Friday, 15 November 2019

তেপান্তর। নাট্যগ্রাম। এক এবং অনন্য



তেপান্তর। তেপান্তর নাট্যগ্রাম। গ্রাম সাতকাহনিয়া। পোষ্ট বনকাটি। থানা কাঁকসা।জেলা পবর্ধমান। এসেছেন না কি। না এলে আসুন। সবার আমন্ত্রন। প্রস্তুতি চলছে এবারের সাংস্কৃতিক উৎসবের। যদি আসতে চান কথা বলুন নাট্যগ্রাম কর্ণধার কল্লোল ভট্টাচার্য র সাথে। ফোন ৯৪৩৪৬৪৬৯৮২। অন্য সময়েও আসতে পারেন। তুলনায় ফাঁকা সময়ে। তুলনায় বললাম এই জন্যে যে সারা বছর ই কিছু না কিছু হচ্ছে। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। ওদের রান্নাঘর সারা বছর ই খোলা থাকে। কেউ না কেউ আছেন ই প্রায়। আপনারা তখন ও আসতে পারেন। আমি বলি থাকুন। আর এখন আমাদের সবার ই অবস্থা প্রায় একরকম ই। সব দেখে টেখে যত রাত ই হোক ঘরে ফিরি। আর থাকতে যদি হয় ই তো কাছেই তো বোলপুর শান্তিনিকেতন। থাকলে ওখানেই থাকব। খোয়াই সোনাঝুরি র হাটে জিনিষ কেনা কাটা করে ফিরব।

 এসব বলছি কেন জানেন অনেক মানুষ এখন এই এলাকায় বেড়াতে আসছেন। আমার লেখাপত্র পড়েই হোক আর যেভাবেই হোক না কেন একদল ইতিহাস প্রেমী ; মানুষ এলেন। গেলেন। কেউ কেউ থাকলেন। ইছাই ঘোষের দেউল ; অনবদ্য টেরাকোটা কাজ সমন্বিত বনকাটি র মন্দির রাজি; বিখ্যাত অলংকরণ সমৃদ্ধ পিতলের রথ তো আছেই। আর আছে ' গড় জঙ্গল'। দেবী শ্যামারূপা র থান ; গড় বেড়ী। এসব তো সব কিছু ৫-১০ কিমি র মধ্যেই। অযোধ্যা বনকাটি লাগোয়া গ্রাম। প্রায় গঞ্জ এলাকা। সব ই পাবেন। কোন অসুবিধে নেই। আচ্ছা জয়দেব - কেন্দুলী র ; ঘুড়িষার ; ইলামবাজার এর অনবদ্য মন্দির গুলি দেখবেন না। ইচ্ছে হচ্ছে না। " পাণ্ডুরাজার ঢিবি "। যে ঢিবি র নীচে লুকিয়ে আছে ৩৫০০ বছর আগের আদি বাঙ্গালীর ইতিহাস। সত্যি একবার পা ফেলতে ইচ্ছে করছে না। ",তুলাক্ষেত্র বর্ধমান স্তুপ"। পাল রাজাদের আমলে নির্মিত সেই বিখ্যাত ভরতপুরের বৌদ্ধ স্তুপ। যাবেন না একবার। সব ২০ কিমি ব্যাসার্ধ এর মধ্যে ই। যাবেন না কি " রাঢ়েশ্বর শিব মন্দির দেখতে। আর মৌখিরা কালিকা পুর না দেখলে কি চলে। ঐ মন্দির প্রাসাদ রাজি। সেই চাঁদনী। সরোবর। প্রকৃতি। ওই জন্যে বলি এখানে আসুন। সময় নিয়ে। তেপান্তর নাট্য গ্রামে থেকে সব ঘুরুন। দেখুন আমাদের বাংলাকে। জানুন তার ইতিহাস। আমি তো আছি। তেপান্তর এর সব রকমের ' প্যাকেজ ' আছে। আছে তেপান্তর কর্মী দলের আন্তরিকতা। এমন টি বোধ হয় অন্য কোথাও পাবেন না।

Sunday, 6 October 2019

কারিগর দের দুর্গাপুজো। বনকাটি।

এলাকার দুর্গাপুজো। বনকাটি অযোধ্যা। থানা কাঁকসা। প বর্ধমান দুর্গাপুজো চালু করা তো আর সহজ ব্যাপার নয়। অবস্থা ভাল না হলে কি আর বামুন রা তো সবাই অনেক জমি জায়গার মালিক। বন জঙ্গল কেটে সাফ করিয়ে চাষের জমি বের করে তার উপরে চাষী বসিয়ে ধান চাষ। তারপর জমির খাজনা। ফসলের ভাগ নেওয়া। রাজাকে তো কর দিতে হবে। আর রাজারা বামুন দিকে ই সবচেয়ে বিশ্বাসী মনে করেছে। এদের কে ইংরেজ রাও তাই মনে করে। এদের সঙ্গে ভালো ব্যবসা করা যায় ওরা নিজে মুখেই বলেছে। তাই বামুন রা অনেক জঙ্গল জায়গা পেয়েছে ভেঙ্গে আবাদি করার জন্য। এরাই জমিদার হয়েছে। অনেক টাকা খাজনা আদায় করেছে। টাকা জমেছে। সেই টাকায় নানা ব্যবসা করেছে।


