আজ না হয় একটু অন্য কথা বলি
বেশ ভালো লাগলো আজ।
বীরভূম আর্টিজানি আমন্ত্রণ জানিয়েছিল
এক দক্ষ গালা শিল্পী আগ্রহীদের হাতে কলমে কাজ শেখাবেন। এই ওয়ার্কশপ চলবে ৭ তারিখ পর্যন্ত। আজ ছিল উদ্বোধনী দিন।
স্থান সুরুল। শ্রীনিকেতন। গালা শিল্পী সেখ ইউসুফ আলী। কাজ শিখেছেন তাঁর গুরু ইলামবাজারের
অজিত গুঁই মশাই এর কাছে।
আহা কি সুন্দর তাঁর হাতের কাজ। বিকেল পর্যন্ত
দেখলাম। আমার সাথে ছিলেন আরেক শিল্পী
বিধান বিশ্বাস বাবু এবং শিল্প শিক্ষার্থী বেশ কিছু
ছেলে মেয়ে। কেউ কলাভবনে র মাস্টারস করা।
কেউ বাটিক নিয়ে কাজ করে। বাটিকের মাষ্টার মশাই সিউড়ি র যুবক অভিষেক সেনগুপ্ত। শুনলাম
শীঘ্রই বাটিকের দেশ ইন্দোনেশিয়া এবং সিংহল
যাচ্ছে। আরও ভালো কাজ দেখার শেখার জন্য।
বেশ গুণী ছেলেমেয়ে সব। ভালো লাগে এদের সাহচর্য। এরাই ভবিষ্যৎ। আমি এদেরই জয়গান গাই।
ইলামবাজার স্কুলে পড়তে গেছি। পিছনের পুকুর টার নাম ডাঙা' লরি পুকুর'। তার বেশ কিছু টা পিছনে আর একটা সেটা ও ' লরি পুকুর '
মনে প্রশ্ন ' লরি ' কথা টা। কারা 'লরি '। বাস লরি না হয় ; জানি। কিন্তু তা তো নয়। তবে -
তারপর মাস্টার মশাই কিরীটীবাবু বললেন।
এই লরি বা নুড়ি রা একদিন গালা র কাজ করতেন। তাঁরা ছিলেন ' গালা শিল্পী '।
আজ আর কেউ নিজেদের লরি বলে পরিচয় দেয়না। কেন যে দেয়না - কি জানি।
তারপর আমার শুরু হল খোঁজ নেওয়া।
একদিন যে ইলামবাজার ছিল গালা শিল্পের এক প্রধান কেন্দ্র।
নানা জায়গায় লিখেছি এখানের গালা শিল্পের কথা। এখানেও লিখেছি। অনেকেই জানেন।
শেষ হয়েই গিয়েছিল এই শিল্প। শেষ দুই শিল্পী
নেপাল আর গোপাল গুঁই কে প্রশিক্ষক করে
নিয়ে গিয়েছিলেন আর কেউ নন - রবীন্দ্রনাথ।
শিল্পসদনে শ্রীনিকেতনে। তাঁদের ই বংশধর অজিত গুঁই মশাই। তাঁর কাছে ই কাজ শিখেছেন
আমাদের এই ইউসুফ ভাই। যাক বেঁচে আছে
আমাদের বীরভূমের মাটিতে।
খুব খুশী হলাম তাঁর কাজ দেখে। আর যাঁরা উদ্যোগ নিয়েছেন এই লুপ্ত শিল্পকে বাঁচানোর জন্য।
ধন্যবাদ বীরভূম আর্টিজানি কে।
অনেক কথা আছে এই গালা বা লাক্ষা নিয়ে।
অজয়ের এপার ওপার দুপারের অনেক কথা আছে। অনেক বলেছি। খুঁজছি।আবার বলব।
এপারে বসুধা থেকে পশ্চিমের জঙ্গল মহল।
সেনপাহাড়ী র জঙ্গল মহলের নাম ই হয়ে গেছে তখন ' লা - মহল '। বসুধার লরী দের জমজমাট ব্যবসা। এই বসুধার লরিরাও বানিয়েছিল দু তিনটি শিবমন্দির। আর সেই প্রায় দু শো বছর আগে আমাদের বনকাটি র সেই সময়ের বিখ্যাত লাক্ষা ব্যবসায়ী ধনী জমিদার রামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
বানিয়েছিলেন বনকাটির বিখ্যাত গোপালেশ্বর শিব মন্দির। অসামান্য তার টেরাকোটা র অলংকরণ। আর তারপর বনকাটির বিখ্যাত পিতলের রথ। নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা শক্ত তার পিতলের পাতের উপর এনগ্রেভিং
এর কাজ। অনুপম সে অলংকরণ। যে কোন শিল্পরসিকের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসবে 'আহা'।
No comments:
Post a Comment