Sunday, 24 May 2020

বনকাটি। শ্রী অনিল কুমার রায় মহাশয়

বনকাটি। বনকাটি।
পোষ্ট বনকাটি। থানা কাঁকসা। জেলা প বর্ধমান
বন কাটা দের দল সে কবে বন কেটে পরিষ্কার করে দিল তারপর শুরু হল বসত  তা কি আর কেউ বলতে পারে
তবে বনকাটি বললে এই এলাকার মানুষ দের প্রথমেই মনে পড়বে ' রায় কালীবাড়ি '। তার কালীপূজা। আর নিশ্চিত ভাবেই রায় পরিবারের প্রধান প্রায় আশী ছুঁই ছুঁই শ্রী অনিল কুমার রায় মহাশয়ে র কথা। নানা অভিজ্ঞতা য় ভরপুর তাঁর ঝুলি। কত কথা কাহিনী র ভাণ্ডারী তিনি। গ্রামে গ্রামে এমন মানুষের সংখ্যা কমে আসছে। অনেক সময় পাওয়া যাচ্ছেওনা। যাঁর কাছ থেকে সেই গ্রাম এলাকা সম্বন্ধে কিছু জানা যায়।
' গড় জঙ্গলে র গায়ে গা লাগিয়ে আমাদের এই বনকাটি '
জানেন আপনারা। গড় জঙ্গল ; ইছাই ঘোষ ; দেবী শ্যামারূপা ; ধর্মমঙ্গল কাব্যের ইছাই লাউসেন যুদ্ধের কত কথা কাহিনী আপনাদের শুনিয়েছি। এখানে বলেছি। নানা জায়গায় লিখেছি। "তেপান্তরে " বসে কত গুনী মানুষ জন শুনেছেন এই এলাকার কত কথা কাহিনী। বলাতেই আমার আনন্দ। এক ভ্রমণ পত্রিকা বলেছিল ' সেনপাহাড়ী র কথক ঠাকুর '। ভালবেসে কেউ কেউ ডাকেন এখন। আমার যেন মনে হয় আমার কাজ ই যেন এই। এই এলাকা ' সেনপাহাড়ী ' র কথা আপনাদের শুনিয়ে যাওয়া। যদি কারো মনে থাকে। এভাবেই মাটির ঋণ যদি কিছু শোধ হয়। এই মাটিতেই জন্মেছি তো।


বনকাটি র ' রায় পরিবার ' অন্যতম প্রাচীন পরিবার। এঁরা ও একদিন এখানে এসেছেন। সে কত দিন আগে। তা নিশ্চিত ভাবে বলা মুশকিল।  রায় মশাই এর মুখেই যা শোনা আপনাদের তা শোনাচ্ছি। "রায় " খেতাব তাঁরা পেয়েছিলেন
না কি মুর্শিদাবাদ নবাব দরবার থেকে। সেন রাজাদের ' তন্ত্রগুরু ' মহেশ্বর প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় ' মহাশয় তাঁদের পূর্ব পুরুষ। সেন রাজাদের সাথে ই না কি এসেছিলেন এখানে। অজয়ে নৌকা যোগে। এই জঙ্গল ভুমিতে তখন অনেক তান্ত্রিক। তন্ত্র সাধনার উপযুক্ত জায়গা। মহেশ্বরপ্রসাদ এখানেই স্থায়ী হলেন। যথেষ্ট জায়গা জমি র ইজারা পেলেন।
তারপর বানালেন কালীমন্দির। পুরনো সে মন্দির নাই। পুরনো মন্দিরে র ভিতের উপর পরে আবার দালান আকৃতির মন্দির তৈরী হয়েছে। পাশের খেল কদম বা চাকলতা গাছটি ই বলে দেবে এই স্থলের প্রাচীনত্ব। কে জানে তার বয়স কত।
১৭০৪ শকাব্দে রায় পরিবার নির্মাণ করালেন এই এলাকার প্রথম দুটি শিবমন্দির। কালী র মুখোমুখি। কালীর ভৈরব।
সম্পুর্ণ তান্ত্রিক পদ্ধতি তে পূজা হয় ঘোর অমানিশা য়। পাশেই শ্মশান ভূমি। সেখান থেকেই শুরু হয় পুজার আবাহন।
তার পরবর্তী ৫০ বছর জুড়ে কত নির্মান। ১৭৫৭ তে পুর্বমুখী তিনটি শিখর রীতির শিবমন্দির। সম্মুখভাগে টেরাকোটার দশমহাবিদ্যার নানা মূর্তি।
দক্ষিণে র দ্বিতল বিষ্ণু মন্দির এর একটি দেওয়াল বিপজ্জনক ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। নিজেদের বসবাসের জন্য নির্মিত প্রাসাদ ধ্বংস স্তুপ।
জমিদারী র আয়ের পাশাপাশি নানা ব্যবসা। অনেক গুলি ব্রাহ্মণ পরিবার একই প্রাঙ্গণে বসবাস করেন। তাঁরা একসাথে ব্যবসা করছেন। প্রভূত অর্থোপার্জন করছেন। বানাচ্ছেন  শিব মন্দির ; দুর্গাদালান ; বিষ্ণুমন্দির ; নিজেদের বসবাসের প্রাসাদ। চট্টোপাধ্যায় ; মুখোপাধ্যায় ; রায় পরিবার গুলি একত্রে নানা ব্যবসা করছেন।৷৷   ২য় পর্বে শেষ হবে।
ছবিতে রায় পরিবারের কর্তা শ্রী অনিল কুমার রায় মহাশয়। মন্দিরে র দাওয়ায় বসে।


2 comments:

  1. বনকাটি গ্রাম। নাম তখনই দেওয়া হয়েছে হয়তো সেই যখন বনকেটে গ্রাম তৈরি হয়েছে। খুব সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন।

    ReplyDelete
  2. আমরা এই ব্লগে নতুন অভিযাত্রী, কিন্তু আপনার পুরোনো গুণমুগ্ধ। আজ খুঁজে খুঁজে এসে পৌঁছলাম আপনার কাহিনী সম্ভার এর ধনাগারে। এসে লোকসান হয়নি, সেটা জানাই ছিল। এই বিরল রত্ন গুলি একত্র করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ

    ReplyDelete