Monday, 31 January 2022

ইছাই ঘোষের দেউল ছাড়িয়ে - কিছু কথা

কোনদিকে কতটা যান 
আমি জানিনা। 
ইছাই ঘোষের দেউল এর 
অবস্থান টি ভালো করে লক্ষ্য করবেন। 
অজয় এখানে পশ্চিম থেকে উত্তর পূর্বে বাঁক নিয়েছে। 
ইছাই ঘোষের দেউল এর উত্তর দিকে যে 
রাস্তা চলে গেছে দিঘীর পাশ দিয়ে খেড়োবাড়ি
গ্রামের দিকে 
যেতে পারেন একটি আদিবাসী পল্লী দেখতে 
 আবার পল্লী ছাড়িয়ে একটু উত্তরে যান 
 মাটির বাঁধ। পলাশ বন। প্রাচীন বৃহৎ শিমূল 
 গুলিকে দেখতে পারেন। 
 পলাশের সময় আসছে। তখন দেখবেন 
পলাশে শিমূলে রাঙা 
 গড়কেল্লা খেড়োবাড়ি মৌজা। 
দেখুন গড় আর কেল্লা মিশে আছে একই শব্দবন্ধে। 
 গড় । সে ছিল প্রায় হাজার বছর আগে। 
 আর কেল্লা বানিয়েছিলেন বর্ধমানের রাজা চিত্রসেন।   ত্রিলোকচন্দ্র এখানে এই কেল্লায় 
গোপনে অবস্থান করেছেন। ইংরেজ দের সাথে দ্বন্দ্ব।  
অনেক কথা আছে। নানা লেখায় বলেছি। 
এই দেউল কিন্তু ইছাই ঘোষের স্মৃতি দেউল। 
তাঁর স্মৃতিতে নির্মিত। 
কে বানালেন?  স্বাভাবিক প্রশ্ন। 
 অনেক দিন আগে ই একটা ছোট্ট পত্রিকায় আমি লিখেছিলাম যে বর্ধমানের রাজাদের দ্বারাই নির্মিত। 
 সেই ছোট পত্রিকাটি খুঁজছি। 
 সিদ্ধেশ্বর মুখোপাধ্যায় মশাই ও তাই বলেছেন। 
 উনি তো বলেইছেন সোনামুখি র মিস্ত্রিরা বানিয়েছিল। 
ওপারে জয়দেব কেন্দুলী র বিখ্যাত রাধাবিনোদ  মন্দির নির্মান সেই বর্ধমানের রাজ বংশের দ্বারাই। 
 প্রায় সেই সময়কালে ই এই দেউলের নির্মান। 
 পাতলা ইঁটের তৈরী। টালির মতো ইঁট। 
 সেই ইঁট কেটে অলংকরণ। 
 পশ্চিম বঙ্গে যে ছয় - সাতটি ইঁটের তৈরী দেউল আছে এই ইছাই ঘোষের দেউল তার অন্যতম। 
 এটি যেমন স্মৃতি দেউল আবার সৈন্য চলাচলের 
উপর নজর রাখার জন্য ও ওয়াচ টাওয়ার হিসাবেও ব্যবহৃত হয়েছে। সেই সময়ে। 
সে সময় কাল বড়ই উত্তাল। 
 পরে শুনবেন।

