।। বীরভূমের লোহা মহল।। ২ পাতা আরম্ভ।
সামগ্রিক ভাবে এই পর্ব চারটি হিমযুগ ( glacial) এবং চারটি আন্তর্হিম যুগে ( inter glacial episode) এ বিভক্ত। হিমযুগের শেষে দেখা দেয় চারটি প্লাবন যুগ ও আন্তঃপ্লাবন যুগ। ( pluvial এবং inter pluvial episode) ।তাদের প্রভাব বিন্ধ্যপর্বতের পূর্বাঞ্চলে স্পষ্ট। এই প্লাবনের বিস্তার ছিল পশ্চিম ভারতের সৌরাষ্ট্র এর মধ্যাঞ্চল থেকে শুরু করে পূর্বে পশ্চিম বঙ্গের বর্ধমান ; বীরভূম ; মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশের উত্তর ভাগ বরাবর ত্রিপুরা পর্যন্ত এবং দক্ষিণে কেরল ; তামিল নাড়ু পর্যন্ত।
হিমযুগ এবং প্লাবন যুগের আবহাওয়ার তীব্র পার্থক্য এর জন্য ভূমিস্তরের পার্থক্য ও স্পষ্ট ধরা পড়ে। প্লাবন যুগে শিলাখণ্ড এবং ভূমিক্ষয় জনিত পদার্থ সঞ্চিত হয়ে ভূমিস্তরে পার্থক্য সৃষ্টি করে। ভূগর্ভের প্রাচীন শিলাস্তরের উপরে এই যে ভূভাগ তা গঠিত হয়েছে প্লাবন যুগের অধঃক্ষেপ জনিত কারনেই। আনুঃ দশ হাজার বৎসর পূর্বে এখানের আবহাওয়ায় আসে সমতা এবং মনুষ্য বসবাসের উপযোগী হয়ে ওঠে। বর্ধমান বীরভূমের অজয় তীরের বনভূমিতে
প্রাচীন প্রস্তর যুগের মানুষের বিচরণ ক্ষেত্রের নানা নমুনা পাওয়া গেছে। আবার দুর্গাপুর নিকট বর্তী বীরভানপুরে নব্য প্রস্তর যুগের মানুষের অধিবসতির সন্ধান মিলেছে।
মানুষের সভ্যতার উন্মেষ এবং বিকাশের উদ্ভব স্থল হিসাবে
" রাঢ় ভূমি " কে চিহ্নিত করার অনেক কারণ ই রয়েছে।
আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক উদাসীনতায় এই এলাকার উপযুক্ত
অনুসন্ধান হয়নি।
" বর্ধমান কে বলা হয় " রাঢ়ের মধ্যমনি "। ধর্মমঙ্গলের কবি
ঘণরাম চক্রবর্তী বলেছেন " বর্দ্ধমান দেশ ভাই সভাকার নাভি "
বর্দ্ধমান মূল দেহকাণ্ড হলেও তার দুই হস্ত প্রসারিত বীরভূম এবং বাঁকুড়া য়। দুই পা যেন ছড়িয়ে আছে ঝাড়খণ্ড ; পুরুলিয়া
আর পশ্চিম মেদিনীপুরে। পশ্চিমাংশে র " পশ্চিম রাঢ়" বা প্রকৃত " রাঢ়ভূমি "।
মাটির প্রভাব তো মানুষের আকৃতি প্রকৃতি তে ছাপ ফেলবেই।
পশ্চিম রাঢ়ের মানুষ তাই স্বাভাবিক রুক্ষ ; কর্কশ ; পরিশ্রমী এবং ঐতিহাসিক ভাবেই লড়াকু । ইতিহাস তার সাক্ষ্য দেয়।
------------ ------------ ------------ ------------ ------------ ২ পাতা শেষ
No comments:
Post a Comment