Tuesday, 1 November 2022

।।বসুধা থেকে মৌখিরা।।

।। বসুধা৷ থেকে  মৌখিরা।। ৬ নং পাতা আরম্ভ।
প্রাচীণ বসুধাকে আজ আর খুঁজে পাওয়া স্বাভাবিক ভাবেই সম্ভব নয়। বসুধার মধ্য দিয়ে চলে গেছে পানাগড় মোরগ্রাম হাইওয়ে। অজয়ের ওপারেই ইলামবাজার। চমৎকার গঞ্জ।
প্রায় মিউনিসিপ্যালিটি  হবার মতো এর আয়তন এবং লোকসংখ্যা।
বসুধা হাইওয়ে র উপর বাসস্টপ। বাজার ; দোকান পাট গড়ে উঠেছে। ব্যাঙ্ক আছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় ; অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র
আছে। পোস্টঅফিস যদিও মৌখিরা। আগে ইলামবাজার
ছিল। তখন বীরভূমের অন্তর্ভুক্ত। একদা রাজনগর অধীনে। পরে বর্ধমানের রাজা দের। আবার দশঘরা র জমিদার রা কিনেছিলেন এখানকার ' লট '। তাই লাট বসুধা। এখন যেখানে রাধারাণী মন্দির সেখানে ছিল তাঁদের কাছারীবাড়ি। রাস্তার দক্ষিণে বৃদ্ধনদীর এপারে ওপারে চমৎকার এক আম সহ অন্যান্য  ফলফুলের " রঙ বাগান " তাঁরা তৈরী করেছিলেন। রঙ বাগান যখন তখন মাঝেমধ্যে রঙমশাল জ্বলত সেখানে। ছিল বাগানবাড়ি। 
যাইহোক সে আরও অনেক কথা।
  হোটেল আছে। আগামী তে আবাসন গড়ে উঠবে। ব্যবসা কেন্দ্র হিসাবে গড়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে।
মানুষের আনন্দ উৎসব আছে। কৃষি অর্থনীতির উপরেই  দাঁড়িয়ে আছে এই এলাকা। দুর্গোৎসব আছে। পারিবারিক ছাড়াও একটি সার্বজনীন আছে। এখানের রাধারানী মন্দিরের
প্রাঙ্গনে মেলা সহ তিন দিনের বড় কীর্তনের আসর বসে।
পূর্ববঙ্গীয় মানুষ জন আনন্দ উৎসব প্রিয় পরিশ্রমী জাত। তাঁরা ই গড়ে তুললেন আজকের বসুধা কে। 
সার্ভেয়ার জেনারেল রেণেল সাহেবের ম্যাপে( ১৭৭৯)
অবস্থান গত চিহ্নিত করণে কোন ভুল না থাকলে আজকের
বসুধার অবস্থানে পাওয়া যাচ্ছে এক   Kumarbazar কে।
তাহলে কি কামার কুমার দের বাজার ই ছিল এই বসুধা!
যদিও এখন কোন কুমার বা কুমোর পরিবার এখানে নাই।
' কামার পাড়া র দো ' মাঠের নাম আজও টিঁকে আছে।
অজয়ের বন্যার আঘাতে আঘাতে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও
অদ্ভুত প্রাণশক্তি এই নদী তীর বর্তী মানুষদের । হয়তো অনেকে নাই। কিন্তু অনেকে আছেন। যাঁদের পূর্ব মানুষেরা
এখানেই ছিলেন।
প্রবন্ধের নাম বসুধা থেকে মৌখিরা। নরসিংহ বসু বলছেন
" বসুধা - মিরাস ছাড়ি "। এই মিরাস ই আজকের মৌখিরা।
এমন অনুমান অসঙ্গত নয়। আজকের মৌখিরা কিন্তু তখন
সম্ভবত গড়ে ওঠেনি বা প্রাক অবস্থায়। মিরাস নামের উৎস কি?  মিরাস কথার অর্থ  উত্তারাধিকারী র জন্য রেখে যাওয়া সম্পত্তি। 
শব্দ টি বাংলা নয়।এবার স্বাভাবিক প্রশ্ন কে  কার জন্য রেখে গেলেন উত্তরাধিকার সূত্রে এখানকার 
  সম্পত্তি?  অনেক উত্তর তো মেলেনা।  অনেক কিছু মেলাতে হবে। থাকে শুধু অনুমান। অনুমানের ও সঙ্গত কিছু কারণ থাকতে হয়। 
পরে আবার কথা হবে।
  সকলের সমবেত উদ্যোগে আগামীর বসুধা গড়ে উঠুক ;
মৌখিরা কালিকাপুর তার অতীত গৌরব গাথা নিয়ে মানুষ কে
আকর্ষণ করুক। একটা হেরিটেজ ভ্রমণ সার্কিট  এর কথা অনায়াসে ভাবা যায়। সরকারের পর্যটন দপ্তর আশা করি এই প্রস্তাব বিবেচনা করবেন। বসুধার উন্নতি হোক। বিশিষ্টতা অর্জন করুক।  এই কামনা করেই প্রবন্ধ শেষ করছি।
©  প্রণব ভট্টাচার্য। 
কাঁকসা সাহিত্য সংস্কৃতি একাডেমি র মুখপত্র " ডুবুরী " পত্রিকার শারদ সংখ্যায় প্রকাশিত। 
------------ ------------ ------------ ৬ নং পাতা শেষ। প্রবন্ধ শেষ।
## আমার লেখার প্রিয় সকল পাঠক দের উদ্দেশ্যে  এই লেখা উৎসর্গ করলাম। 
 সবাই পড়ুন। ১-৬ পর্যন্ত পাতা। যদি সকলে না পান আমার ফেসবুক ওয়ালে পড়ে নেবেন। 
 সাথে থাকা ; পড়া ; এবং প্রয়োজনীয় মন্তব্য করে 
আপনারা আমাকে উৎসাহিত করেন। প্রাণিত করেন। আমি যতটা পারলাম  নানা  পত্র পত্রিকা য় 
 এ মাটির কথা  বলে গেলাম। অজয়ের এপার ওপার এর কথা।  আর সত্যি কথা এই যে স্থানীয় 
 বা একটু ছড়ায় এমন পত্র পত্রিকায় কম তো লিখিনি। কিন্তু ফেসবুক আমাকে এক অন্য পরিচিতি দিয়েছে। কত গুণী মানুষের সাথে এই সমাজ মাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। ধন্যবাদ ফেসবুক কে। কিছু তেতো কথা আছে। আজ থাক। 
 
 আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ।
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2825661517565048&id=100003636821328

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2822466424551224&id=100003636821328

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2821203921344141&id=100003636821328

No comments:

Post a Comment