গ্রাম পানাগড়।
নাম তার পানাগড়।
বারুই পাড়ায় বারুই রা আজও আছেন।
আর বাউড়ি পাড়ায় বাউড়ি রা।
পানের কোন বরজ আজ আর নাই।
পানের ব্যবসা যাঁরা করতেন সেই তাম্বুলী
সম্প্রদায়ের আজ আর কেউ নাইএই গ্রামে। একটি পরিবার ও না।
এই পানপাতা র ঘর থেকেই নাম পানাগড়।অন্য আর ও মত আছে। সে নিয়ে নানা বিতর্ক। যার মধ্যে যাচ্ছিনা।
পান পাতার চাষ আর তার ব্যবসা করে
যথেষ্ট ধনী হয়ে উঠেছিলেন তাঁরা।
নির্মান করিয়েছিলেন বিখ্যাত মন্দির।
শালগ্রাম শিলা। বিষ্ণু দেবতা। দামোদর।
এই গ্রাম ছেড়ে চলে যাবার সময় শালগ্রাম শিলা প্রদান করেছিলেন তাঁদের
কোটা গ্রামের গুরুদেব এর হাতে।
আর মন্দির দেখভালের জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলেন গঁড়াই পরিবার কে।
নিশ্চয়ই জমি জায়গা তার জন্য দিয়েছিলেন। তারপর তাঁরা কোথায় গেলেন কোন গ্রামে- আজ আর কেউ নাই
সে কথা বলবার জন্য
কি চমৎকার সে মন্দির। যেমনআকৃতি
তেমন তার টেরাকোটা র অনবদ্য কাজ।
কালের করাল গ্রাসে সম্পূর্ণ ধ্বংসের
দিন গুনছে।
লতাপাতা ঝোপঝাড়ে ভরে আছে সে মন্দির। তার কাছে যায় সাধ্য কার। সত্যি কিছুই কি করা যায়না। যায়। যায়।
বর্ধিষ্ণু গ্রাম এই গ্রাম পানাগড়। অনেক ধনী মানুষের বাস।
কিন্তু গ্রামের এই স্থাপত্য অলংকার ;
ঐতিহ্য কে বাঁচাতে মানুষের কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। উদাসীন আমরা।
হায় রে ' বাঁচান ' একে বাঁচান বলে মন্ত্যব্যে লিখছেন বিদেশি মন্দির তত্ব বিদ।
বারুই দের নির্মিত মাচা ডাঙ্গার বাউড়ি পাড়ার মন্দির টি র শেষ অবস্থা। এই বাউড়িদের সাথে বারুই দের ভালো সম্পর্ক ছিল। বাউড়িরা ই ছিলেন বরজের শ্রমিক। হয়তো সেজন্য ই বাউড়ি পাড়া য় মন্দির।
হারিয়ে গেছে এই গ্রামের আরও মন্দির।
আগুড়ি সম্প্রদায়ের লায়েক বাড়ির ছোট কিন্তু সুন্দর শিবমন্দির টির ভাঙ্গা দেওয়াল গুলিকে জোর করে আঁকড়ে ধরে টিকিয়ে রেখেছে
এক বটবৃক্ষ তার শতবাহু দিয়ে
কিন্তু এই মন্দির টিকে বাঁচানো যায়।
পানাগড় গ্রামে এই রকমের আর একটি
মন্দির রয়েছে। সেটি ও অসাধারণ।
' কোঁয়ার পরিবারের। তাঁরা কিছুটা চেষ্টা
করেছেন। কিন্তু সঠিক পদ্ধতি তে হয়নি।
সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ দের পরামর্শ নিতে হবে। সরকার কি পারেন না। পুরাতত্ত্ব বিভাগ কি পারেন না। নিশ্চয়ই পারেন।
এই পোষ্টে র মাধ্যমে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের
কাছে আমি সবিনয়ে আবেদন জানাচ্ছি।
কত মন্দির আমরা হারালাম। অবহেলায়।
ক্ষমাহীন আমাদের এই উদাসীনতা।
কি ছিল আমাদের অতীত। কি সুদক্ষ সেই সব সূত্রধর মিস্ত্রী রা ছিলেন। কি অসাধারণ ছিল স্থাপত্য জ্ঞান। জানবেনা তার কিছুই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।
কি উত্তর দেব তাদের।
আর নিজের মাটির প্রতি ভালোবাসা ই
যদি না তৈরী হয় - কি লাভ ইতিহাস পাঠে।
আঞ্চলিক ইতিহাস সম্পর্কে ভালোবাসা থেকে ই গড়ে ওঠে বৃহত্তর ইতিহাস বোধ।
মানুষ কে বাদ দিয়ে কিছু হয়না।
মানুষের সক্রিয় সহযোগিতা য় বাঁচুক এই
মরণোন্মুখ স্থাপত্য কীর্তি গুলি।
বাঁচুক আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য।
আমাদের অহংকার।