টুমনি আর জঙ্গল দেশের মিনি হাওড়া ব্রীজ

।। আমাদের ছোট্ট নদী
   নাম তার টুমনি।
দেখেছেন না কি!  না হয়তো দেখা হয়নি
ইছাই ঘোষের দেউল এসেছেন। বেড়াতে
কিন্তু কোন দিকে কতটা গিয়েছেন জানিনা
বলেছিলাম আগের লেখায়
অজয়ের ওপার থেকে অর্থাৎ বীরভূম জেলা থেকে যদি
গাড়ি নিয়ে এসেছেন বা ভায়া শিবপুর  নদী বাঁধ ধরে
কাজলাডিহি হয়ে যদি এসেছেন বা ফিরে গেছেন
কখন হুস করে পার হয়ে  গেছেন  খেয়ালই করেননি। 
আচ্ছা এই জঙ্গলে র দেশে মিনি হাওড়া ব্রীজটা কে 
দেখেন নি!  হয়তো হ্যাঁ    বা হয়তো নয়
যে মাটির তৈরী নদী বাঁধের উপর দিয়ে গেছেন সেই বাঁধের
ধারের শতবর্ষ প্রাচীন বিশাল কয়েকটি শিমূল কে দেখেছেন
যাদের গোড়ায় চার পাঁচ জনের তাঁবু পাতা যায়।
এই যে নদী বাঁধ এর ইতিহাস আছে।
সে প্রায় ১৯০০ সালের প্রথম দশক।
গোরাবাজার ( গৌরবাজার)  থেকে কাজলদিঘী ( কাজলাডিহি)  পর্যন্ত প্রথম দফায়
তারপরে বিষ্টুপুর থেকে অর্জুনবাড়ি পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপে
তারপর। হ্যাঁ তারও পর আছে।
সাতকাহনিয়া থেকে বাগুড়া অর্জুনতলা তারপর আরও পূর্বে
অনেক গুলো মৌজার উপর দিয়ে সেই ভেদিয়া পর্যন্ত
তারপর ও আছে -
নদী র চরে মানায় গড়ে উঠল  পূর্ব বঙ্গের উদ্বাস্তু মানুষ দের
কলোনি। অজয় পল্লী। নিজেদের পরিশ্রমে সেই জমিকে
তাঁরা করে তুললেন সোনা।ফলালেন সোনার ফসল।
সে '৮০ র দশক।  বাম আমল। কি কষ্টে তাঁরা গড়ে তুলেছেন
আজকের এই ' অজয় পল্লী '। সমস্যা ছিল টুমনী পারাপারের।
কাঠ বাঁশের অস্থায়ী সেতু বেঁধে কাজ চলত। এখানে টুমনী
বেশ গভীর। বর্ষায় ভেসে যায় প্রায় ই। একবার একটা কুমির উঠে এলো টুমনী থেকে।
পশ্চিমে র জামদহ ' র বিল। তারও পশ্চিমের নানা স্থান থেকে  বর্ষার জল গড়িয়ে আসে। বেশ কয়েক টি নালা বা ' জোড় ' আছে। জল এসে জমে বিলের জলাভূমি তে। বিল থেকেই টুমনী বেরিয়ে সামান্য   কিছু পথ পেরিয়ে অজয়ে গিয়ে মেশে।
এই টুমনি র উপর বাম আমলে তৈরী হল মিনি হাওড়া ব্রীজ।নাম তার পণ্ডিত রঘুনাথ মূর্মূ সেতু। 
 উদ্বোধন করেছিলেন মাননীয়া মন্ত্রী বিলাসীবালা সহিস। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের টাকায় নির্মান। 
লোহার সেতু। পারাপারের আর অসুবিধা রইল না।
খেড়োবাড়ি গ্রামের অনেক মানুষ জয়দেব কেন্দুলী র হাটে যায় এই সেতুর উপর দিয়ে। ছোট গাড়ি ; মিনিবাস চলাচল করে।
  ইছাই ঘোষের দেউল দেখেন। এই গুলিও দেখার।
বিশাল দিঘী। রাণীসায়র। নিশ্চয়ই দেখেছেন। এখন প্রশ্ন
কোন রাণী র নামে এই সায়র। কে কাটালেন এই বিরাট দিঘী।
  গৌরাঙ্গপুর মৌজায়। একদিন এখানে গ্রাম ছিল।
নদী র চরে জমিতে নীল চাষ হত। নীলের বড় বড় চৌবাচ্চা ছিল সায়রের পূর্ব পাড়ে। ইলামবাজার কুঠী র অধীনে নীলের কারবার ছিল এখানে।
গৌরাঙ্গপুর মৌজার টিউবওয়েল এর জল খেয়ে দেখবেন।
কি মিষ্টি পাতলা জল। ডিয়ার পার্কের হরিণ গুলি বেশ বড়
হয়েছে। সংখ্যা অনেক বেড়েছে।
আর ময়ূর গুলি সংখ্যায় এত বেড়েছে যে ওরা অনেক দূরে দূরে চলে যাচ্ছে। মাঠে মাঠে পোকামাকড় ; ছোট সাপ খেতে খেতে চলে যাচ্ছে বনকাটি মাঠ হয়ে সাতকাহনিয়া পর্যন্ত।
ওদিকে পশ্চিমে চলে যায় শিবপুরের দিকে ও।
ভয় হয় পাছে না মানুষ মেরে দেয়!
  সেবার অনেক গুলো বন শূকর মাঠের ফসল নষ্ট করছিল রাত্রে।
গড় জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে।
আদিবাসী রা শিকার করে ফেলল। তারপর মহাভোজ।
শিয়াল ; হেঁড়োল বা হুড়াল দের দেখা মিলছে এখন বেশ। কিন্তু খাবে কি?  জঙ্গলে ওদের খাদ্য নেই। ছিল কিছু খরগোশ। আদিবাসী দের ' শিকের '। সব মেরে খেয়ে ফেলেছে। সেদিন একটা সজারু কে মেরে খেয়েছে। সজারু র কাঁটা টা দেখলাম। কি চমৎকার। 
' হেঁড়োলবাঁধি ' মানে হেঁড়োল দের জল খাবার বাঁধ।
দামোদর পুরে। এখন আর সেই ছোট্ট গ্রাম নেই। উঠে গেছে। চুরি ডাকাতি। ৭০ এর দশকের পরিস্থিতি। সে আরও অনেক কথা। উঠে গেলো 
বনের ধারে গ্রাম বনগ্রামে। বা কোটালপুকুরে।
 কিন্তু রয়ে গেছে জঙ্গলে ঢুকতেই পাশাপাশি দুটি 
 ধর্মরাজ থানের মতো বেদী। ' মাতনা বা মাদনা বুড়ো ' মহাদানা থেকে মাদনা বুড়ো।এঁর তো আলাদা গল্প। সে পরে হবে কখনো।  'এক্ষেন দিনে 'তো সবাই পূজা পান। পথের ধারের গোল শিলাখণ্ড ও এক পাতা পান। সব পূজার পূজারী 
 সমাজের নিম্নবর্গের মানুষ জন। বাউরী ; বাগদী ; ডোম ; এঁরা সব গাছতলায় সবাই কে পূজা দেন। 
যে যেখানে আছো - আমাদের পূজা নাও। 
 ভাববেন - সর্ব্ববস্তুতেই তিনি বিদ্যমান। এই ধারণা কতো প্রাচীন। এই ই মানুষের ধর্মবোধ। 
কত কথা আছে এই সব গ্রামের। পরে শুনবেন।
------------ ------------ ------------ ------------ ------------ শেষ করি আজকের মতো।

