।।বনকাটি র পিতলের রথ।।
সময়কাল বড়ই কণ্টকাকীর্ণ। ১৭৭০ এর (৭৬ এর) মন্বন্তর এর পর সব ছারখার হয়ে গেছে। এই মহা মন্বন্তর এর পর বীরভূমের ৬০০০ গ্রামের মধ্যে ১৫০০ গ্রাম নিশ্চিহ্ন। কৃষিজমি সব পতিত পড়ে আছে। এপারের অবস্থা ও তাই। ভাত খাবার চাল নাই। যে চাল এক টাকায় ২-৩ মন পাওয়া যেত সেইচাল টাকায় ৩ সের। তা ও তো অমিল। এই দরে কিনবে কে। কাতারে কাতারে মানুষ মারা যাচ্ছে। সুপারভাইজার
হিগিনসনের রিপোর্ট অনুযায়ী " বীরভূম বন্ধ্যা জনমানবহীন দেশ "। ১৭৭৯ সালে গরীব কৃষক দের স্বাভাবিক বিক্ষোভ দেখা দিল জমিদার আর কোম্পানির বিরুদ্ধে। কোম্পানি র ট্যাক্স আদায় কমছেনা বরং বাড়ছে। সারা বাংলা চষে বেড়াচ্ছে নানা ইউরোপীয় কোম্পানি র লোকেরা। কোথায় হতে পারে কিসের ভালো ব্যবসা।
সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ প্রবল হচ্ছে। পশ্চিম থেকে নেমে আসছে দুর্ধর্ষ ডাকাতের দল। তাদের সাথে যোগ দিচ্ছে স্থানীয় রা। আরস্কিন সাহেবের কুঠিবাড়ির পাহারা সত্বেও দিনের আলোয় ইলামবাজার লুঠ হচ্ছে। ভেঙে পড়েছে সাধারণ এর অবস্থা। শুকবাজারের তাঁতিদের বাঁচাতে সুরুল কুঠি থেকে সেপাই চেয়ে পাঠানো হচ্ছে। সেই ১৭৭৯ সাল। অজয়ের
এপারে অযোধ্যা বনকাটি র ধনী চট্টোপাধ্যায় পরিবারে ডাকাতি হচ্ছে।
১৭৯২ সালের সেই সময়ে গালা ব্যবসার একটা হিসাব - ৫০০ মন গালার জন্য ১০ ০০০ টাকা এবং ১৮০০ সালে ৫৪৪ মন গালার জন্য ৯৯১৫ মুদ্রা পেয়েছিলেন আরস্কিন সাহেব।
বনকাটি তে কয়েকটি ব্রাহ্মণ পরিবার একসাথে জোট বেঁধে থেকে একসাথে ই নানা ধরনের ব্যবসা করেন। কাঠকয়লা ;
নানা বনজ দ্রব্য। পরবর্তী তে কয়লা। আর লাক্ষা তো প্রধান।
এঁদের মধ্যে মুখোপাধ্যায় পরিবার ব্যবসায় যথেষ্ট অগ্রনী।
বনকাটি তে মাল গুদাম জাত করে পরে ছোট নৌকো দিয়ে
রক্তনালা বেয়ে অজয়ের জলপথে মাল নিয়ে যাওয়া।
অজয়ের শিমূল তলার ঘাট তখন খুবই কর্মব্যস্ত। গোরুর গাড়ি র সার লেগে ই আছে। মালের ওঠা নামা। মাল যাচ্ছে কুঠিবাড়ি তে। ইলামবাজার সাহেব কুঠির সাথে ব্যবসা। আবার স্বাধীন ভাবে ও ব্যবসা। ব্যবসা সূত্রে এখানকার বাবুরা পৌঁছে গেছেন
কলকাতা। নানা সাহেব কোম্পানি র সাথে ; ব্যবসায়িক হৌসের সাথে স্বাধীন ব্যবসা। শোনা যায় উদ্বৃত্ত টাকা মুখোপাধ্যায় বাবুরা নিয়োগ করতেন অন্য ভাবে ও। এবং বিশাল ধনী হয়ে
উঠছেন তাঁরা।
রায় পরিবারের বর্তমানে জীবিত প্রায় ৮০ বৎসর বয়সী শ্রী অনিল রায় মশাই এর কাছ থেকে শোনা এই মুখোপাধ্যায় পরিবার তাঁদেরই বাড়ির জামাই। এঁরা তখন বসুধায় অবস্থান করছিলেন। বসুধার লরি দের গালা তৈরী সম্পর্কে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা ছিল। সম্ভবত বসুধার লরি দের শিব মন্দির গুলির পূজারী ব্রাহ্মণ। রামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় মশাই ব্যবসাটাকে