 ইংরেজ রাও তাই চেয়েছে। ' আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করো '। আর বনকাটি র বাবুরা করেছে। ব্যবসা করে অনেক টাকা। অনেক টাকা এলাকায় ঢুকেছে। বেনে ; ময়রা মোদক ; তাম্বুলী ; সদগোপ ; স্বর্ণ কার ; কর্মকার ; তাঁতী রা এখানে এসে বসেছে। নিজ নিজ বৃত্তিতে। ভালো ব্যবসা হচ্ছে। জমিদার ঘর গুলোতে ই দিয়ে পারা যায়না। আশেপাশে র জমিদার রাও মাল কেনার অন্য এখানে লোক পাঠায়। নদীর ওপার থেকেও অর্ডার আসে। পাহারা দার দের জন্য ; ডাকাত দলের জন্য ও মাল বানায়। চুরির সোনা বেনে রা কেনে। স্বর্ণকার দিয়ে মাল গড়িয়ে নেয়। থাকে ঘরের গুপ্তঘরে। মাঝে মাঝে ঝুড়িতে করে মুদ্রা পাকা দালান এর ছাদে রোদে দেয়। তখন বন্দুক ধারী পাহারা আনে ভাড়া করে। তাঁতী রা সবাই বেশ কাজ করছে। দালাল দের ভালো অবস্থা। দে দের ও ভালো। লোহার কর্মকার দের সোনার কর্মকার দের অবস্থা বেশ ভালো হয়েছে। দুর্গাপুজো চালু না করলে হয়। চালু হল। যথা রীতি সাড়ম্বরে।


Wednesday, 18 September 2019

কোঁড়া পাড়ার মনসা পুজো

এ গ্রামে র কোঁড়া পাড়ার মনসা পুজো।  ' সে অনেক দিনের ভাই ' বলতো বুড়ো বাণেশ্বর কোঁড়া। তার বৌ গৌরী দিদি কি সুন্দর দেখতে ছিল। দিদিমা বলত ' কোঁড়া ঘরে এমন দেখতে - '। 
এই বিশ্বকর্মা পুজোর দিনেই ; রাতে এই মনসার পুজো। আমাদের গ্রাম সাতকাহনিয়া ছাড়া আর কোঁড়া রা আছে নিমটিকুড়ি ; ডাঙ্গাল ; গ্রামে। বনকাটিতে দু এক ঘর। ও উঠে যাওয়া। 
কিন্তু এই কোঁড়া রা কখন এল এদেশে। 

সেই বীরভূম সীমান্তে র লাগোয়া সাঁওতাল পরগনার বন পাহাড়ের দেশ থেকে। শাল পলাশের দেশ ছেড়ে। 
এসেছে কি সাধে। কাজের খোঁজে। পরিশ্রমী জাত। 
ফাঁকি দিতে জানেনা। গতর ঢালে। বাবুরা আনিয়েছে ও বটে। চাষবাসের জন্যে। তারপর 
নীল বাবু  সাহেবদের নীল কারখানায় কাজের জন্যে। এখানকার বাবুরাও তখন তাঁদের সাথে ব্যবসা করছেন। 

এ গায়েঁ ও নীল বাড়ি আছে। একদিন নদী ধারে র জমিতে নীল চাষ হতো। নামো পাড়ায় বড় বড় মোটা মোটা ইঁটের চৌবাচ্চা ছিল। 
তখন ই কি এসেছে এ গাঁয়ে কোঁড়া রা। নিশ্চিত করে বলার কোন উপাদান নাই। 
আছে অনুমান। আর কোঁড়া শ্রমিক চাই এই মর্মে নীলকুঠি র বাবুদের রিপোর্ট 

পুজোর ঢাক বাজছে। গোটা কোঁড়া পাড়া একজায়গায় আজ। বাইরে যারা চলে গিয়েছে তারা এসেছে। গাঁয়ের বিয়ে হয়ে চলে যাওয়া মেয়ে গুলো এসেছে। 
বেশ লাগছে আমার।