Monday, 24 January 2022

বল্লভপুরের জঙ্গলে। চীপ সাহেবের কুঠিবাড়ি র ধংসাবশেষ

এসব জায়গায় নিজেকে অন্যভাবে খুঁজে পাই। 
আর সে যেকি অসম্ভব ভয়ংকর ব্যাপার 
এখন  সুরুল বল্লভপুর জঙ্গলে র মধ্যে 
চীপ সাহেবের কুঠিবাড়ি র ভগ্নাবশেষ খুঁজে পাওয়া 
 শাল জঙ্গলে র নীচে শুকনো ঝরা  পাতা 
কাঁটাঝোপ 
প্রতি  মূহুর্তে চন্দ্রবোড়া র ইঙ্গিত 
 কি করে যে পেরেছিলাম 
বোধহয় প্রিয়ব্রত র মতো যুবক ছাত্র সাথে ছিল বলে। তারুণ্য সঞ্চারিত হয় তরুণ দের সাথে থাকলে 
আমি ওদের উপর আস্থাশীল
নানা জায়গায় তারা নিজেদের মতো করে আঞ্চলিক ইতিহাস নিয়ে কাজ করছে 
 আমি বলি এসো একত্রিত হই 
 আমাদের সংগঠন চাই 
আমরা যারা গ্রামে থাকি 
আমাদের মাথার উপরে কিছু নেই কেউ নেই 
 যাঁরা পারতেন তাঁরা নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত 
 হ্যাঁ  প্রতিষ্ঠা পেতে কে না চায়
 ধন জন মান 
কিন্তু আমাদের বা তোমাদের  কি হবে 
সংগঠন ছাড়া নিজেদের জন্য বলার অন্য কেউ থাকেনা    থাকেনি 
তাই ইতিহাস
এসো গড়ে তুলি প্রস্তুতি নিই 
চাই সংগঠন 
তোমার কথা কেন অন্যে বলবে 
কেন তোমাকে প্রশাসন চিনবে 
কেমন করে জানবে তুমি কাজ করো প্রাণের টানে 
চাকরি নয়  ভালোবাসা 
 ভালোবাসার চাকরি হয়না
ডাক দিয়ে যাই 
এসো তরুণের দল 
 নিজের মা  টি কে চিনি

Wednesday, 19 January 2022

সাতকাহনিয়া নবীন দাস বাবাজী র আশ্রমের ৩রা মাঘের মহোৎসব

সাতকাহনিয়া নবীন দাস বাবাজী আখড়া র ৩ রা মাঘের মহোৎসব। 
  
নবীন দাস বাবাজী যে কবেকার তা জানা নেই। 
আর আজ আমার মাতামা বা অন্নপূর্ণা মাসীমা তারাও কেউ নেই। 
এই আখড়ায় ছোট বেলায় যাদের দেখেছি সেই সব সাধু বাবাজী ; বৈষ্ণব বৈষ্ণবী তারা আর কেউ বেঁচে নেই। কত মানুষ এখানে এসেছে গেছে। আসা যাওয়ার পথের ধারে। তাদের কথা খুব  মনে পড়ে।  এই দিনটা এলে। 
 কেন্দুলী ফেরত সাধু বাবাজী রা এই আশ্রমে এসে 
 দুদিন বিশ্রাম নিয়ে আবার অন্য আখড়ায় চলে যেতেন। এই ভাবে আশ্রমে আশ্রমে ঘুরতে ঘুরতে 
 সেই দধিয়া - বৈরাগী তলার মেলা। 
 বাউল বাবাজী বোষ্টম দের ছিল এই  আখড়া সংগঠন। আখড়ায় আখড়ায় বিশ্রাম নিতে নিতে জয়দেব - কেন্দুলী যাওয়া আবার এই ভাবেই অন্য 
 আখড়ায় আখড়ায় বিশ্রাম নিতে নিতে ফেরা। 
 দধিয়া বৈরাগী তলা শেষ করে নিজেদের আখড়ায় ফেরা। বাৎসরিক পরিক্রমা। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ। ভাবের আদান প্রদান। মিলন। মনের মানুষের সন্ধান 
 তখন এঁরা সবাই হেঁটে ই পথ পরিক্রমা করতেন। 
 কাঁথা  কম্বল  সব থাকত বাবাজী র কাঁধে। আর ব্যক্তিগত চলন্ত সংসার এর টুকিটাকি যাবতীয় থাকত মাতাজী র ঝোলায়। 
বটতলা য় খড়ের উপরে চট বিছানো। তার উপর কম্বল পেতে নিজের নিজের বিছানা। সামনে দু তিন টে ধুনি। সারারাত জ্বলে।শাল কাঠের ধুনির ধুনো গন্ধ ময় ধোঁয়া আর গাঁজা র ধোঁয়া মিলে মিশে একাকার।  রাত বাড়ে আর দেহতত্বের গান ও জমে ওঠে। গান বলা হয়  বটে কিন্তু এই গানই বাউলদের মন্ত্র। তাঁরা গাইতেন তন্ময় হয়ে। সেই সব বাউলদের আজ আর দেখিনা। না। কেন্দুলী তে ও না। দু এক জন যাঁরা 
আছেন তাঁরা নিজেদের সংগোপনে ই রাখেন। 
 গতকাল ৩ রা মাঘ পার হল। 
 মহোৎসবে এখন প্রচুর মানুষ আসেন। 
 গ্রামের মানুষ -   মূলত যুব ছেলেরা পার করেন 
 ঐতিহ্যবাহী  এই মহোৎসব  টিকে।

