Friday, 6 November 2020

কুঠি বাড়ি ভিত্তিক ব্যবসা বাণিজ্য।সাহেব ঘাট

আবার ফিরিয়ে দিলাম 
পুরনো পোষ্ট ।সাহেব ঘাট।। 
। কুঠিবাড়ি ভিত্তিক সেদিনের ব্যবসা বাণিজ্য।। পর্ব  -
ঘাটের নামই হয়ে গিয়েছিল সাহেব ঘাট।
ইলামবাজার খয়েরবুনি র শিমূল তলার ঘাট।
অজয়ের এই ঘাটে সারাদিন ই ছোট বড় নানা নৌকো র আনাগোনা।
ঘাটের পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে বলদ গোরুর অনেক গাড়ি।
মাল উঠছে। নামছে। কত রকমের সে সব জিনিষ।
পশ্চিম দিক থেকে গঙ্গাপুরের ঘাট _
ছুঁয়ে এই ঘাটে।
পশ্চিমে সেনপাহাড়ী র জঙ্গল ভূমি। সেই জঙ্গল ভূমির
তখন নামই হয়ে গেছে ' লা মহল '।
মানে লাক্ষা মহল। প্রচুর মাল আসে সেখান থেকে।
আবার আরো পশ্চিমে এখনকার ঝাড়খণ্ডের লাগোয়া
জঙ্গল ভূমি থেকে। ওদিকের লাকরাকোন্দা বেশ বড়
ব্যবসাকেন্দ্র। সেখান থেকে ও মাল আসে।
ইলামবাজার Erskine সাহেবের বিশাল কুঠিবাড়ি।
বড় বড় গুদামঘর। সেখানে মাল গুদাম জাত হচ্ছে।
সাহেবের বসবাসের বাংলো পাশ দিয়ে আমবাগানের
পাশ দিয়ে রাস্তা। লাল মাটি। মোরামের রাস্তা।
সাহেব গিন্নী সংসারের যে টুকু সামান্য কাজ তা সেরে
  সারাদিন পশ্চিমের জানালা খুলে বলদ গোরু গাড়ির
চলে যাওয়া সারি দেখেন। পরপর সার দিয়ে চলেছে।
সাহেবের ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠেছে।
তাই ভালো কি আর না লাগে তাঁর।
দ্বারোন্দার পর এই ইলামবাজার কুঠি।
সুরুলে আছেন চীপ সাহেব। বিশাল যেমন তার কুঠিবাড়ি।
দাস দাসী  ; চাকর বাকর ; কতো এ দেশীয় কর্মচারী।
বাগান ; চিড়িয়াখানা ; জলাশয় নিয়ে তার কুঠিবাড়ি।
তিনি ' বড়ো সাহেব '।

এর আগে আমরা ইলানবাজার এর আরস্কিন বা আরস্কাইন সাহেবের কুঠিবাড়ি নিয়ে লিখেছি। তাই তার আর পুনরাবৃত্তি
করছিনা এখানে। লাক্ষা বা গালা আর নীলের ব্যবসা এখানে।
অন্য কথায় আসি
ইলামবাজার এর ' লরি ' বা নুড়ি রা তো গালার কাজ আগে থেকেই জানতেন বা নানা জিনিষ তৈরী করতেন।
মেলা খেলায় সে সব বিক্রি হত। ইলামবাজার হাটতলার পশ্চিমে লরিপাড়া। বসুধা র লরি রা ও তাঁদিকে গালা বেচতেন।
অবাক হতে হয়। ১৮৫৫ সালে প্যারিসে এক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী তে Exposition Universelle তে প্রদর্শ বস্তুর মধ্যে
বিশেষ স্থান পেয়েছে ইলামবাজার এর গালা শিল্পের উৎকৃষ্ট
সব শিল্প বস্তু। 'of excellent design and craftsmanship '।
এখানকার গালার শিল্প বস্তুর  দারুন চাহিদা ছিল।
মুর্শিদাবাদ নবাব মহলে এমনকি বীরভূমের রেশমের মতো
মোগল হারেমে এখানকার গালা দ্রব্যের ভীষণ চাহিদা ছিল।
  আর ছিল এক দারুন জিনিষ। বিশেষ পদ্ধতি তে তৈরী
গালার থালা বাটি। বিষ মেশানো খাবার তাতে পরিবেশন করলে কিছুক্ষণের মধ্যে পাত্র ফেটে যেত।
যেখানে শুধু অবিরাম নানা চক্রান্তের জাল বোনা হচ্ছে
সেখানে কি এ জিনিষের কদর না হয়।
  সে আমাদের এই ইলামবাজার। এখানের তৈরি সামগ্রী।
এই অতীতের জন্য গর্ব হওয়া উচিৎ।
আমি জানিনা কজন ইলামবাজার বাসী এ খবর রাখেন।

এই পর্ব এখানেই শেষ করি।
আরস্কাইন সাহেবের পারিবারিক সমাধি স্থল। ছবি সৌজন্যে
সত্যশ্রী উকিল।
অন্য সব ছবি আমার ই তোলা
গ্রন্থ সহায়তা। জেলা গেজেটিয়ার। বীরভূম। ও ম্যালি। 
নিজের প্রবন্ধ। কৌলাল প্রকাশিত  বঙ্গ সংস্কৃতি র অঙ্গনে। 
পত্রিকা। রাঢ় ভাবনা। সম্পা। সৌরেন্দ্র নাথ চট্টোপাধ্যায় 
------------------------------------------------------------------( চলবে)

No comments:

Post a Comment