মাতামা ; কেন্দুলীর মেলা ; আর সে
মাতামার সাথে কেন্দুলীর মেলায় যায়।
যাবার পথে পড়ে নদীর ওপারে এক গ্রাম। ভুবনেশ্বর।
সেখানে এক গাছে শত শত বাদুড় ঝোলে।নীচের দিকে মুখ করে ওরা ঝোলে। কতদিন ধরে ওরা এখানে ঝুলছে -। ওদের দেখতে ওর খুব ভালো লাগে। বেশ মজা ও লাগে।
মজাটা এই জন্যে যে নীচে দিকে মুখ করে ঝোলা।
একটু একটু করে মেলা কাছে চলে আসে।
কুশেশ্বর শিব মন্দির এর পাশ দিয়ে রাস্তা।
মাতামা প্রথমে যায় কোটরে বাবার আখড়ায়।
গাছের কোটরে বাবা কে গিয়ে প্রণাম করে।
তারপর নানা আখড়ায়।
প্রাচীন বটবৃক্ষের তলে সাধু ; বাবাজী ; বোষ্টম মাতাজী দের সাথে দেখা করে। হাতজোড় করে তাঁদের কে নিজের আখড়া য়
আমন্ত্রণ জানায়। মনোহর ক্ষেপার আখড়ায় যায়।
মুখুজ্জে দের কালী কাত্যায়নী আশ্রম হয়ে কাঙ্গাল ক্ষেপার আখড়ায় যাদের সাথে দেখা করার করে নিয়ে আবার কোটরে বাবা র আশ্রমে এসে বসে। আমার জন্য প্রসাদের ফলমূল ; চিঁড়ে মাখা প্রসাদ আসে। তারপর আমাকে নিয়ে যায় সিউড়ি থেকে আসা মিষ্টি র দোকানে। দোকানের সব চেয়ে বড় রসগোল্লা টা আসে আমার জন্যে। খুব ভালোবাসি মিষ্টি।
অযোধ্যার হাটে কিশোরী ময়রার দোকানে বাঁধা দু টি রসগোল্লা। পশ্চিমে র মাঠে গোরু গাড়ি র মেলা।
গাড়ি র নীচে গাড়োয়ান দের অস্থায়ী সংসার।
চপ ; মুড়ি ; জিলিপি। দুপুরে সুযোগ বুঝে মচ্ছব খাওয়া। যমুনা দিঘির পাড় দিয়ে রাস্তা। মাঠে সিনেমা ; সার্কাস ; ম্যাজিক ; নাগরদোলা। আমাকে নিয়ে কাঠপট্টির পাশ দিয়ে পাথর পট্টি হয়ে পাক দিয়ে মূল রাস্তা দিয়ে মেলা দেখতে দেখতে নিয়ে আসে মোহান্ত অস্থলে। ঠাকুর মন্দিরে প্রণাম করে বেরিয়ে এসে
বড় মন্দির টা আমাকে দেখায়। আমি দেখি কত ছবি মন্দিরের গায়ে। হাঁ করে তাকিয়ে থাকি।
তারপর আবার সেই কোটরে বাবার আশ্রমে।
রাতে ঘুম আসেনা খড়ের উপরে কম্বল পাতা বিছানায়।
গায়ে ভালো করে ঢাকা দিয়ে মা বাইরে যায়।
গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যাই।
পরের দিন বেলার দিকে প্রসাদ খেয়ে আবার ফেরা। তার আগে অবশ্য মুড়ি ; গরম চপ ; গরম জিলিপি একবার হয়েছে। আর একবার ছোট করে মেলা য় চক্কর।
আমার মন ভরেনা। আমার জন্য মাটির রঙ করা খেলনা পাতি কিনে দেয়। কলাপট্টির পাশ দিয়ে রাস্তা। বাঁধে উঠে দেখে পূবের মাঠেও গোরু গাড়ি র মেলা। এক দুটো বাস। জীপ।
বাঁধের উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আবার শিয়াললাড়ার ঘাট। পাশে আখের ক্ষেত। মাঠে চাষী থাকলে ' দাও বাবা ভেঙে ছেলেটাকে একটা '
দক্ষিণে ঘণ জঙ্গল। মাতামা বলে ' গড় জঙ্গল ' শ্যামারূপার থানের কথা ' আর ঐ যে মাথা উঁচু মন্দির টা। ওটা?
ওটা ' দেউল '।
আবার এপারে সেই ফেরার পথ। মাঝে মাঝে গোরুগাড়ি করে লোকেরা মেলা চলেছে। আমার মনে হয় ওদের গাড়িতে যদি আমাকে নিয়ে নেয়।
মসনা মানায় পথের ধারে কামরাঙা গাছটা কে একে বারে ন্যাড়া করে দিয়েছে। একটা ও নেই। এখানের কুল ঝোঁপের কুল গুলো বেশ বড় বড়। একটা দুটো করে পাকছে। কাঁটা বাঁচিয়ে দু এক টা তুলে নি। আর বার বার পিছনে র পথের দিকে তাকাই।
©প্রণব ভট্টাচার্য । ৩ য় পর্ব।
একটি বিখ্যাত ছবি ব্যবহার করেছি। সত্যশ্রী উকিল দা র সৌজন্যে। এ ছবি আর কারও কাছে আছে কিনা জানিনা। মুকুল দে র তোলা সেই সময়ের ছবি। অনেক ধন্যবাদ উকিল দা কে।
এ শুধু ছবি নয়। ইতিহাস।
১ ম পর্ব। ২ য় পর্ব এর জন্য আমার ব্লগ বা পেজ
No comments:
Post a Comment