পৌষ সংক্রান্তি এবং সাতকাহনিয়া নদী তীরের মহোৎসব ও সন্তোষ বাগদি

।।  পৌষ সংক্রান্তি এবং সাতকাহনিয়া র অজয় তীরের মহোৎসব।। 
------------ ------------ ------------ ------------ ------------ ------------ -----
 সেনো বাগদি । ভালো নাম তার সন্তোষ বাগদি। 
 তাকে আজ অনেকে ভুলেছে। 
 কিন্তু নদী তীরে সংক্রান্তি র দিন মেগে যেচে মচ্ছব মানে মহোৎসব করার ইচ্ছা নিয়ে আমাদের কাছে সে এসেছিল 
 নদী ধারে একখণ্ড জায়গার জন্য। 
 অযোধ্যা গ্রামের বাসিন্দা সে। ভালো চেহারা। উঁচু পুরু। 
 একটা ক্ষ্যাপা বাউণ্ডুলে বাউল তার ভিতরে ছিলই। 
 তারপর কমলা রঙের বাউলের আলখাল্লা পোষাক পরলে আর পাগড়ি বেঁধে গাবগুবি হাতে নিয়ে 
 গান ধরলে সে হয়ে যায় একেবারেই অন্যমানুষ। 
 বেশ জমিয়ে বসে আমার ঘরে সে পাড়ল কথা। ' একটু জায়গা দাও নদী ধারে '। 
 ' আখড়া বানাবি '? 
  - সে কি আর পারব! তবে ইচ্ছে ঐ পৌষ সংক্রান্তি র দিনে মচ্ছব দেব। কত মেয়েরা তুসু ভাসিয়ে চান করতে আসে। চান করে উঠে মচ্ছব খেয়ে ঘর যাবে। দেখবে খুব ভালো হবে। জমে যাবে। 
 - বললাম একটু গাঁয়ের ধারে করলে হয়না। ঐ বুড়ো বাবাজী তমাল তলার কাছাকাছি। ওখানে খানিকটা সরকারি খাস জায়গা রয়েছে। 
   আমার ভাবনা তখন অনেক দূরে। একদিন তো ঐ প্রাচীণ তমাল তলায় এক বুড়ো বাবাজী র আখড়া ছিল। না হয় -
 কিন্তু সে জায়গা টা নদী থেকে সামান্য  একটু দূরে হয়ে যাচ্ছে 
  সন্তোষ সে জায়গায় রাজি নয়। তার ইচ্ছে একেবারে নদীর ধারে। তারপর নিজেই খুঁজে বের করল একেবারে তেমন একটা জায়গা। নদীর পাড়ে ই। সিকস্তি জায়গা।মালিকানাধীন অব্যবহৃত।  আঁকড় গাছের ঝোপের ধারে। 
 তারপর হ্যাঁ যোগাড় পাতি করে একটা ত্রিপল টাঙ্গিয়ে সে সংক্রান্তির দিনে শুরু করল বটে। সামান্য কিছু লোকজন কে 
 জুটিয়ে আনল। খিচুড়ি তরকারি র মচ্ছব লোকে আনন্দ করে 
 খেল। তখন অযোধ্যা বনকাটি সাতকাহনিয়া গ্রামের  গরীব
 মানুষের পাড়াগুলো থেকে  মেয়েরা সারারাত পৌষ আগলে 
 তুসু ভাসাতে দল বেঁধে আসত।গান গাইতে গাইতে। পাড়ায় পাড়ায় গানের লড়াই 
 চলত। কত রকমের গান। নিজেরা বাঁধত। আমরাও যারা পারি গান লিখে দিতাম। তখন শ্রমজীবী সাংস্কৃতিক উৎসব 
 চালু হয়েছে। ' ৮০ র দশকের শেষ দিকে। পরে তা সাক্ষরতা 
 আন্দোলনের সাথে জুড়ে গিয়ে আলাদা মাত্রা পায়। 
 উৎসব। প্রতিযোগিতা। লৌকিক সংস্কৃতি কে উৎসাহ দেওয়া। 
 আমাদের এখানের মেয়েরা ছেলেরা ভাদু গান ; তুসু গান ; বাউল গান এসব নিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত গেছে। 
  এই সন্তোষ ও গেছে। আবার ঢাক ঢোল নিয়ে ও কয়েক জন 
 গেছে। 
 আজ সে রসের ধারা শুকিয়ে গেছে। কোন পাড়াতেই আর 
 মেয়েরা রাত ও জাগেনা। তুসু গান ও গায়না। কোলাহল তৈরী করা মাইক বাজে। কি যে তার ভাষা! আর কি যে গান। 
 বেজে উঠলেই বুক ধড়ফড়। 
  বাউণ্ডুলে স্বভাব তো ছিল ই। আর ছিল আকণ্ঠ মদের নেশা। 
  তার মাত্রা দিন দিন বাড়ল বই কমলনা। সংসারের কিছুই দেখেনা। বেশ কিছু জমির ভাগচাষী ছিল। মন দিয়ে চাষ ও করেনা। ঐ মদের নেশাই তাকে অকালে খেয়ে নিল। 
 কিন্তু সাতকাহনিয়া অজয় তীরের সেই মহোৎসব যা সে শুরু করে গেছে আজও তা বন্ধ হয়নি। বরং অযোধ্যা গ্রামের 
 মধু দে সহ অনেক মানুষের উৎসাহে ; অনেকের সহযোগিতা য় 
 তা এক গ্রামীণ মেলার রূপ পেয়ে গেছে। 
 অজয়ে স্নান সারতে ভোর থেকে ই মানুষের ঢল নামে। অটো ; 
 টোটো ; বাইকে করে এখন সব মানুষেরা আসে। বেড়াতেও আসে অনেকে। অনেক অনেক মানুষ পাত পারেন এখানে আজ। ছোট খাটো কয়েকটা অস্থায়ী মনোহারী ; খেলনাপাতির
 দোকান ও বসে। মায়েরা এলেই বাচ্চারাও। আর প্রায় সব বাচ্চার হাতে গোল গোল বড়ো বেলুন। 
 এবারের আবহাওয়া ছিল বিশ্রী। কদিন ধরেই মেঘলা আকাশ। 
 কুয়াশায় মোড়া। মাঝে মাঝে টাপুরটুপুর। 
 এই আবহাওয়া তে কি আর ভালো লাগে! 
 তবুও শরীর খারাপ নিয়ে উঠে একবার গেলাম। 
 'তোর কথা মনে পড়ে রে খুব   সেনো। এর মাঝেই তুই বেঁচে থাকবি। '
  মনের ভিতরে জয়দেব কেন্দুলী র ডাক। 
 কিন্তু  না। পারলাম না। 
 ------------ ------------ ------------ ------------ ------------  শেষ করি। 
  নমস্কার।  আজকেরই  কিছু ছবি দিলাম।

