একাকী সেই দীর্ঘ প্রাচীন খেজুর একা দাঁড়িয়ে থাকে।
পশ্চিমে মোরাম চাতাল। উঁচু নীচু খোয়াই। ছোটো খাটো ঢিবি নিয়ে গড়িয়ে যায় পুরো দক্ষিণ পশ্চিমে।
'পাষাণ চণ্ডী' বাগানের ওপারে পশ্চিমে র সূর্য পাটে নামে।
একেলা ছেলেটি দাঁড়িয়ে থাকে মোরাম চাতাল এর উপরে পশ্চিমে র ঐ অস্তগামী সূর্যের দিকে তাকিয়ে।
সে জানেনা কেন তার মন হু হু করে।
আবার তো ঘরে ফিরতে হবে বাবাজী বটতলা র নীচ দিয়ে।
ফেরার পথে সে ঐ খেজুরের নীচে দাঁড়ায়। সেখানে তখন ছাতিম গাছের পাতার ঝোপে পাতলা আঁধার নেমেছে।
খেজুরের নীচে একটা ত্রিশূল গাঁথা। কয়েক টা মাটির ঘোড়া।
কারা যে রেখেছে সে জানেনা।
জানে এটা গোঁসাই থান।
সে কোন গোঁসাই? মাতামা কে জিজ্ঞেস করে।
মাতা কেমন উদাস হয়ে যায়।
তারপর বলে সে ছিল রে বাবা এক গোপাল দাস বাবাজী।
পিছনে র জলাটা র নাম গোপাল সায়ের। এখন মজে গেছে।
আর? আর কিছু জানিনা বাবা। এ তো অনেক পুরনো গাঁ বাবা। ছিল সনাতন বাবাজী র আখড়া। আর নদী ধারে ঐ যে তমাল গাছটা র পাশে ছিল বুড়ো বাবাজীর আখড়া। ঐ যে 'বোরেগী গোড়ে ' পাড়ে। এখন পাড়ে বাবুরা বসিয়েছে কোঁড়াদের।
হ্যাঁ মা ওর নাম ছিল বুড়ো।
না রে। অন্য কি যে নাম ছিল তা কেউ জানে না বাবা।
ও। তুমি তাকে দেখনি।
আমি কেন রে এ গাঁয়ের কেউ তাকে দেখেনি।
আরও ছিল। একদম নদী ধারে কলাবাগানের ঘাটের কাছে। সাহেব দের নীল চাষ হত ওই যে
নীল বাড়িতে তার এক ধারে ছিল আর এক বাবাজী র আখড়া।
তার মানে এ গাঁয়ে অনেক বাবাজী র আখড়া ছিল।
যা। ঘরে যা এবার। পড়তে বসগা। দাদু বকবে তা না হলে।
চ। আমি দিয়ে আসি। আমার কাজ আছে। ও অন্নপূর্ণা কোথা গেলি। লণ্ঠন টা দে।
হালদার দের ডুমুর গাছ তলায় এলে মাতামা তার গা য়ে ফুঁ দিত। একটা বাতাসের স্রোত বইত কোনাকুনি। অগ্নি থেকে বায়ুর দিকে। মাতামা অস্ফুটে বিড়বিড় করত।
ও মা কি বলছ।
কিছু না। কিছু না। ওনারা যাচ্ছেন। হাত জোড় করে প্রণাম করতেন মাতামা। বালক দাসী।
( ক্রমশঃ)
-------------------- ------------------- ----------------
No comments:
Post a Comment