ধরলেন দক্ষ হাতে। বিপুল অর্থাগম ছাড়া ঐ প্রাসাদ ; মন্দির ;
বা পিতলের রথ তৈরী করানো সম্ভব নয়। ১৭০৪ শকাব্দ থেকে শুরু করে পরবর্তী ৫০-৬০ বছর ধরে চলেছে নানা নির্মানকার্য্য।
শোনা যায় একদিনের গালার ব্যবসা র আয় থেকে না কি তৈরী করানো হয়েছে পিতলের এই রথ। তখনকার দিনে একটি
মন্দির নির্মানে খরচ হত ৮-৯ হাজার টাকার মতো। তাহলে
লোহার ফ্রেমের উপর পিতলের পাত দিয়ে মোড়া এই প্রায় ১৫ ফুট উচ্চতা র এই রথের খরচ কত হতে পারে তার হিসেব পাঠক মনে মনে করুন একবার।
রথটি প্রায় ১৫ ফুট উচ্চতা র। ৮ টি লোহার চাকা। লোহার শক্ত ফ্রেম। প্রায় সম চতুষ্কোণ প্লাটফর্ম। ১ ম তলের দৈর্ঘ্য প্রস্থ
৬' ৫" আর ২ তলের দৈর্ঘ্য প্রস্থ ৪' ৫''। আগেই বলা হয়েছে পাঁচ চূড়া। প্রধান চূড়ার উপর বিষ্ণু চক্র। গোটা রথ ই লোহার ফ্রেমের উপর পিতলের পাত দিয়ে মোড়া। সারা গায়ে অজস্র অলংকরণ। এত তার বিচিত্রতা ; এবং স্বতঃস্ফূর্ততা যে অবাক হতেই হয়।
" নকশার নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট ধাতুশিল্পীরা মন্দির টেরাকোটা শিল্পী দের কল্পলোকেই শুধু বিচরণ করেন নি। তাঁদের এবং পটুয়া শিল্পী দের আঙ্গিকের ও অনুসরণ করেছেন নিষ্ঠার সঙ্গে। রামায়ণ ; মহাভারতের উপাখ্যান ; পৌরাণিক কাহিনী
দশাবতার ; সামাজিক মায় ফিরিঙ্গি জীবন চিত্র ; শিকার ;
প্রমোদ ভ্রমণে র দৃশ্য ; ও অজস্র ফুলকারি নকশা স্থান পেয়েছে বনকাটির রথের গায়ে। "
সম্ভবতঃ খড়ি দিয়ে প্লেটের উপরে নকসা এঁকে নেওয়া হত।
তারাপদ সাঁতরা মশাই তাঁর অনুসন্ধানে ' খড়িপেত্যে ' নামে এক শিল্পী গোষ্ঠী র নাম বলেছেন। তা যদি হয় একদল নকসা এঁকেছেন। আরেক দল খোদাই করেছেন। মাত্র ৬ মাসের মধ্যে
কাজ শেষ করতে হয়েছে। অর্থাৎ অনেককে নিয়োজিত করতে হয়েছে।
পিতলের পাত ধরে নেওয়াই যায় যে সেই সময়ের বিখ্যাত পিতল কাঁসার কেন্দ্র কেন্দুলী - টিকরবেতা বা আদুরিয়া - অমরপুর এর কর্মকারেরা বানিয়েছেন। ঢালাই এর যে কাজ
আছে রথের ' মৃত্যুলতা ' বা বর্শায় তা এখানের ই।
রথের সারথি ; এবং দু টি ঘোড়া তাও পিতলের। ধরে নেওয়া ই যায় তা এখানের। স্থানীয় শিল্পী কারিগর দের সহায়তা আছেই।
আটটি ভারী চাকা। তার লোহার ফ্রেমিং অর্থাৎ কাঠামো বানানো ; জোড়ের কাজ করা ( এখন কার মতো ওয়েল্ডিং) এর যুগ নয়। সে বড় সহজ কাজ নয়।
আর নকসা অঙ্কনের কাজ যে বা যাঁরা ই করে থাকুন না কেন
তাঁরা অন্ততঃ টিকরবেতা বা অমরপুরের নন। এঁদের কাজের
থেকে এখানের কাজ উচ্চাঙ্গের। রেখার চলন অনেক সাবলীল স্বতঃস্ফূর্ত। বাবুরা কলকাতা থেকে শিল্পী দের নিয়ে এলেন। এমন অনেক শিল্পী তো তখন আপার চিৎপুর এলাকায় ছিলেন। এলাকার প্রাচীণ মানুষেরা বলেন মুখুজ্জে বাবুরা কলকাতা থেকে সবাইকে নিয়ে এসেছিলেন।