Sunday, 9 January 2022

নদী বাঁধ ও শেষ বিকেল

শেষ বিকেলের আলো মেখে 
দাঁড়িয়ে আছে আর মাত্র কয়েক টা।
 পাশেই অজয়। তার নদী বাঁধ। 
 বন্যার জল আটকানোর জন্য এই বাঁধ নির্মিত হয়েছে শতবর্ষের ও আগে। সেই ১৮০০ শেষ দিকে। 
 পরিকল্পনা মাফিক লাগানো হয়েছিল এই সব গাছ। বিশাল বিশাল শিমূল ছিল তার অলংকার। 
 আরও কত গাছ। অর্জুন ; যজ্ঞডুমুর ; বাবলা ; কুল 
 পলাশ ; জিয়ল ; বেল ; তাল ; খেল কদম ইত্যাদি 
 ১৯৭৮ এর বন্যায় বাঁধ ভেঙে কত যে উপড়ে গেছে। সাতকাহনিয়া গ্রাম থেকে বাঁধ শুরুর মুখে ই 
 এই তালের সারি। ভাগ্যিস এই কটা আর আছে। 
 একদিন এই গাঁয়ের পুকুর পাড় ভর্তি ছিল তাল সারিতে। এমন যে জলে বা মাটিতে রোদ পড়তনা। 
মাটিতে পড়ে থাকত পাকা তাল। পাকা তালের গন্ধে ম ম করত গোটা গাঁ। আবার সেই তাল ই ছিল 
 গরীবের পেট ভরাবার উপায়। দুটি মুড়ি আর তালের মাড়ি আর সামান্য গুড়। মুড়ি আর গুড় জোটানো খুব সহজ ছিলনা। হালদার বাবুদের গুড় ঘর থেকে নালিপথ দিয়ে গুড়ের মাউত বেরিয়ে আসত। তালপাতার ঠোঙা য় তা ধরে নিয়ে যেত কত জনে। আজ আর পুকুর পাড়ে একটা ও তাল গাছ নেই। হালদার বাবুদের গুড় ঘরে আর গূড় থাকেনা। পোড়ো সে দালান বাড়ি। আখ চাষ কবেই উঠে গেছে। গুড়ের শালও  বসেনা সে কতদিন। 

 অথচ একদিন তিন চার জায়গায় গুড়ের শাল বসত।আমোদিত গোটা গাঁ ফুটন্ত গুড়ের গন্ধে। 
 এই তাল গাছ গুলো কে দেখি আর ভাবি ভাগ্যিস 
 আছে। মনে মনে বলি ' থাকিস যেন '। আবার ভাবি থাকা কি ওদের হাতে। এত লোভী নিষ্ঠুর হাত চারপাশে নিশপিশ করছে। কি জানি কি হয়। 
 কেউ তো নাই দেখবার বা বলবার। 
 যদি থেকে যায় 
 হয়তো পরে কোন বালক বা বালিকা  এদের দেখে তালগাছ চিনবে।
 তারা কি  পড়বে - 
 ' তালগাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে 
  সব গাছ ছাড়িয়ে 
   উঁকি মারে আকাশে '

