।।ঊষহর।।
সর্বপ্রকার ঊষরতা কে হরণ করে সে হয়েছে ঊষহর।
আহা। শ্যামলে শ্যামল তুমি নীলিমায় নীল।
ঘণ সবুজ অরণ্যানী র ভিতর দিয়ে তার কাছে পৌঁছাতে হয়।
মাটি তো নয় সোনা।
অজয়ের পলিমাটি দিয়ে গড়া তার বিস্তৃত কৃষিক্ষেত্র।
অজয়ের যে চরে একদিন ছিল নীল চাষের জমি
ছিল সাহেব ডাঙ্গা র কুঠিবাড়ি।
দ্বারোন্দায় আরস্কিন সাহেবের বিশাল কুঠিবাড়ি।
হাতি বাঁধা থাকত মোটা মোটা থামে।
সেই সাহেবডাঙ্গার সব মাঠ এখন সব্জী চাষের জন্য বিখ্যাত।
পূর্ব্ববঙ্গীয় মানুষ জনের পরিশ্রমে এখনসেখানে সোনা ফলে।
ইলামবাজার থেকে অনেক টা ভিতরে।পূর্বদিকে।
ঘণ জঙ্গলের ভিতর দিয়ে পাকা রাস্তা
এই জঙ্গল ভুমির ভিতরে গড়ে উঠেছে নানা ফার্ম হাউস। রিসর্ট। আরও গড়ে উঠছে। গাঢ় ঘণ সবুজ আর নৈঃশব্দে ভরা।
ছোট্ট গ্রাম ঊষহর। পাশেই ধরমপুর।
ব্রাহ্মণ আচার্য পরিবারের প্রতিষ্ঠিত শিব মন্দির এর ইঁট গুলিকে আজও পরম মমতায় ধরে রেখেছে বটবৃক্ষের সহস্রবাহু।
শ্রাবনে ধূমধাম করে পূজা হয়।
সামনের পুকুর টির নাম 'লা বাঁধা ' বা লা বাঁধ। লাক্ষারস এর স্মৃতি জেগে ওঠে। খোঁজ নিতে হবে। কে বলবে আর।
গ্রামে র কয়েকটি ডোম সম্প্রদায়ের পরিবার। তাঁরা ১৩ ই বৈশাখ আর এক বিশাল বটতলায় কালু ডোম এর পুজা করেন।
সেই ' কালু ডোম '। ধর্মমঙ্গল কাব্যের বীর কালু।
লাউসেন এর এক সেনা পতি।এই অজয়ের দক্ষিণ তীর ধরে সে পৌঁছেছিল ' লাউসেন তলায় '।
ডোম ; বাগদী ; সাঁওতাল ; সদগোপ ; সাহা ; আর একঘর ব্রাহ্মণ কি সুন্দর মিলে মিশে আছেন। সবার জীবিকা ই কৃষিকাজ। সবাই মোটামুটি স্বচ্ছল।
সুবল সন্ধান দিয়েছিল। সুবল কর্মকার। নানা গুণেগুণী। নামি
গৃহ শিক্ষক। আর কথা হচ্ছিল তার ই ছাত্র সদগোপ ' বাড় ' পদবীর নন্দ ; তার বাবা ; মা য়ের সাথে। সব মাটির মানুষ।
নন্দ গুণী ছেলে। রসায়নে বিশ্বভারতী তে পি এইচ ডি র গবেষক। মনে মনে বললাম বাহ।
গর্ব হয় তোমাদের জন্য। এই এই গ্রাম থেকে উঠে এসেছো।
শুভেচ্ছা নন্দ তোমাকে। তোমার পরিবার কে।
ঊষহরের মুখ উজ্জ্বল কর।
ঊষার আলোয় ভরে উঠুক ঊষার ডিহি বা ঊষহরডিহি ; থেকে
ঊষহর হয়ে সমগ্র জঙ্গল ভূমি।
' চৌপাহারী ' জঙ্গল এর সব আদিবাসী পাড়ায় বেজে উঠুক মাদল।কত আদিবাসী পল্লী আছে এই জঙ্গল ভূমিতে। আর এই 'চৌপাহারী ' জঙ্গল ভূমির চারিপাশে কত স্নিগ্ধ সবুজ সব গ্রাম।দক্ষিণে অজয়। তার কোল ঘেঁষে কত গ্রাম। সব্জী ক্ষেত। আর বালিখাদ। বালি এখন সোনা।
কত কথা আছে তাদের। আমার ক্ষমতা য় বোধহয় আর কুলাবে না। সে সব কথা শোনানো র কাজ -
ইলামবাজার। আমার প্রিয় জায়গা। তার চারপাশে আমার বাল্যের ; যৌবনের নানা স্মৃতি। কত কথা মনে পড়ে। কে আর মনে রাখে। সবই তো হারায়। সব হারানোর আগে কিছু লিখে রেখে যেতে চেয়েছিলাম। বেশী দিন নয়। পঞ্চাশ বছর আগের কথা। সেই সময়কাল -
কিছু মানুষের কথা।
দেখি যদি পারি।
আর সাথে ছিল প্রিয়ব্রত সাহা ; আমার এক প্রিয় ছাত্র। বিশ্বভারতী র সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপণ বিভাগের মাষ্টারস এর ছাত্র। এখানে তার তোলা কিছু ছবি ব্যবহার করেছি।
দয়া করে ছবিতে শুধু লাইক দিয়ে মূল পোষ্ট থেকে ছবি কেটে বের করে দেবেননা।
No comments:
Post a Comment