কার ই বা
আগ্রহ থাকতে পারে।
কিন্তু আমাকে টানে। কখন গড়ে উঠল। সেই সময় আর ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে গেল। এই সময়কাল।
বোঝার চেষ্টা করি তার আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি।
আর এখানে ছবি দিয়ে সেই গ্রামটির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আপনাদের শোনাই। ধন্যবাদ জানাই এই মাধ্যম কে। এই ফেসবুকে আমার অনেক লেখা।
সেই ২০১২ থেকে। কত ভালো ছবি হারিয়েছি।
টেকনিক্যালি অতটা দক্ষ নই। নিজে নিজে শিখেছি। ছাত্রদের কাছে শিখেছি। ওরা বার বার বলে স্যার ল্যাপটপ নেন। আমি বলি আর শিখে উঠতে বোধহয় পারবনা রে। এই ভালো -
সব সময় সকলকে সঙ্গ দিতে পারিনা। এই যেমন সেদিন একজন বিশিষ্ট মানুষ গেলেন অন্য আরেক জনের সঙ্গে। বললাম ইলামবাজারের দু টি মন্দির দেখে যান ঘুড়িষা। সেখানের দু টি মন্দিরের কাজ দেখুন। তারপর যান জয়দেব কেন্দুলী। দেখুন রাধাবিনোদ মন্দিরের কাজ।
এবার তুলনামূলক আলোচনা করুন।
আমাকে অনেকে সঙ্গে চান। পারিনা। সবসময়।
আবার সুখ্যাত ট্যুর অপারেটর অভিজিৎ বাবু (ধর চৌধুরী ঐতিহাসিক গাইড হিসাবে ডেকে নেন।
এই এলাকায় এলেই।
মৌখিরা কালিকাপুর কত মানুষ কে নিয়ে গেছি।
আমার নিজের খুব প্রিয় জায়গা। মন্দির আর প্রাসাদ নগরী। হেরিটেজ ভিলেজে র দাবী এখানে বারবার লিখে সরকারের নজরে আনতে চেয়েছি।
অযোধ্যা বনকাটি তেমনই মন্দির ময়।
অতি বিখ্যাত অপূর্ব টেরাকোটা অলংকরণ সজ্জিত গোপালেশ্বর শিব মন্দির। ১৭৫৪ শকাব্দে নির্মিত।
বিখ্যাত এখানকার পিতলের রথ। তার অলংকরণ নিজে চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।।
ইছাই ঘোষের দেউল যাবার পথের উপরে।
অথচ অনেকে না জানার জন্য মিস করেন।
হেরিটেজ ট্যুর এখন বিদেশে খুবই জনপ্রিয়।
সরকার একটু ভাবুন।
আসবেন। এই এলাকায়। যদি হাতে সময় নিয়ে আসেন বা তেপান্তর নাট্য গ্রামে থেকে ঘুরতে চান
হয়তো বা আমাকে সাথে পেতে পারেন।
না পেলে গল্পের সেশন তো থাকবেই।
এখানে থাকা খাওয়ার খরচ শান্তিনিকেতনের আশেপাশের রিসর্ট থেকে অনেক কম।
আসবেন। করোনা ভীতি দূর হোক। এখন সাবধান থাকাই ভালো। এখানের শান্ত পরিবেশে অবশ্য তেমন ভয় নেই।
বনবিভাগের উদ্যোগে গড় জঙ্গল এলাকায় ট্রেকিং এবং দিনের বেলায় থাকার ব্যবস্থা হচ্ছে। ভালো।
আমার সব পুস্তিকা শেষ হয়ে গেছে। বারবার ছাপা হয়েছে।। ইছাইঘোষের দেউল। গড় জঙ্গল এবং দেবী শ্যামারূপা। পরগণা সেনপাহাড়ী ঃ কাঁকসা থানার সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত।
অযোধ্যা বনকাটি সাতকাহনিয়া গ্রামের ইতিকথা।
এই সব।
সাধারণ মানুষ তার মাটির কথা জানুক।
এই ছিল আমার লক্ষ্য।
ভেবেছিলাম একটা সিরিজ করব।
No comments:
Post a Comment