শেষ বিকেলের আলো মেখে
দাঁড়িয়ে আছে আর মাত্র কয়েক টা।
পাশেই অজয়। তার নদী বাঁধ।
বন্যার জল আটকানোর জন্য এই বাঁধ নির্মিত হয়েছে শতবর্ষের ও আগে। সেই ১৮০০ শেষ দিকে।
পরিকল্পনা মাফিক লাগানো হয়েছিল এই সব গাছ। বিশাল বিশাল শিমূল ছিল তার অলংকার।
আরও কত গাছ। অর্জুন ; যজ্ঞডুমুর ; বাবলা ; কুল
পলাশ ; জিয়ল ; বেল ; তাল ; খেল কদম ইত্যাদি
১৯৭৮ এর বন্যায় বাঁধ ভেঙে কত যে উপড়ে গেছে। সাতকাহনিয়া গ্রাম থেকে বাঁধ শুরুর মুখে ই
এই তালের সারি। ভাগ্যিস এই কটা আর আছে।
একদিন এই গাঁয়ের পুকুর পাড় ভর্তি ছিল তাল সারিতে। এমন যে জলে বা মাটিতে রোদ পড়তনা।
মাটিতে পড়ে থাকত পাকা তাল। পাকা তালের গন্ধে ম ম করত গোটা গাঁ। আবার সেই তাল ই ছিল
গরীবের পেট ভরাবার উপায়। দুটি মুড়ি আর তালের মাড়ি আর সামান্য গুড়। মুড়ি আর গুড় জোটানো খুব সহজ ছিলনা। হালদার বাবুদের গুড় ঘর থেকে নালিপথ দিয়ে গুড়ের মাউত বেরিয়ে আসত। তালপাতার ঠোঙা য় তা ধরে নিয়ে যেত কত জনে। আজ আর পুকুর পাড়ে একটা ও তাল গাছ নেই। হালদার বাবুদের গুড় ঘরে আর গূড় থাকেনা। পোড়ো সে দালান বাড়ি। আখ চাষ কবেই উঠে গেছে। গুড়ের শালও বসেনা সে কতদিন।
অথচ একদিন তিন চার জায়গায় গুড়ের শাল বসত।আমোদিত গোটা গাঁ ফুটন্ত গুড়ের গন্ধে।
এই তাল গাছ গুলো কে দেখি আর ভাবি ভাগ্যিস
আছে। মনে মনে বলি ' থাকিস যেন '। আবার ভাবি থাকা কি ওদের হাতে। এত লোভী নিষ্ঠুর হাত চারপাশে নিশপিশ করছে। কি জানি কি হয়।
কেউ তো নাই দেখবার বা বলবার।
যদি থেকে যায়
হয়তো পরে কোন বালক বা বালিকা এদের দেখে তালগাছ চিনবে।
তারা কি পড়বে -
' তালগাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে
সব গাছ ছাড়িয়ে
No comments:
Post a Comment