Friday, 23 August 2019

যাপন চিত্র

এ এক অসহ্য যাপন। এবং দিন প্রতিদিন। ঐ বিশাল ভগ্ন প্রাসাদ। তার ই এক অংশে কোনমতে ভয়ে ভয়ে বাস। সামনে দেয়াল বেয়ে উঠেছে বট পাকুড়। নানা দিকে ছড়িয়েছে শিকড়ের জাল। কখনও বা মনে হয় জড়িয়ে ধরে আছে যেন। কেননা দেওয়ালের মোটা কোনের জোড় ও তো ফেটে গেছে। চূন সুরকী তাই টিঁকে আছে আজও। ইঁটে নোনা তো লাগার ই কথা। লেগেছে। তবু কিন্তু টিঁকে আছে। হয়তো এভাবেই কেটে যাবে আরও কিছু কিছু দিন। মনে হয় যেন ভালো করে জড়িয়ে ধরছে বটপাকুড়ের দশ হাত পা। না। জড়িয়ে ধরেছি আষ্টেপৃষ্ঠে। পড়তে দিচ্ছি না। হ্যাঁ। ওঠে চিতি সাপ উঠে যায়। ঢুকে যায় ঢোঁড়া। আর জল সে তো পড়বেই। বর্ষা য়। মেঝে ভিজে যায়।


এ সব নিয়ে ই তবু বাঁচতে হয়। উপায় তো না কিছুই নাই। এ যে কি বাঁচা। কে বুঝবে। নিজেরাই শুধু বুঝি। তাও কে কেমন ভাবে সে জানা যাবে না। স্বামী ; শাশুড়ি ; ছেলে ; নিজে। সবার অনুভব আলাদা আলাদা। আমি শুধু জানলার ধারে বসে ভাবি আমিকি না জমিদার বাড়ির বৌ। সামনের বাঁধানো ঘাটের দিঘী র সামনে দাঁড়িয়ে জল দেখি। জল। অবিরল। বয়ে যায় স্রোত গভীর ভিতরে। এ যে কি যাপন। চার দিক জুড়ে শুধু ভাঙা। আর ভাঙ্গনের শব্দ। সুতীব্র গভীর বিষাদ যাপন। একসাথে মিলে যায় মানকর কবিরাজ বাড়ি, কালিকাপুর রায় বাড়ি, বারুইপুর পাল বাড়ি কি গৌরবাজার পাণ্ডে বাড়ি । কালস্রোতে সব পুরোনো ধনী জমিদার বাড়ির প্রায় একই অবস্থা। আজ অসহায় বর্তমান প্রজন্ম। দুঃ সহ যাপনের অসহ্য বিষাদ বেদনা র স্রোত বয়ে যায় অবিচ্ছিন্ন ভাবে।



অমাবস্যা দিন

বটে এ এক সময়। না আজ আর দিকদশটা নয় বৃত্তের অন্তর্গত সব কোন ই আজ ধর্তব্য দিক শব্দ টা কি যথার্থ যেমন জটিলতা শব্দটির ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে অনেক বহু কৌনিক জটিলতার একটা সামগ্রিক নাম করন প্রয়োজন। আবার এই সব হারানোর দিকে ছুটে যাওয়া সময় এত দ্রুত তার প্রেক্ষিত পরিবর্তন। এই সময়ের নামকরণ যজ্ঞের ঋত্বিকেরা নিশ্চয়ই বসেছেন নিজ নিজ নিশ্চিত আরামকেদারায় আমি অস্থিরতার রোগাক্রান্ত এক অতিদ্রুত বাই পোলার মনোরোগী বড়জোর হিষ্টিরিয়া ছিলাম ডাক্তারের দেখা নেই। ------------------+------------------ প্রণব ভট্টাচার্য। অমাবস্যা বৈশাখী।

সাতকাহনিয়া বাবাজী আখড়া

সাতকাহনিয়ার বাবাজী আখড়া। অনেক পুরোনো গ্রাম। অজয়ের দক্ষিণ তীরে। একদিন ছিল অনেক গুলো বৈষ্ণব আশ্রম বা আখড়া। গাঁয়ের মাঝ খানে বিরাট পুরোনো বট জানান দিচ্ছে তার প্রাচীনত্ব।। নাম তার বাবাজী বটতলা। কোন বাবাজী যে রোপণ করেছিলেন -। বটতলার পাশেই বৈষ্ণব সমাধি স্থল । পাশেই নবীন দাস বাবাজীর আখড়া। সে অনেক পুরনো। শতবর্ষের ও বেশী। আরও ছিলেন বুড়ো বাবাজী ; সনাতন বাবাজী ; গোপাল বাবাজীর মতো সহজ সাধকেরা। আজ যদিও আর তাদের আশ্রমের চিহ্ন নাই। আছে কেবল এই নবীন দাস বাবাজীর আশ্রম। সে ও টিকে গেছে এই আশ্রমে একদিন এসে ঠাঁই পেয়ে ছিল বালকমাতা দাসী। গৃহী বোষ্টম ঘরের বাল্যবিধবা। আবার তাঁর কাছে ঠাঁই পেয়েছিলেন বামুন ঘরের প্রায় বাল্যবিধবা অন্নপূর্ণা দেব্যা। বালকমাতা কে আমি মাতামা বলেই ডাকতাম। মা ও বলতাম। কোলে পিঠে করে মানুষ করেছেন। প্রায় কোলে চাপিয়ে নিয়ে যেত ওপারে ভিক্ষা বা মাধুকরী করতে। বনে জঙ্গলে নানা লতা পাতা তুলতে। কেন্দুলীর মেলায় নিয়ে যেত আমাকে। নানা আখড়ায় ঘুরতাম। ছোট থেকেই সহজ সাধনার নানা গুহ্য প্রক্রিয়া সম্পর্কে আগ্রহ তৈরী হয়ে গিয়েছিল। কত সাধক বাবাজী বাউল বোষ্টম যে এই সাতকাহনিয়ার আশ্রমে এসেছেন। কত জনের গান শুনেছি তাদের কোলে বসে। আমি যে ছিলাম বালক মাতার পালিত ছেলের মতো। সবাই খুব ভালোবাসতেন। পরিণত বয়সে মানে ১০১ বছর বয়সে মারা যান। কানে ভাসে তাঁর গুরু র সেই কথা " ওরে আমাদের গুরুর কোন শিষ্য ১০০র নীচে দেহ রাখবেনা রে " তোর মাতার বয়েস ১০১ " আশ্রমের বাইরে এই তমাল টি হলুদ ফলে ফলে ভরে গেছে। বুড়ো বাবাজী তলার তমাল টি ২০০ বছরের কাছাকাছি। আহা কি শীতল তার ছায়া।