Saturday, 8 January 2022

তেপান্তর নাট্য গ্রাম

#বাংলার_একমাত্র_নাট্য_গ্রাম "তেপান্তর" (গড় জঙ্গল, কাঁকসা)
---বিশ্বনাথ মিত্র

আপনারা অনেকেই হয়তো তেপান্তর নাট্য গ্রাম বা তেপান্তর থিয়েটার ভিলেজ এর নাম শুনে থাকবেন । কয়েকদিন আগে পর্যন্ত আমি এদের বিষয়ে জানতে পারতাম না যদি না গবেষক এবং প্রাবন্ধিক Pranab Bhattacharyya এর সঙ্গে আলাপ না হত । সদ্য ২৫ ও ২৬ ডিসেম্বরে সেখানে পৌষ মেলায় তিনি সাদরে আমন্ত্রিত জানালেও বিশেষ কারণ হেতু যেতে পারিনি । কিন্তু পেয়েছি অনুষ্ঠানের সুন্দর সুন্দর ছবি ও বর্ণনা । এই দু'দিন অতিথিরা এসেছেন, থেকেছেন এবং  নিজেদের মতো করে সময় কাটিয়েছেন । বাউল গান, আদিবাসী নাচ বা নাটকের অংশ বিশেষ  অভিনয় করে তাঁদের দেখানো হয়েছে। ছিল হস্তশিল্পের স্টলে, খাবার স্টল । সব গ্রামবাসীরাই করেছেন ।

বাংলার বাইরে এই রকম নাট্য গ্রাম থাকলেও সমগ্র বঙ্গদেশে এইরকম গ্রাম আর দেখা যাবে না #কিন্তু_কী_এই_নাট্য_গ্রাম ? সবুজ বৃক্ষ রঙ বাহারি ফুল কিংবা মেঠো রাস্তাপথে ধান, পুকুর, চালের ঘর এইসবের সমন্বয়ে সাতকাহানিয়া নামে একটি গ্রামের ভিতর গ্রামবাসীরা একসঙ্গে থাকেন, একসঙ্গে নাটক করেন এবং একসঙ্গে  তাঁদের রোজগার করা । অনন্য এক বাংলার ঐতিহ্য ।
#নাট্যকর্মী_কল্লোল_ভট্টাচার্য (প্রণববাবুর পুত্র) ১৯৯৪ সালে এই সাতকাহানিয়ায় খোলা আকাশের নীচে হ্যারিকেনের আলোয় অল্টারনেটিভ লিভিং থিয়েটার এর পরিচালক প্রবীর গুহ'র ওয়ার্কশপ থেকে উৎসাহীত হয়ে, অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেদের এলাকায় নিজেদের মতো করে প্রায় ৩০ জন মিলে একটি নাট্যদল গড়ে থিয়েটার চর্চা শুরু করেন শহর ছেড়ে এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে । ১৯৯৯ থেকে প্রায় ৪ একর জমির ওপর তা পুরোদমে একটি নাট্য আন্দোলনের সূচনা হয় । ক্রমশ কেটে গেছে ২৭ বছর। এই ২৭ বছরে তাঁরা কাজ করেছেন দেশের সেরা থিয়েটার এর মানুষদের সাথে। কে.এন. পানিককর, এস রামানুজম, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, বি জয়শ্রী, শমীক বন্দোপাধ্যায়, চন্দ্রদশন সহ স্যার রতন থিয়াম এবং অনেকের সাথে ।
এই ২৭ বছরে কল্লোলবাবুরা ভারত রঙ্গ মহোৎসব, ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল অফ কেরল সহ দেশের প্রায় সব সেরা থিয়েটার ফেস্টিভ্যালগুলিতে নাট্য-সকল মঞ্চস্থ করেছেন তাঁরা । বহু দেশ বিদেশ থেকেও নানা নাট্য দল এখানে প্রায়শ নাটক বা থিয়েটার মঞ্চস্থ করে থাকে । 
 ২৫০ দর্শক আসন বিশিষ্ট ব্ল্যাক বক্স থিয়েটার, একটি ওপেন এয়ার থিয়েটার, একটি ইন্টিমেট স্পেস, কয়েকটি প্রাকৃতিক মঞ্চ, একসাথে ১২০ জন থাকার মতো কটেজ, ডরমিটরী গড়ে তুলেছেন এর ভিতর । এছাড়াও এখানে রয়েছে পোল্ট্রি, আমের বাগান, পুকুর, মাঠ ইত্যাদি। গত বারো বছর ধরে এখানে শীতের সময় নাট্য উৎসব, দোলের সময় তেপান্তর মেলা হয় ।এছাড়াও এখানে সারা বছর ধরে নানা কর্মশালা, ট্রেনিং, নানা ধরনের থিয়েটার, নানা পারফরম্যান্স এর আয়োজন করে চলেছেন । এখানে সারা দেশের প্রায় সকল পরিচিত নাট্য ব্যক্তিত্ব রাই এসেছেন। কাজ করেছেন। কাজ দেখিয়েছেন। 
বর্তমানে তেপান্তরে প্রায় ২০-২৫ জন সক্রিয় কর্মী আছে । যাদের ভিতর আবার অনেকে কৃষক পরিবারের সন্তান । পাশাপাশি এই গ্রামের বাসিন্দারা প্রায় সবাই নাট্যকর্মী । এদের সংসারে নিত্য অর্থাভাব থাকলেও নাটকই তাদের জীবন। বেঁচে থাকার তাগিদে থিয়েটার ভিলেজের ফার্মের নিয়ন্ত্রণাধীন পোলট্রি, মাছ চাষ বা ফলের বাগানে তারা কাজ করে । বাকি সময় নাটকের অনুশীলন, প্রশিক্ষণ আর অভিনয় ।  পর্যটকদেরও আকর্ষণ জাগায় এই সব মুরগির ফার্ম বা ফুল ফলের চাষ ।
তাঁরা আরও এগিয়ে যেতে চান । শুধু চায় আপনাদের শুভেচ্ছা এবং প্রেরণা ।

