Friday, 23 August 2019

যাপন চিত্র

এ এক অসহ্য যাপন। এবং দিন প্রতিদিন। ঐ বিশাল ভগ্ন প্রাসাদ। তার ই এক অংশে কোনমতে ভয়ে ভয়ে বাস। সামনে দেয়াল বেয়ে উঠেছে বট পাকুড়। নানা দিকে ছড়িয়েছে শিকড়ের জাল। কখনও বা মনে হয় জড়িয়ে ধরে আছে যেন। কেননা দেওয়ালের মোটা কোনের জোড় ও তো ফেটে গেছে। চূন সুরকী তাই টিঁকে আছে আজও। ইঁটে নোনা তো লাগার ই কথা। লেগেছে। তবু কিন্তু টিঁকে আছে। হয়তো এভাবেই কেটে যাবে আরও কিছু কিছু দিন। মনে হয় যেন ভালো করে জড়িয়ে ধরছে বটপাকুড়ের দশ হাত পা। না। জড়িয়ে ধরেছি আষ্টেপৃষ্ঠে। পড়তে দিচ্ছি না। হ্যাঁ। ওঠে চিতি সাপ উঠে যায়। ঢুকে যায় ঢোঁড়া। আর জল সে তো পড়বেই। বর্ষা য়। মেঝে ভিজে যায়।


এ সব নিয়ে ই তবু বাঁচতে হয়। উপায় তো না কিছুই নাই। এ যে কি বাঁচা। কে বুঝবে। নিজেরাই শুধু বুঝি। তাও কে কেমন ভাবে সে জানা যাবে না। স্বামী ; শাশুড়ি ; ছেলে ; নিজে। সবার অনুভব আলাদা আলাদা। আমি শুধু জানলার ধারে বসে ভাবি আমিকি না জমিদার বাড়ির বৌ। সামনের বাঁধানো ঘাটের দিঘী র সামনে দাঁড়িয়ে জল দেখি। জল। অবিরল। বয়ে যায় স্রোত গভীর ভিতরে। এ যে কি যাপন। চার দিক জুড়ে শুধু ভাঙা। আর ভাঙ্গনের শব্দ। সুতীব্র গভীর বিষাদ যাপন। একসাথে মিলে যায় মানকর কবিরাজ বাড়ি, কালিকাপুর রায় বাড়ি, বারুইপুর পাল বাড়ি কি গৌরবাজার পাণ্ডে বাড়ি । কালস্রোতে সব পুরোনো ধনী জমিদার বাড়ির প্রায় একই অবস্থা। আজ অসহায় বর্তমান প্রজন্ম। দুঃ সহ যাপনের অসহ্য বিষাদ বেদনা র স্রোত বয়ে যায় অবিচ্ছিন্ন ভাবে।



No comments:

Post a Comment