আমার গ্রামের দশহরা উ ৎসব

অজয় এখানে বাঁক নিয়েছে পশ্চিম থেকে উত্তরে। গাঁয়ের উত্তরে অজয়। গাঁয়ের নাম সাতকাহনিয়া। এখানকার দশহরা র ধূম জমজমাট। সে অনেক কাল আগে থেকেই। তখন নদী তে জল গড়াত।দু তিন ফুট জল।সে ছিল অন্য নদী। সে নদী আর নাই। ঠাকুর চান করাতেনদী যায়। সংগে সংগে ভক্তাদের দল। ধীবর দেয়াসী রা ঠাকুর কোলে করে নিয়ে যায়। ভর নামে তাদের। আরও কারো কারো। আর আমরা সবার আগে ছুটে ছুটে। খালি পায়ে। পায়ের তলা পুড়ে যায়। তো কি। গিয়েই জলে ঝাঁপ। নীলবাড়ি র কলাবাগানের ঘাট থেকে শিমুল তলার ঘাট পর্যন্ত। চি ৎ সাঁতার। জল ই টেনে নিয়ে যায়। আমরা গাঁয়ের ছেলে। পুকুরে চান। কমবয়েস থেকেই জল খেয়ে খেয়ে সাঁতার শিখেছি। আমাদের আর ভয় কি। এই রকম দু তিনবার। তবে মাঝে মাঝে নদী র পশ্চিম দিকে একবার আর একবার পুব দিকে তাকাতাম।কোন দিক থেকে যে মা গঙ্গা কুমীরের মতো হাঙ্গরের না মকরের পিঠে চেপে ভেসে আসবে। তারপর জল থেকে উঠে হালদার বাড়ি র বিরাট গামলায় চিঁড়ে প্রসাদ। মাঠে তখনও চলছে বটূ কোঁড়া ভোঁটা মাল ষষ্ঠী বাউরী দের দলের ষোট খেলা। তাল তাড়ির দম। গায়ে অসুরের শক্তি যেন। চারপাশে অনেক মানুষ। খেলা দেখছে। ওব্বো ওব্বো দিচ্ছে। ঠাকুরের নদী স্নান পর্ব প্রায় দু ঘণ্টার। বেলা গড়ালে নদী থেকে ফেরা। পথে নানা জায়গায় থামা। মনস্কামনা পূরণের জন্য পথের উপর কেউ হত্যে দিয়ে পড়ে আছে। সে মায়ের জবাব ভর এসেছে যে দেয়াসী র তার মুখ থেকে না শুনে পথ ই ছাড়েনা। আরও জোরে ঢাক ঢোল কাঁসর বাজে। ফুল পড়ে। তারপর সেই বৈরাগি বটতলায়। সেখানেই তো মেলা। বহু লোকের ভীড়। দু চারটে দোকান। এখানে বাণ ফুঁড়েছে একদল ভক্তা। তাদের তদারকি তদ্বির করছে ওস্তাদেরা। মূল মন্দিরের সামনে আটচালায় চলছে মনসা মঙ্গলের পালা গান। দ্বিজ বংশী দাস ; ক্ষেমানন্দ দের পদ। এখন বনকাটি গ্রামের সন্তোষ চক্রবর্তী আর তার দল ভালো গান করেন। আগে ডাঙ্গাল গ্রামের বৈরাগি দের দল গাইত। আগের রাত থেকে গান আরম্ভ হয়। কমপক্ষে বারো চৌদ্দ বা কোনবার তার ও বেশী ছাগ বলি হয়। অনেকের মানত থাকে। আশেপাশে র পাঁচ সাতটা গ্রাম থেকে মানুষ জন আসে।মেয়ে রাই যে বেশী। ওরা না এলে কি মেলা পুজো কিছু জমে। মেলা তলা জমে ওঠে নানা পসরায়। একদিনের আয়োজন উৎসব পুজো। শেষ বিকেল পর্যন্ত চলে। রাতে সব ফাঁকা। আবার কখনও কখনও চেষ্টা হয়েছে দু দিনের পরব করার। যাত্রা গান। ফাংশান এসব করার। পয়সা র অভাব। গরীব মানুষের গাঁ। কে দেবে এত পয়সা। তবে এবার কমবয়সী ছেলেরা উদ্যোগ নিয়েছে। নানা গাঁ য়ে ঘুরে চাঁদা আদায় করেছে। কাল রাতে জলসা হবে। এবার বাড়তি ঢাক ঢোল আনিয়েছে। নারানপুর উদয়পুরের ঢাক মাজুরিয়া র ঢাক ঢোল এসেছে। অযোধ্যা গ্রামের বাগদী পাড়ার দক্ষ ছেলেরা বাণ ফোঁড়ার আয়োজন করেছে। আর এইসব মানুষ জনের আপ্যায়ন খাওয়া দাওয়া র দিক দেখতে তো লোক চাই। এমনি এমনি তো আর সব কিছু হয়ে যাবেনা। সে সব দেখছে মাধব মধু কেষ্ট বাউরী রা। আখড়ায় তার আয়েশ জমজমাট। ----------------৷ ৷ -------------------------------------