" শেষ মধ্যযুগে বাঙালী সূত্রধর শিল্পীরা কাষ্ঠ ;পাষাণ ; মৃত্তিকা ও চিত্র এই চারটির মাধ্যমে যে উচ্চাঙ্গের শিল্পচর্চা করে গিয়েছেন ঠিক এই সময়টিতে তার কিছু অবনতি ঘটলেও পাথরের স্থাপত্য ভাস্কর্য্য ছাড়া অন্যগুলি অল্পবিস্তর সজীব ই ছিল। সেজন্য কাঠ খোদাই ; পোড়ামাটির মন্দির অলংকরণ
বা পটচিত্রের আঙ্গিকের সাথে পিতলের রথের নকাশি কাজের
বেশ সাদৃশ্য দেখা যায়। "
" এই বইয়ের অন্যত্র সন্নিবিষ্ট বনকাটি র পিতলের রথ থেকে
আহৃত বলরাম ও বেহালা বাদিকার ছবি দুটি যে মন্দির টেরাকোটা র সগোত্র তা যে কোন অভিজ্ঞ ব্যক্তি র ই নজরে পড়বে। আবার বলরামের ছবিটি র সঙ্গে পটচিত্রের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা বর্ণনার অপেক্ষা রাখেনা। সেজন্য সূত্রধর শিল্পী রা যে পিতলের মাধ্যমে কাজ করেছেন এরকম একটা ধারণা হওয়া স্বাভাবিক। যদিও এ বিষয়ে অকাট্য কোন প্রমান নেই।
তবে কাঁসারী বা কর্মকার সম্প্রদায়ের কারিগর যাঁরাই এ শিল্পের চর্চা করে থাকুন না কেন ; সমকালীন সূত্রধর শিল্পীদের
কলাকৌশল যে তাঁদের খুবই প্রভাবিত করেছিল তা সন্দেহাতীত। "
কে না মুগ্ধ হয়েছেন এই রথের অলংকরণ দেখে। এর সহজ ; সাবলীল ; স্বতঃস্ফূর্ত রেখার চলন দেখে। বিষয় বৈচিত্র্য দেখে। এত বিষয়ের সন্নিবেশ কমই দেখা যায়। মহিলা জিমন্যাস্ট ; পাখি শিকার ; চরকের দৃশ্য ; সহ নানা সামাজিক চিত্রন। এই রথের অলংকরণ দেখে মুগ্ধ হয়েছেন আচার্য্য নন্দলাল।
এই রথের একটি কৌতুককর চিত্রের অনুকরণে কালো বাড়ির
গায়ে রিলিফ ভাস্কর্য করিয়েছেন। টিকিধারী পিঠ বাঁকা এক বৃদ্ধের পিঠে বসে বানরের ছানা। বেশ মজার ই বটে।
বিশিষ্ট শিল্পী মুকুল দে খড়ের গাদার পিছনে অবহেলায় পড়ে থাকতে দেখেছেন অমূল্য এই শিল্পকীর্তি টিকে।
শ্রী অমিয় কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় মশাই এসেছেন কষ্ট করেই এগারো মাইল থেকে হেঁটে অযোধ্যা হয়ে বনকাটির এই রথের সামনে। তাঁর অমূল্য লেখা থেকে এখানে নানা অংশ উদ্ধৃত করা হয়েছে। শ্রী গুরুসদয় দত্ত মশাই বীরভূমের জেলা শাসক থাকা কালীন লোক শিল্পের সন্ধানে অবিশ্রান্ত ঘুরেছেন।
বীরভূমের প্রতি তাঁর বিশেষ ভালোবাসা ছিল। বারবার বীরভূমে ফিরে ফিরে এসেছেন। আর এ তো সংলগ্ন এলাকা। একই মাটি। মাঝে শুধু অজয়। এপার আর ওপার।
তিনি বলেছেন যেন গুটিয়ে রাখা পট চিত্র কে মেলে ধরা হয়েছে তার সকল সৌন্দর্য নিয়ে।
এই রথে রয়েছে দু টি erotic চিত্রণ। মুকুল দে মশাই লিখেছেন " Among the engravings on the ratha there are also two erotic subjects. As this type of erotic
engraving in temples is not common in Birbhum ".
