Thursday, 8 September 2022

অজয়ের উত্তরে উত্তর রাঢ়

অজয়ের উত্তরে উত্তর রাঢ়। বজ্রভূমি। বীরভূমি - বীরভূম। 
দক্ষিণে দক্ষিণ রাঢ়। সুহ্ম ভূমি। বা সুহ্ম।
চোল রাজ রাজেন্দ্র চোল রাঢ় আক্রমণ করেছিলেন।
তাঁর তিরুমালায় গিরিলিপি তে এই উত্তর রাঢ় এবং দক্ষিণ রাঢ় এর কথা আছে। তিনি রাঢ়দেশ জয় করেছিলেন।
রাঢ় বা লাঢ় দেশের কথা জৈন ধর্মগ্রন্থ আচারাঙ্গ সুত্র তে সর্বপ্রথম পাওয়া যায়।
অর্থাৎ অজয় সেই প্রাচীন কাল থেকেই প্রাকৃতিক সীমারেখা।
আর প্রাকৃতিক সীমারেখা কে গ্রহন করার নির্দেশ তো কৌটিল্য তাঁর অর্থশাস্ত্র এর ' জনপদ নিবেশ ' অধ্যায়ে ই দিয়েছেন।
ইংরেজ শাসনে ১৮০৬ সালে অজয়  বীরভুম এবং বর্ধমান এর সীমারেখা হিসাবে গৃহীত হয়।
চীনের হোয়াংহো বা এদেশের দামোদর এর মতো অজয় ' দুঃখের নদী ' হিসাবে আখ্যা না পেলেও অজয়ের প্রবল বন্যায়
বারবার দুপাশ ভেসেছে। বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
১৯৭৮ এর ভয়ংকরী বন্যা র স্মৃতি তো এখনো ক্ষতের মতো
জেগে আছে অজয় পারের মানুষ দের মনে।
তার আগে ১৯৩৫;৪৩; ৫৬ এই সব সালের বন্যা ও ছিল প্রবল।
১৮৬৬-৬৭ এবং ১৮৭৩ সালের Bengal Embankment Act অনুযায়ী ১৮৭৩ সালে অজয়ের দক্ষিণ পাড়ে গোরা বাজার বা গৌরবাজার থেকে কাজলদিঘী পর্যন্ত ৭মাইল ৩৯৪০ ফুট মাটির বাঁধ নির্মান করানো হয়। পরে পরে ই
বিষ্ণু পুর থেকে অর্জুন বাড়ি পর্যন্ত ৪ মাইল এবং তারপরে
সাতকাহনিয়া থেকে  সাগরপুতুল পর্যন্ত বাঁধ তৈরি হয়।
নীচে র দিকে বেশ কিছুটা জমিদারী বাঁধ ছিল।
বন্যার জলের তোড়ে বার বার মাটির বাঁধ ভেঙ্গেছে। আবার
কিছুটা দক্ষিণে পূর্বে সরে গিয়ে নূতন বাঁধ নির্মিত হয়েছে।
এ বাঁধের ইতিহাস ও তাই উপেক্ষার নয়। বিষ্ণুপুরের বাঁধের
গায়ের শতাব্দী প্রাচীন শিমূল গাছ গুলিকে দেখলে বোঝা যায়
তাদের প্রাচীনত্ব।
নদী বাঁধের দু ধারে ই পরিকল্পিত ভাবে এই সব গাছ লাগানো
হয়েছিল। শিমূল ; যজ্ঞডুমুর ; অর্জুন এই সব গাছ।
বেশ কিছু আছে। অনেক নাই।
সাতকাহনিয়া থেকে অর্জুনতলা পর্যন্ত বাঁধের গায়ের প্রাচীন গাছ গুলি ৭৮ এর বন্যায় উপড়ে ভেসে যায়। বাঁধের সেই সৌন্দর্য ও নষ্ট হয়ে যায়।
এই নদী বাঁধের উপর দিয়েই সারাদিন ই মানুষের যাতায়াত।
এটা একটা প্রধান পথ ও বটে।
অযোধ্যা বনকাটি সাতকাহনিয়া বসুধা এলাকার মানুষ জনের
নিকটবর্তী গঞ্জ ইলামবাজার যাবার এটাই প্রধান পথ।
------------------------------------     ------------ -----------------------------------
সংযোজন। আজ রবিবার। ১২/৭ /২০ 
সাতকাহনিয়া সেচ অফিসে বর্তমানে কোন অফিসার আছেন কি না জানিনা। আগে অফিসার দের দেখতাম সাইকেল নিয়ে বাঁধ পরিদর্শন করতে।
একটা গোরু র বাঁধে ওঠার ও অধিকার ছিলনা।
গোরুর গাড়ি তো দূর অস্ত
আর এখন - 
সে কথা সবাই জানে। কিন্তু জানে না
যাইহোক কিছু বাঁধা কনট্রাকটর আছেন এই দপ্তরে।
এই সেকশন এর এক বিশেষ নাম আছে
ঠিক বর্ষা নামার আগে বাঁধের খানা খন্দ ভরাট করার জন্য ট্রাকটারে করে কিছু বালি মাটি নামানো হয়।
অফিসার ভদ্রলোক কে আমার অনুরোধ একবার অর্জুনতলা পর্যন্ত ঘুরে আসুন। এক পশলা বৃষ্টির পর। 
এইটাই আমাদের ইলামবাজার যাবার কাছের পথ।
এই পথটাকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেবেন না। একান্ত অনুরোধ। 
( সাতকাহনিয়া ডাক বাংলো র কথা পরে হবে)

পুরনো পোষ্ট। ভালো লাগলে পড়ুন।

No comments:

Post a Comment