Saturday, 17 August 2019

রক্ষিত পুর। একটি গ্রামের নাম। থানা - কাঁকসা। প বর্ধমান। মলানদিঘী গ্রাম পঞ্চায়েত। গড় জঙ্গল। গড় কেল্লা। হাজার বছর আগের ' রামগঞ্জ তাম্র শাসনের ' রাঢ়াধিপ মহা মাণ্ডলিক ঈশ্বরী ঘোষের ' ঢেকুর গড় '। দেবী শ্যামারূপার নামে ' শ্যামারূপা র গড় '। পরিধি ঘিরে ঘন জঙ্গলের বেষ্টনী। 'মহাবৃক্ষ ' রূপ শাল জঙ্গল। গড় কে ঘিরে কাঁটা বাঁশের ঘন বেড়। প্রায় দুর্ভেদ্য। জঙ্গল ভূমি র দক্ষিণ প্রান্তে এই গ্রাম। পাহারা দিচ্ছে ' চুয়াড় ' দের গ্রাম চুয়া। লোহাগড়। অস্ত্র সস্ত্র নির্মাণের গ্রাম। আজকের লোহাগুড়ি। হরিতকী বনের গ্রাম হরিকী। তার মাঝে এই রক্ষিত পুর। ধন সম্পদ সৈন্য সামন্ত রক্ষিত থাকে এখানে। পুরনো গড়ের ধ্বংসাবশেষ উপর এখানেই কেল্লা বানিয়েছিলেন বর্ধমান রাজ বংশের রাজা চিত্রসেন। ১৭৪০-৪৪ এর মধ্যে পরগণা সেনপাহাড়ী র জমিদারি অধিকার লাভ করেছিলেন দিল্লির শাহী দরবার ; মহম্মদ শাহের থেকে। তারপর এই পরগনার পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেন। কেল্লা সুরক্ষিত করেন। কামান এনে বসান। ইংরেজ দের সাথে তখন তাঁর প্রবল বিরোধ। কেল্লা র পাহারায় ঘোড় সওয়ার বাহিনী নিযুক্ত করেন। আছে ঘোড় দৌড়ে র মাঠ। রক্ষিত পুরের চট্টরাজ পরিবার এখানে আসেন পাহারা দার বাহিনী র অন্যতম সৈন্যাধ্যক্ষ হিসাবে। ধীরে বিশাল ধনী হয়ে ওঠেন তাঁরা। ছিল নিজেদের পোষ্য ডাকাত বাহিনী। সে সময়টা য় প্রায় ই ঘটে ডাকাতি। এক ভূস্বামী অপরকে আক্রমণ করছে। লুঠ করছে অপরের ধন সম্পত্তি। সবার ই আছে সুরক্ষা তথা ডাকাত বাহিনী। এই চট্টরাজ পরিবার নির্মাণ করিয়েছিলেন নিজেদের জন্য অত্যন্ত সুরক্ষিত প্রাসাদ। ভূগর্ভ কক্ষ তো ছিলই। ছিল না কি কামানের নল ও। নির্মাণ করিয়েছিলেন শিব মন্দির। বিষ্ণু মন্দির। আজ ঘন জঙ্গলে ঢেকে আছে সেই সব কিছু। গভীর রাত্রে না ই সেই ভগ্ন প্রাসাদের ভিতর থেকে একরকমের ভূগর্ভ থেকে ওঠা আওয়াজ শোনা যায়। কেউ কেউ শুনেছেন। আমাকে তারা বলেছেন।