পুরোহিত ব্রাহ্মণ কে তিনি এই চিত্র দু টি কেন এই রথের গায়ে
জিজ্ঞাসা করেছেন। ব্রাহ্মণ উত্তর দিয়েছেন রথের মেলায় অনেকে দেখে আনন্দ পায়। তিনি যে খুব ভুল বলেছেন তা নয়।
মানুষ তো মজা পায় ই। মেলার মজা তো আলাদা ই। গ্রাম বাঙলায় চাষের আগে রথের মেলা সে এক বিশেষ আনন্দ।
পাঁপড় ভাজা ; গরম জিলিপি ; আর ঘুড়ি ওড়ানোর আনন্দ।
এই erotic চিত্র দুটির বিষয়ে অন্যত্র ও আমি লিখেছি।
আমি যেভাবে দেখেছি। বুঝেছি শিল্পী মনকে।
রথের উপরের দিকের গঠন অনুযায়ী অর্ধবৃত্তাকার প্যানেল।
সেভাবেই সাজানো যুদ্ধের দৃশ্য। সৈন্য দলের যুদ্ধ যাত্রা র দৃশ্য।
এই যুদ্ধে যাওয়া ই কি শেষ যাওয়া! তার আগে শেষবারের মতো ই কি নরনারী র শারীরিক মিলন ? দুপাশে দু টি মৈথুন দৃশ্য। ভাবায়।
যুদ্ধ অবিরাম। রথের গায়ে লিখিত ' কুরূক্ষেত্র "। সম্মুখ ভাগের প্রধান চিত্র ভীষ্মের শরশয্যা। অর্জুনের লক্ষ্যভেদ। রাম
রাবণের যুদ্ধ।
আর এক দিকে সবার উপরে ' নবনারীকুঞ্জর '।
নীচে ' রাম সীতার রাজ্যাভিষেক "
আর এক দিকে লেখা ' সুধন্নার জুর্ধু '
অপর এক দিকে ' অক্রুর গমন '। চৈতন্য লীলা র নানা দৃশ্য।
শরশয্যায় ভীষ্মকে অর্জুন মাটিতে তীর নিক্ষেপ করে পাতাল গঙ্গা থেকে জল উত্তোলিত করে পান করাচ্ছেন।
নীচের দিকে থাকলেও 'সমুদ্র মন্থন ' একটি অনেক গুলি ফিগার সমন্বিত চিত্র। প্রতিটি চিত্রে ই শারীর সংস্থান বা কম্পোজিশন বেশ উঁচু মানের।
কি ধরনের ধৈর্য ; নিষ্ঠা ; শিল্পের প্রতি ভালোবাসা ;শিল্পজ্ঞান থাকলে এই জাতীয় অঙ্কন সম্ভব ভাবলে অবাক হতে হয়।
নমস্য সেই সব শিল্পী রা। তাঁরা স্থানীয় বা আগত সূত্রধর ই হোন আর কর্মকার যাই হোন না কেন তাঁরা রেখে গেছেন
অমর এক শিল্পকীর্তি।
পুরুষানুক্রমে বর্তমান সেবাইত
নীলমণি রায় ( বয়স ৬৭)।
কিন্তু মুকুল দে র লেখায় বা অন্যত্র রামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এর নামই আমরা পাচ্ছি। যদিও বিশাল ছিল না কি এই মুখোপাধ্যায় পরিবার। ব্যবসা সূত্রে এক শাখা কলকাতা তেই না কি বসবাস করতেন। আবার মারাত্মক কলেরায় এই পরিবারের কয়েকজন একদিনে ই মারা যাওয়ায় তাঁরা স্থান ত্যাগ করেন।
আবার এমনটা ও শোনা যায় যে ওয়ারেন হেস্টিংস এর অনেক গোপন অসাধু কারবারের কথা জানতেন এঁরা।
বর্দ্ধমানের রাজা দের সাথে যথেষ্ট সুসম্পর্ক ছিল। রাজা
ত্রিলোকচাঁদ কে ইংরেজ রা আক্রমণ করতে পারে ভেবে
রাজা সেনপাহাড়ী কেল্লায় অবস্থান করছিলেন। রাজা চিত্রসেন এই কেল্লা বানিয়েছিলেন। কামান এনে বসিয়েছিলেন। তার আগে ১৭৪০-৪৪ নাগাদ রাজা চিত্রসেন
এই সেনপাহাড়ী পরগনার ( বর্তমানের থানা কাঁকসা) পুনর্গঠনের কাজ করেছিলেন। রাজা ত্রিলোকচাঁদ ছিলেন
স্বাধীন চেতা। সিরাজের বিরুদ্ধে যে চক্রান্ত হয়েছিল তাতে তিনি এবং বীরভূমের পাঠান রাজা আসাদুল্লাহ খান যোগদান
