।। ঐ তো তোমার ঘর।।
ঐ তো তোমার ঘর। মাটির দেয়াল। খড়ের চাল। চাল নেমে এসেছে বারান্দা পর্যন্ত। দেয়াল অর্ধেক টা ভিজে। মেঝে স্যাঁতসেঁতে। উনুনে জল। যত জল নেমে যায় বুঝি তোমার ঘরের নীচে দিয়েই। ঘরের মেঝেতে একটা দড়ির খাটিয়া।
তোমার বিছানা। একটা শতরঞ্চি। একটা কাঁথা। আর একটা পাতলা চাদর।
এই তোমার ঘর! এখানে ই তুমি থাক!
আশ্বিনে দুর্গাপূজা। এবার তুমি কোথাও যাওনি। গ্রামেই আছো। পাড়ার পুজো।
আমাকে নিয়ে গেছো। সেই প্রথম যাচ্ছি। দিদিমা কত করে সাবধান করেছে। আসানসোলে বাস থেকে নেমে, গ্রাম পর্যন্ত যাওয়ার যে একটা বাস চলত সেটা বন্ধ। তখন মিনি বাসের যুগ আসেনি। সেনর্যালে পর্যন্ত কিসে যেন একটা চেপে আসা হল। তারপর হাঁটা। তা ছাড়া উপায় কিছু নাই।
- তুমি হাঁটতে পারবে!
- হ্যাঁ । পারব
আমার মনে তো নানা কৌতুহল। উৎসাহ কম নয়।
বাবার ঘরে যাব। এখানেই আমার মা --
গ্রামের অনেকে সাইকেল কারখানায় কাজ করে। সাইকেল কারখানার সুন্দর সাজানো কোয়ার্টার।
ডিউটি সেরে বাড়ি ফিরছে এমন দুজনের সাইকেলের ক্যারিয়ারে বসে অনেক টা পথ আসা গেল। মরিচকোটা হয়ে
আঙ্গারিয়া। তারপর গ্রাম পর্যন্ত হাঁটা।
গ্রামের পথ উঁচু নীচু। একটা কুলি পার হলাম। কুলিতে ঝিরঝির জল বইছে। পথের ধারে একটা পাতকুয়ো। চারপাশ তার বাঁধানো নয়। ভুল হলেই একেবারে কুয়োতে। আসলে এটা একটা ঘরের কুয়ো। রাস্তা ঠিক নয়। গাঁয়ের গলিপথ।
পাশে ই একটা দুর্গামন্দির। সামনে ছোট্ট উঠোন। উঠোনের মাঝখানে বলির খুঁটো।
তারপর আবার একটা রাস্তা। রাস্তা মানে কুলি। সেই কুলিতেও জল বইছে। জল চলে যাচ্ছে নীচে দিকে। নিশ্চয়ই মাঠের দিকে।
রাস্তা পার হয়ে কিছুটা উঁচু জায়গা। সেই উঁচু জায়গার উপর দিয়ে রাস্তা চলে গেছে। মনে হচ্ছে যেন পশ্চিম দিকে যাচ্ছি।
রাস্তার দু'ধারে ঘরবাড়ি। পাশে দুর্গাদালান। প্লাষ্টার বিহীন ইঁটের ঘর।
ঠিক তার উল্টো দিকের যে গলি টা, সেই গলি দিয়ে তারা ঢুকল একটা বড় মাটির ঘরে। এই ঘরটা নাকি জ্যাঠা দের।
সবাই তাকে দেখছে।
সেও সবাই কে দেখছে।
এই তো প্রথম দেখা।
------------ ------------ ------------ ------------
ছেড়ে যাবেন না। আরও কয়েকটি পর্ব দেব এখানে
কথা - সাতকাহন নামেই এই সব লেখা লিখেছিলাম। সেই সময় কে জড়িয়ে, এক একা বিষন্ন বালকের ডাউন মেমোরি লেন ধরে হাঁটা।
অনেক কথা।
এই সব লেখা গুলো কে একজায়গায় করার ইচ্ছে।
ফেসবুকে আমার অনেক বিশিষ্ট বন্ধু।
একটা ভালো নাম সাজেস্ট করুন।
No comments:
Post a Comment