Wednesday, 12 June 2019

সাতকাহনিয়ার দশহরা উৎসব

অজয় এখানে বাঁক নিয়েছে পশ্চিম থেকে উত্তরে। গাঁয়ের উত্তরে অজয়। গাঁয়ের নাম সাতকাহনিয়া। এখানকার দশহরা র ধূম জমজমাট। সে অনেক কাল আগে থেকেই। তখন নদী তে জল গড়াত।দু তিন ফুট জল।সে ছিল অন্য নদী। সে নদী আর নাই। ঠাকুর চান করাতেনদী যায়। সংগে সংগে ভক্তাদের দল। ধীবর দেয়াসী রা ঠাকুর কোলে করে নিয়ে যায়। ভর নামে তাদের। আরও কারো কারো। আর আমরা সবার আগে ছুটে ছুটে। খালি পায়ে। পায়ের তলা পুড়ে যায়। তো কি। গিয়েই জলে ঝাঁপ। নীলবাড়ি র কলাবাগানের ঘাট থেকে শিমুল তলার ঘাট পর্যন্ত। চি ৎ সাঁতার। জল ই টেনে নিয়ে যায়। আমরা গাঁয়ের ছেলে। পুকুরে চান। কমবয়েস থেকেই জল খেয়ে খেয়ে সাঁতার শিখেছি। আমাদের আর ভয় কি। এই রকম দু তিনবার। তবে মাঝে মাঝে নদী র পশ্চিম দিকে একবার আর একবার পুব দিকে তাকাতাম।কোন দিক থেকে যে মা গঙ্গা কুমীরের মতো হাঙ্গরের না মকরের পিঠে চেপে ভেসে আসবে। তারপর জল থেকে উঠে হালদার বাড়ি র বিরাট গামলায় চিঁড়ে প্রসাদ। মাঠে তখনও চলছে বটূ কোঁড়া ভোঁটা মাল ষষ্ঠী বাউরী দের দলের ষোট খেলা। তাল তাড়ির দম। গায়ে অসুরের শক্তি যেন। চারপাশে অনেক মানুষ। খেলা দেখছে। ওব্বো ওব্বো দিচ্ছে। ঠাকুরের নদী স্নান পর্ব প্রায় দু ঘণ্টার। বেলা গড়ালে নদী থেকে ফেরা। পথে নানা জায়গায় থামা। মনস্কামনা পূরণের জন্য পথের উপর কেউ হত্যে দিয়ে পড়ে আছে। সে মায়ের জবাব ভর এসেছে যে দেয়াসী র তার মুখ থেকে না শুনে পথ ই ছাড়েনা। আরও জোরে ঢাক ঢোল কাঁসর বাজে। ফুল পড়ে। তারপর সেই বৈরাগি বটতলায়। সেখানেই তো মেলা। বহু লোকের ভীড়। দু চারটে দোকান। এখানে বাণ ফুঁড়েছে একদল ভক্তা। তাদের তদারকি তদ্বির করছে ওস্তাদেরা। মূল মন্দিরের সামনে আটচালায় চলছে মনসা মঙ্গলের পালা গান। দ্বিজ বংশী দাস ; ক্ষেমানন্দ দের পদ। এখন বনকাটি গ্রামের সন্তোষ চক্রবর্তী আর তার দল ভালো গান করেন। আগে ডাঙ্গাল গ্রামের বৈরাগি দের দল গাইত। আগের রাত থেকে গান আরম্ভ হয়। কমপক্ষে বারো চৌদ্দ বা কোনবার তার ও বেশী ছাগ বলি হয়। অনেকের মানত থাকে। আশেপাশে র পাঁচ সাতটা গ্রাম থেকে মানুষ জন আসে।মেয়ে রাই যেন বেশি। মেলা তলা জমে ওঠে নানা পসরায়। একদিনের আয়োজন উৎসব পুজো। শেষ বিকেল পর্যন্ত চলে। রাতে সব ফাঁকা। আবার কখনও কখনও চেষ্টা হয়েছে দু দিনের পরব করার। যাত্রা গান। ফাংশান এসব করার। পয়সা র অভাব। গরীব মানুষের গাঁ। কে দেবে এত পয়সা। তবে এবার কমবয়সী ছেলেরা উদ্যোগ নিয়েছে। নানা গাঁ য়ে ঘুরে চাঁদা আদায় করেছে। কাল রাতে জলসা হবে। এবার বাড়তি ঢাক ঢোল আনিয়েছে। নারানপুর উদয়পুরের ঢাক মাজুরিয়া র ঢাক ঢোল এসেছে। অযোধ্যা গ্রামের বাগদী পাড়ার দক্ষ ছেলেরা বাণ ফোঁড়ার আয়োজন করেছে। আর এইসব মানুষ জনের আপ্যায়ন খাওয়া দাওয়া র দিক দেখতে তো লোক চাই। এমনি এমনি তো আর সব কিছু হয়ে যাবেনা। সে সব দেখছে মাধব মধু কেষ্ট বাউরী রা। আখড়ায় তার আয়েশ জমজমাট। ----------------৷ ৷ -------------------------------------

