Tuesday, 26 June 2018

শ্যাওড়া গাছে ভয়

শ্যাওড়া গাছের- --------------------- প্রণব ভট্টাচার্য কি। নামেই ভয়। আচ্ছা শ্যাওড়া গাছে ভূত পেত্নী দত্যি দানো গুলো কতদিন আগে চেপেছিল বলুন দেখি। সে কোন ঠাকুরদা - ঠাকুরমার কালে - যাইহোক চেপে কিন্তু এখন ও আছে।দিব্যি আছে।আহা থাকুক থাকুক। আরে এ বাংলায় ভূতেদের ভবিষ্যৎ বেশ ভালোই আছে। তো। গাছ গুলো সব কোথায় যে গেল। শ্যাওড়া বলেও রক্ষা পেলনা। নদীর ধারে; বাঁধের গায়ে গায়ে; মাঠের ধারে কত ছিল।ঝোঁপ ঝোঁপ। আবার লম্বা হয়ে উঠে যাওয়া কাষ্ঠল গুঁড়ির। সব প্রায় চলে গেল। এখনো যে একেবারে নেই তা নয়।আছে। শ্যাওড়া ছাড়া আসর জমে! যে গাছের তলায় সিঁদূর লেপা পাথর আর দু চারটে মাটির ঘোড়া; দুপাশে দুটো চাঁদমালা- ব্যস আসর জম জমাট। সে গাছ দিব্যি আছে। বহাল তবিয়ৎ এ। অন্য অনেক জায়গা তেই আছে। সব ই কোন না কোন ঠাকুরের থান। নানা নামে ধর্মঠাকুরের থান ই বেশী। আটন তার। প্রতি বছর ১৩ ই বৈশাখ কালুবীরের পূজা। ডোম রা করেন। মনে পড়ছে নিশ্চয় ই। ধর্ম্মমঙ্গল কাব্যের বীর কালু ডোমের কথা। কালু কে না পেলে তো লাউসেনের জেতা হতনা। লাউসেন তলা এখন ও রয়েছে। আছে অনেক গাছপালা। শ্যাওড়া তো আছেই। এই লাউসেন তলাতেই মুখোমুখি লড়াই হয়েছিল ইছাই ঘোষের সাথে লাউসেন এর। বৃদ্ধ ইছাই হেরেছিলেন। মরেছিলেন। দু পক্ষের মারাত্মক যুদ্ধে বহু সৈন্য কে মরতে হয়েছিল রক্ত গড়িয়ে গিয়েছিল ' রক্তনালা' দিয়ে। কালু বীর ও মারা গিয়েছিল। তাঁর স্মৃতি তে জয়দেব কেন্দুলি র কাছে সুগড় গ্রামের ডোম সম্প্রদায় এর মানুষজন; যাঁরা নিজেদের কালুর বংশধর মনে করেন; তাঁরা ১৩ ই বৈশাখ তাঁর স্মৃতি তে পূজা করেন আমাদের এই জংগল মহলে এই সেনপাহারী পরগনায় সব আঁকুড়ে ডোমরা নানা থানে তাঁর পুজো করেন। আর একটা বিষয় ঐ ১৩ ই বৈশাখ গ্রামের মানুষ জন একটি ছোট শ্যাওড়া ডাল ঘরের চালে গুঁজে দেন। ঘরে বাজ পড়বেনা - এই বিশ্বাস। শ্যাওড়া র সাথে আগুন এর কোন সম্পর্ক আছে নাকি। শুকনো দুটো ডালে ঘষে আগুন ধরাতে এক বৃদ্ধ আদিবাসী মানুষ কে দেখেছিলাম।সেই কোন ছেলে বেলায়। একটা ছোট্ট টুকরোর মধ্যে গর্ত।আর সেই গর্তের ভিতর আর একটা টুকরো ঢুকিয়ে দড়ির টানে ঘর্ষণ তৈরী করে আগুন জ্বালানো। শোলায় সেই আগুন কে নিয়ে নেওয়া। সেই মানুষ টি ই বোধ হয় শেষ অগ্নিহোত্রী। ---------------- ---------

No comments:

Post a Comment