তথ্য ঋণ :
প্রণব ভট্টাচাৰ্য
কল্লোল ভট্টাচাৰ্য

তেপান্তর নাট্য গ্রাম

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2577413879056481&id=100003636821328

সিউড়ি। রঘুনাথ মন্দির।

আজ সারাদিন কাটল বীরভূমের সদর শহর 
সিউড়ি তে। আজ ২৭/১১/২১। বীরভূম সাহিত্য পরিষদের সভা কক্ষে। 
রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। 
উপলক্ষ  " বীরভূম আর্টিশানি "। 
তাদের গালা এবং বাটিক কর্মশালা। বিকেল সাড়ে তিনটে থেকে প্রদর্শনী এবং আলোচনা সভা। 
 সঠিক ভাবেই " বীরভূম আর্টিশানি " আজকের দিনটি বেছেছিল। সচেতন ভাবেই। 
 আমার বলার বিষয় অবশ্য  গালা শিল্পের অতীত ঐতিহ্য এবং ইলামবাজার। 
 প্রশিক্ষক সুরুলের ইউসুফ ভাই। 
দুপুর বেলায় হাতে সময় ছিল। আমি কি আর খুঁজে পাব  ৪৫ বছর আগের  আমাদের সেই সিউড়ি কে! 
 তবু টোটো নিলাম। দুই ভদ্রলোক যথেষ্ট সাহায্য করলেন। তা না হলে টোটো র ছেলেটি খুঁজেই পেতনা। যাই হোক শেষ পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়ালাম 
 আমার সেই অতীত বেলায় দেখা সেই মন্দিরের সামনে। অনেক ক্ষণ ধরে দেখলাম। 
 গেট তো বন্ধ ছিল। কি করি। 
 আর এক ভদ্রলোক সাহায্য করলেন। তাঁর কাছে চাবি ছিল। সব শুনে খুলে দিলেন। 
 সোনাতোড় পাড়া যথেষ্ট পুরনো। 
 সে পুরনো সিউড়ির গল্প যদি শুনতে চান বলব পরে। সোনাতোড় পাড়ার এই মন্দির টির কাজ দেখুন আজ শুধু