Sunday, 12 May 2019

বসুধা। বসুধা থেকে মিরাস মৌখিরা

বসুধা। আহা। কি সুন্দর মধুক্ষরা নাম।
কে কবে রেখেছিল। তা কি আজ আর বলা যায়। নামের উৎপত্তি কিভাবে। আন্দাজ করা যায়। বৌদ্ধ দেবী বসুধারা নাম থেকে আসতে পারে। কেননা একদিন এই অজয় অববাহিকায় তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্মের যথেষ্ট
প্রসার ঘটেছিলো। আবার ধর্ম্মমঙ্গলের অন্যতম এক কবি নরসিংহ বসুদের পৈতৃক
ভিটা ছিল এই গ্রামে। বসুধাম থেকে বসুধা।
অনেক ছড়ানো বিস্তৃত মৌজা এই লাট বসুধা। অজয়ের দক্ষিণ পাড় থেকেশুরু করে  একেবারে আউসগ্রামের জঙ্গলভূমি
পর্যন্ত। একদিন মাঝে তার বইত অজয়ের ই একটি জলধারা। বৃদ্ধ নদী। বেশ দহ ছিল সেই কালীদহ। পারাপার এর জন্য ছোট নৌকো চলত। চালাত চণ্ডালেরা। আবার শবদেহ দাহ ও করত। কাছে ই প্রাচীন শিব মন্দির। ওপারে ধর্মরাজ মন্দির। অনেক গুলি ছোট চারচালা শিব মন্দির ছিল।
কাছেই রূপাই চণ্ডী তলা। বিখ্যাত তার যাত্রা আসরের জন্য। একদিন ছিল ঘন অর্জুন পালাশের জঙ্গল। গালা বানাত লরি রা।
তারা খুব দুর্ধর্ষ ও ছিল শোনা যায়।
তখন এখানকার জঙ্গল ভূমিতে অনেক তান্ত্রিক ব্রহ্মচারীরা বিচরণ করেন। তাঁদের একজন বাবা দুলো রায়।
অনেকগুলো পাড়া। বাগুড়া। বাঘারায় নাম থেকে। কালু বীরের থান। সেখানে বেশ কয়েকটি জৈন এবং বৌদ্ধ ভগ্ন মূর্তির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। মেটে পাড়া।
জয়রাম নামের এক আদিবাসী নদীতীরে
নীল চাষ করে বেশ ধনী হয়েছিল।অনেক জমি জায়গা করেছিল। ওপার ইলামবাজার তখন নীল গালার বিখ্যাত গঞ্জ হয়ে উঠেছে। ইংরেজ দের সাথে তার ভালো সখ্য।
তার পরিবার বেশ ঘনিষ্ট হয়েছিল তাদের।
অজয়ের পলিমাটি দিয়ে গড়া। চাষের দারুন ক্ষেত্র। এখানকার সব্জী ছিল বিখ্যাত।
পূর্বপাড়ায় শাকদ্বীপি গ্রহবিপ্র দের পাড়া।
এঁরা বেশ প্রাচীন। এঁদের পরিবারের দুর্গাপূজার আয়োজন কমপক্ষে তিনশত বছর এর পুরনো। পূর্ব ঘোষ পাড়া। সেখানে ও আছেন কয়েক ঘর নিম্ন শ্রেণীর ব্রাহ্মণ। আর মেটে।  সদগোপদের ই প্রাধান্য।
এই পাড়া এবং অন্য পাড়াগুলি থেকে ও অনেক পরিবার বন্যা র ভয়ে উঠে উঁচু ডাঙ্গা জমিতে গিয়ে গ্রাম পত্তন করেন। গ্রামের নাম তাই ডাঙ্গাল। এখানকার সদগোপ ঘোষ বাবুরা একদিন যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিলেন।
অনেক আদিবাসী মানুষ আছেন এখানে।
কোঁড়া ; মাহালী ; সাঁওতালরা। একদিন  চাষাবাদ এবং নীলকুঠীর কাজের জন্য এঁদের আনা হয়েছিল বা এসেছিলেন।
ডাঙ্গাল গ্রামের দু টি অংশ। একটি আদিবাসী
পাড়ার নাম রাজাপোতা ডাঙ্গা। ইতিহাস আছে তার। রূপাই চণ্ডী তলায় নবমী পুজার দিন ছাগ বলি দেওয়া হত। সদগোপ দের পক্ষ থেকে। আচার্য পদবীর ব্রাহ্মণ রা ছিলেন পুরোহিত। এঁদের আনানো হয়েছিল। পরে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার এর দায়িত্বে যায়।
ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর সময় দশঘরার জমিদার রা বসুধা র জমিদারী কিনেছিলেন। তাঁদের ছিল কাছারী বাড়ি। সামনে ' রঙ বাগান '.।
এক সময় টোল শিক্ষায় বসুধা র খুব খ্যাতি ছিল। জ্যোতিষ চর্চা বা শিক্ষায় গ্রহবিপ্র গণৎকার ব্রাহ্মণ ভট্টাচার্য পরিবারের খুব নাম যশ খ্যাতি ছিল।
পশ্চিম পাড়া বা রূপুটে পাড়ার ঘোষ ; ভাণ্ডারী সদগোপ দের প্রতিপত্তি ছিল।
কামার ; কুমোর ; মাল ; কোঁড়া রা ও ছিলেন।
বসুধা র বিখ্যাত সব্জী গোরুর গাড়িতে করে যেত নানা হাটে। ইলামবাজার ; বোলপুর ; সগড়ভাঙ্গা র হাটে বাজারে।
অনেক অনেক কথা এই বসুধা - মিরাস এর। মিরাস কে চেনা যাচ্ছেনা। কবি নরসিংহ বসু র সময়ের নাম। আজকের মৌখিরা।
বসুধার একেবারে দক্ষিণে বিরাট বিল।তার পাড়ে হত ব্যাপক নীল চাষ। ছিল নীলকুঠি।
সেখানের জঙ্গলের নাম তাই নীলকুঠি র জঙ্গল। মৌখিরা কালিকাপুরের রায় জমিদার বাবুদের সাথে তাদের ওঠাবসা।
বিশাল ধনী জমিদার হয়ে উঠেছিলেন রায় বাবুরা। বসুধা থেকে মৌখিরা কালিকাপুর পর্যন্ত পুরো এলাকা জুড়ে তাদের দাপট ; কর্তৃত্ব। বিশাল বিশাল জমিদার বাড়ি ; সহ অনেক মন্দির তাঁরা নির্মান করিয়েছিলেন।
সে অনেক কথা। আলাদা পর্বে লিখব।
----------------৷৷৷৷৷৷৷  ------------------৷৷৷৷৷  -----