করেন নাই। হেষ্টিংসের বিরুদ্ধে মহারাজ নন্দকুমার এর অভিযোগ পত্র নিয়ে তখন মামলা চলছে। নন্দকুমার এর পক্ষে
স্থানীয় বিশিষ্ট ধনী প্রভাবশালী জমিদার রা যাতে সাক্ষ্য দিতে না পারেন বা না দেন তার জন্য নানা ভাবে চাপ তৈরি করা হয়।
শোনা যায় মেজর হোয়াইট নাকি এই মুখোপাধ্যায় পরিবার এর উপর প্রবল চাপ তৈরি করেছিলেন। আক্রান্ত হবার ভয়ে
রাতারাতি না কি এই স্থান তাঁরা ত্যাগ করেন বা ত্যাগ করতে বাধ্য করানো হয়। নানা জায়গায় তাঁরা ছড়িয়ে যান।
আর এক বাল্যের স্মৃতি এই রথের সব অলংকরণ চিত্র কপি
করে নিয়ে গেছেন জনৈক মন মোহন দাস। বছরে একবার
নিজেদের গাড়ি নিয়ে দিল্লি থেকে স্বামী স্ত্রী আসতেন। নীলমণি রায়ের পিতা প্রয়াত শম্ভুনাথ রায়ের মাটির একটি বাইরের উপর কোঠা ঘরে তাঁরা থাকতেন। আর রথ চিত্র কপি করতেন।
নিশ্চিত ভাবেই ব্যবসায়িক কারণে ই।
আগে রথ টিকে তেঁতুল দিয়ে মাজানো হত। পিতলের রথ চকচক করত। সামগ্রিক খরচ বহন করতেন উখরার জমিদার রা। রাণী বিষ্ণুকুমারী র একটা সদর্থক ভূমিকা ছিল। তিনি ছিলেন উখরার হাণ্ডা জমিদার পরিবারের মেয়ে। পরবর্তী কালে তা বন্ধ হয়ে গেলে আর রথ মেজে পরিষ্কার করা হয়না।
রথের মেলা আজও বসে। আগে রথ যেত অযোধ্যা গ্রামের উত্তরে আমবাগানের ' রথ তলার ডাঙায় '। এখন আর এতটা টেনে নিয়ে যাওয়া হয়না। অযোধ্যা -বনকাটি হাটতলা পর্যন্ত রথ টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। ছোট্ট গ্রামীণ মেলা বসে।
চারপাশের গ্রাম থেকে অনেক মানুষ এই মেলায় আসেন।
রথের রশি ধরেন অনেক মানুষ ভক্তি ভরে আর রথের বিগ্রহ
এখানে জগন্নাথ নন। গোপাল বা গোপালেশ্বর।
" ভক্তেরা লুটায়ে সবে করিছে প্রণাম "।
----------- ----------- ----------- ----------- ----------- ----------- -------
গ্রন্থ সহায়তা। দেখা হয় নাই। শ্রী অমিয় কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
বীরভূম জেলা গেজেটিয়ার। ও ' ম্যালি
বর্ধমান ঃ ইতিহাস ও সংস্কৃতি। শ্রী যজ্ঞেশ্বর চৌধুরী
সাক্ষাতকার। শ্রী অনিল রায় বয়স ৮০।
শ্রী নীলমণি রায়। বয়স ৬৭।
শ্রী আশীষ মুখোপাধ্যায়। বয়স ৬৫।
নিজস্ব ক্ষেত্র সমীক্ষা এবং নিজের লেখা নানা প্রবন্ধ।
বঙ্গ সংস্কৃতির অঙ্গনে। সম্পাদনা শ্রী স্বপন ঠাকুর। নিজের প্রবন্ধ।
সাপ্তাহিক বর্তমান। নিজের লেখা প্রবন্ধ।
রাঢ়ভাবনা পত্রিকা। সম্পাদক। শ্রী সৌরেন্দ্র নাথ চট্টোপাধ্যায়
" বীরভূমের নীল গালা রেশম শিল্প। বিশেষ সংখ্যা।
ফেসবুক পোষ্ট। সৌজন্যে। শ্রী সত্যশ্রী উকিল। শুভদীপ সান্যাল৷ ইন্দ্রনীল মজুমদার।
চিত্র ঋণ। সত্যশ্রী উকিল। সাদা কালো ছবি। মুকুল দে মশাই এর তোলা।
----------- ----------- ----------- ----------- ----------- --- সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment