Thursday, 11 February 2021

সাতকাহনিয়া নবীন দাস বাবাজী র আখড়া। বালকমাতা দাসী আর অন্নপূর্ণা দেব্যা

মাটির প্রদীপ। আঞ্চলিক ইতিহাস। প্রণব ভট্টাচার্য এর লেখালেখি।
আঞ্চলিক ইতিহাসের কথা ও কাহিনী

Home
Friday, 23 August 2019
সাতকাহনিয়া বাবাজী আখড়া
সাতকাহনিয়ার বাবাজী আখড়া। অনেক পুরোনো গ্রাম। অজয়ের দক্ষিণ তীরে। একদিন ছিল অনেক গুলো বৈষ্ণব আশ্রম বা আখড়া। গাঁয়ের মাঝ খানে বিরাট পুরোনো বট জানান দিচ্ছে তার প্রাচীনত্ব।। নাম তার বাবাজী বটতলা। কোন বাবাজী যে রোপণ করেছিলেন -। বটতলার পাশেই বৈষ্ণব সমাধি স্থল । পাশেই নবীন দাস বাবাজীর আখড়া। সে অনেক পুরনো। শতবর্ষের ও বেশী। আরও ছিলেন বুড়ো বাবাজী ; সনাতন বাবাজী ; গোপাল বাবাজীর মতো সহজ সাধকেরা। আজ যদিও আর তাদের আশ্রমের চিহ্ন নাই। আছে কেবল এই নবীন দাস বাবাজীর আশ্রম। সে ও টিকে গেছে এই আশ্রমে একদিন এসে ঠাঁই পেয়ে ছিল বালকমাতা দাসী। গৃহী বোষ্টম ঘরের বাল্যবিধবা। আবার তাঁর কাছে ঠাঁই পেয়েছিলেন বামুন ঘরের প্রায় বাল্যবিধবা অন্নপূর্ণা দেব্যা। বালকমাতা কে আমি মাতামা বলেই ডাকতাম। মা ই বলতাম। কোলে পিঠে করে মানুষ করেছেন। প্রায় কোলে চাপিয়ে নিয়ে যেতেন ওপারে ভিক্ষা বা মাধুকরী করতে। বনে জঙ্গলে নানা লতা পাতা তুলতে। কেন্দুলীর মেলায় নিয়ে যেতেন  আমাকে। নানা আখড়ায় ঘুরতাম। ছোট থেকেই সহজ সাধনার নানা গুহ্য প্রক্রিয়া সম্পর্কে আগ্রহ তৈরী হয়ে গিয়েছিল। কত সাধক বাবাজী বাউল বোষ্টম যে এই সাতকাহনিয়ার আশ্রমে এসেছেন। কত জনের গান শুনেছি তাদের কোলে বসে। আমি যে ছিলাম বালক মাতার পালিত ছেলের মতো। সবাই খুব ভালোবাসতেন। পরিণত বয়সে মানে ১০১ বছর বয়সে মারা যান। কানে ভাসে তাঁর গুরু র সেই কথা " ওরে আমাদের গুরুর কোন শিষ্য ১০০র নীচে দেহ রাখবেনা রে " তোর মাতার বয়েস ১০১ " আশ্রমের বাইরে এই তমাল টি হলুদ ফলে ফলে ভরে গেছে। বুড়ো বাবাজী তলার তমাল টি ২০০ বছরের কাছাকাছি। আহা কি শীতল তার ছায়া।
(ক্রমশ) ©  প্রণব ভট্টাচার্য

No comments:

Post a Comment