Wednesday, 5 January 2022

সিঁড়ি তুই অঙ্ক জানিস

সিঁড়ি তুই অঙ্ক জানিস 
 ঐ যে সেই ছোট বেলায় 
 অঙ্ক করতে হত 
 সিঁড়ি ভাঙ্গা সরল 

আমার মা না কি 
 বলতো 
 সরল নয়
গরল 

 রোগ শয্যা থেকেই সে আবার 
 গরল কে সরল করে দিতে পারত

 অঙ্কে গাঁথা সিঁড়ি রে

 তুই এক অবাক চোখের 
 বালক কে দেখেছিস

ছবি তুমি কথা বল

ঢুকবেন
ভিতরে 
উঠে গেছে সিঁড়ি 
 দোতালায় 
 নেমে গেছে নীচে 
 গোপন সুড়ঙ্গ 
   
 গুপ্ত কক্ষে 
 
আর কদিন পরেই 
 দেয়াল ভাঙ্গা হবে 

এই তার শেষ ছবি
 ছবি তুমি ই কথা 
 বল

ইলামবাজার। পাল পরিবারের দুর্গাদালান

একদিন ছিল। বিশাল সে দুর্গাদালান। স্তম্ভে খিলানে তার রাজকীয় ঐশ্বর্য।   ছিল অপূর্ব ভিতর বারান্দা। বিরাট বাহির বারান্দা। তারপর তার সু-উচ্চ প্রবেশ দ্বার। ভিতরে হাতি ঢুকতে পারে এমনই তার উচ্চতা বা প্রস্থ। এবং তার কারুকার্য। 
 ইলামবাজার সে এক প্রাচীন জনপদ। 
 গঞ্জ ইলামবাজার। ' এলেম বাজার '। যে বাজারের ' এলেম' আছে  - অর্থাৎ দাম আছে। আবার ' নীলাম বাজার '। কত ব্যবসায়ী পরিবার এখানে এসে বসতি স্থাপন করেছেন। কোন কোন পরিবার প্রায় ছয় - সাতশো বছর আগে ও এসেছেন। 
 আজ বসেছিলাম সুখ্যাত ' দত্ত ' ( দালাল)  পরিবারের মাননীয় শ্রী গুরুদাস দত্ত মশাই এর সাথে। অনেক কথা হল। বয়স এখন তাঁর ৯০ +।
 হয়তো বা প্রবীণতম মানুষ ইলামবাজারের। 
 এই দত্ত পরিবার এর কথা পরে আলাদা ভাবে বলতে হবে। ইলামবাজারের প্রাচীন ইতিহাস এর কথা বলার লোক আর তেমন নাই। 
 ব্যবসায়ী পাল পরিবারের এই দুর্গা দালানের কথা 
 ওঁর কাছ থেকে ই শুনলাম। সম্ভবত প্রাচীণতম দুর্গাদালান। অন্যান্য অনেকগুলি কে মাথায় রেখেই 
 বলছি। আরও মেলাতে হবে। 
 আমার সাথে ছিল ইলামবাজারের সুখ্যাত গৃহ শিক্ষক শ্রী সুবল কর্মকার। 
 ইলামবাজার আমাদের অনেকের ই প্রায় দ্বিতীয় ঘরের মতো। আমি প্রায়ই বলি আমাদের একপা অজয়ের এপারে আর এক পা ওপারে। 
 প্রতিদিনের  পারাপার। 
 ইলামবাজার দেবীপুর পায়ের গঙ্গাপুর বারুইপুর ভগবতী বাজার ; শুকবাজার খয়েরবুনি নবগ্রাম এই সকল 
 গ্রামকে নিয়ে আজকের যে বৃহত্তর ইলামবাজার 
 তার এক পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস রচনা র চেষ্টা করে যাচ্ছি। নানা সময়ে এখানে বা মুদ্রন মাধ্যমে ইলামবাজার সম্পর্কে নানা  প্রবন্ধ লিখেছি। এখানে 
 ফেসবুকে র পাতায় আমার অনেক পোষ্ট। 
 শুধু টেরাকোটা র কাজের অনবদ্য উদাহরণ স্বরূপ   
 এখানের 
 তিনটি মন্দির নিয়েই আমার অনেক পোষ্ট। এছাড়াও আছে। দেবীপুর ; শুকবাজার ; ঘুড়িষা ; জয়দেব কেন্দুলী  ; ঊষার ডিহি ; দেউলী; ধল্লা  প্রভৃতি 
 জায়গার সম্বন্ধে নানা পোষ্ট। 
 কিন্তু প্রাচীণ জনপদ  ইলামবাজারের যে অনেক কথা।   আজকের ইলামবাজার - সে তো আকৃতি তে  মিউনিসিপ্যাল এলাকার মতোই। সেই মর্যাদা তার পাওয়া উচিৎ। যে ভাবে " বীরভূমের প্রবেশ দ্বার " শুধু নয় বরং বলা ভালো " উত্তরে র দুয়ার "
 এই ইলামবাজার বেড়েই  চলেছে।  মিউনিসিপাল মর্যাদা না পেলে  মানুষ কে নাগরিক সুবিধা দেওয়া 
 গ্রামপঞ্চায়েতের পক্ষে সম্ভব নয়। 
 যাই হোক নিশ্চয়ই এসব বিষয় উপযুক্ত স্তরে আলোচিত হচ্ছে। আমার আলোচনা র বিষয় নয় তবু এ কথা বলতেই হয়। নানা প্রবন্ধে বলেছি।
আমার একান্ত ইচ্ছা ইলামবাজারের এই গড়ে  ওঠার একটা আনুপূর্বিক ইতিহাস লেখা। 
 আমার এই কাজে অনেকের সহযোগিতা দরকার। 
 বন্ধুরা যদি সহযোগিতা করেন -।
 আপনারা জানেন আমি ক্ষেত্র সমীক্ষা ভিত্তিক কাজ করি। এবং তা করতে হলে পরিশ্রম ; খরচ 
 সবই আছে। ইলামবাজার ব্লক প্রশাসন কি আমাকে একটু সাহায্য করবেন। 
অনেক ছাত্র রা রয়েছো। তোমরা আমাকে ভালোবাস তাও জানি। তার বহিঃপ্রকাশ এখনও অনুভব করি। শিক্ষক হিসাবে এ পাওয়া যে কত বড় পাওয়া! তোমরা অনেকে রাজনৈতিক ভাবে সক্রিয় এবং প্রভাব আছে। তোমরা একটু দেখো। 
 ইলামবাজার এর কাছে অনেক ঋণ গো। আবার 
 জমে আছে ভিতরে অনেক অভিমান। 
 সকলের সাহায্যে যদি আরব্ধ কাজ টা করতে পারি! 
 সকল কে অনুরোধ জানালাম।
আর একটা কথা ইলামবাজারের বন্ধুদের কাছে 
 যদি মনে হয় এই পোষ্ট টা উপযোগী - তাহলে শেয়ার করুন। ইলামবাজারের অন্যান্য বন্ধুরা জানুক। হয়তো অনেকে পড়েন কিন্তু কোন রেসপন্স না পেলে কি ভালো লাগে।