।। জানিনা কতদূর পৌঁছাবে আমার এই স্মরণাঞ্জলি।।
তোমাকে আমি স্মরণ করব সেটা খুব স্বাভাবিক কিন্তু
তোমার তো ছাত্র ছাত্রী অগণন
সে অবশ্য অনেক দিনের কথা
আমাদের মা মাসী বাবা কাকা দের বয়সী পুরনো
তোমার সহ শিক্ষকেরা তাঁরাও অবশ্য স্মরণযোগ্য
কিন্তু এই সময়ে তোমাদের কথা কার ও মনে নেই
বেশ সুন্দর রঙিন বেলুনের গেট হয়েছে এখন জানো
কত সাজানো গোছানো
ছেলে মেয়েরা কত কত উপহার এনেছে
এসব তোমরা ভাবতেই পারতে না
তোমরা তো অনেক অনেক দূর
আমরাই যেন বেশ প্রাচীণ প্রবীনহয়েছি কবেই
কিন্তু না আমি ভাবছি অন্য কথা
যতই বলা হোকনা কেন ভিত শক্ত মজবুত চাই
আমাদের তাঁদের কথা মনে থাকেনা যে
যাঁরা ভিত গড়ে দেন
যাঁরা যত্ন করে হাতের লেখা শেখাতেন বা বানান
শ্রী দূর্গা বস্ত্রালয় লেখা দেখে বললাম বাবা দূর্গা যে দুর্গা রে
ছেলেটি থেমে গেল তবু বলল না দ এ ঊ ই বটে
তর্ক না করে বললাম অভিধান দেখে নিস
সে আবার অস্ফুটে এক শিক্ষকের কথা বলল
আজ হাতের লেখা দেখলে হাসব না কাঁদব ভাবি
ক্লাস রুমে বোর্ডে কচ্চিৎ কদাচিৎ লেখা দেখি
ভূগোল এর ক্লাসে ম্যাপ টাঙানো দেখিনা
লাইনের পরে লাইনের রিডিং পড়ানো এই কি ইতিহাস ক্লাস
চেয়ারে বসে থেকে কি ক্লাস করা হয়
এ আর এমন কি কথা হারালো ভালোবাসা
মাথায় স্নেহের হাত রাখার মতো স্নিগ্ধ হাত -
আজ হারালো
আমার ছাত্র বা ছাত্রী যে ছেলে বা মেয়ে টি
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় খুব ভালো ফল করেছে
তাকে শুভেচছা অভিনন্দন জানালাম
একজন শিক্ষক হিসাবে ছেলে মেয়ে দের সাফল্যে মন ভরে যায় সে হতে পারে বা না পারে
আমার প্রত্যক্ষ ছাত্র ছাত্রী
সে কাকে স্মরণ করবে তোমাকে কি নিশ্চয়ই না সে এখন অনেক উচ্চে বিশ্ববিদ্যালয় অনেক ধাপ পেরিয়েছে ভূমি থেকে অনেক উচ্চে তার কি আর আমাদের কথা মনে আছে না থাকে
তবু ও
সেদিন ইলামবাজারের রাস্তায় এক প্রাক্তন ছাত্র হঠাৎ ই বলল না হঠাৎ নয় তার সাবজেক্ট নিয়েই কথা হচ্ছিল
ব্রাইট ছাত্র ছিল একটু মনে করাতেই বললাম তুমি তো
খুব ভালো ছিলে গো কেমেস্ট্রী তে এখন
বড় চাকরি করে কেমিস্ট
সে বলল স্যার কালীমূর্তি দেখলে আপনার কথা
মনে পড়ে যায়
সেই যে আপনি বলেছিলেন কালী মানেই কালো
যা কালো তাই কার্বন রে
কালীর কটা হাত চার টি তাই না
চার হাতে চার অস্ত্রের মতো ধরো চার টি হাইড্রোজেন ধরে আছে তাহলে ই হয়ে গেল শুরু কালী মানে কার্বন কেমেস্ট্রী
কার্বনের যোজ্যতা চার
কি মনে থাকবে এই হল সি এইচ ফোর মিথেন
ভুলিনি স্যার আমি কার্বন কেমেস্ট্রী নিয়েই কাজ করি
শুরু টা ভুলিনি
আমি আমার সেই ছাত্রের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম
কিছুক্ষণ
চোখ জ্বালা করছিল
দাদু। আমার শিক্ষক। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক।
এবং তাঁর সহশিক্ষক যাঁরা আমারও শিক্ষক
তাঁদের সকলকে আমার শ্রদ্ধা প্রণাম।
" বড় মাষ্টার " ননীগোপাল চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর সময়ের
সকল সহশিক্ষক চণ্ডীরাম মুখোপাধ্যায় ; রুধির কুমার সাহা
সুভাষ চট্টোপাধ্যায় ; যোগেশ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
ভিত তো তাঁরা ই গড়ে দিয়েছিলেন।
No comments:
Post a Comment