ফুল দিয়ে নাম আমার ঃ ফুলঝোড়

ফুল দিয়ে গ্রামের নাম তো এই বাংলা য় অনেক আছে। কিন্তু আমার যেমন প্রথমেই মনে আসে ফুলকুসুমা বা বাঁকুড়ার চলতি তে ফুলকুসমা র নাম; আবার পাথর বললেই পাথর প্রতিমার নাম।মনে গেঁথে আছে। প্রায় সবার ই। আমাদের আছে রাজকুসুম।আছে ফুলঝোড়। এই আমাদেরই কাঁকসা থানা এলাকার মধ্যে। নিশ্চয়ই ফুলঝোড়ের থেকে রাজ কুসুম বেশ মিষ্টি শুনতে। আজ ফুলঝোর এর কথা।জঙ্গল ঘেরা গ্রাম।কাঁটাবেড়ে র বিখ্যাত জঙ্গলের গায়ে গা লাগিয়ে। কাঁটাবেড়ে বা ভাল কথায় কাঁটা বেড়িয়া। তার কথা আলাদা করে বলতে হবে। সে অনেক কথা। আজ ফুলঝোড়।ঝোড় মানে ঝোঁপ। বুনো ফুলের ঝোপঝাড়ে ঘেরা গ্রাম। ছোট্ট গ্রাম। গ্রামের গ্রাম দেবী ছিলেন দেবী ফুলেশ্বরী। এই দেখুন আবার ফুলেশ্বের এর কথা মনে আসে। ফুলেশ্বরী নামে একটি সিনেমা র কথা ও মনে আসে। তরুন বাবুর মিষ্টি সিনেমা। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় এর মিষ্টি মিষ্টি গান। যাই হোক সে অন্য কথা। এখন এই গ্রামে আর সেই অন্য অতীত এর গ্রাম দেবী ফুলেশ্বরী র ধাতু মূর্তি নাই। কবেই চুরি হয়ে গেছে। কিন্তু একদিন ছিল। তবে কবে কার হাতে কখন তাঁর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তা জানা যায়নি। মূর্তি টি কিন্তু ছিল অত্যন্ত বৈশিষ্ট্য পূর্ণ। ভয়ংকরী ; অষ্টভুজা। উদরদেশ তাঁর গভীর। যেন ক্ষুধার্ত। তিনি কি দুর্গা? না কি বৌদ্ধ প্রভাবিত কোন দেবী। কেননা একদিন এই বিদবিহার অঞ্চলে তথা সমগ্র এলাকায় ছড়িয়েছিল তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্ম। সে প্রায় হাজার বছর আগের কথা। অনেক অনেক কথা। পরে হবে। ( কৃতজ্ঞতা - গ্রামবাসী প্রবীণ শিক্ষক চন্দ্রমোহন গোপ)