এ সব নিয়ে ই তবু বাঁচতে হয়। উপায় তো না কিছুই নাই। এ যে কি বাঁচা। কে বুঝবে। নিজেরাই শুধু বুঝি। তাও কে কেমন ভাবে সে জানা যাবে না। স্বামী ; শাশুড়ি ; ছেলে ; নিজে। সবার অনুভব আলাদা আলাদা। আমি শুধু জানলার ধারে বসে ভাবি আমিকি না জমিদার বাড়ির বৌ। সামনের বাঁধানো ঘাটের দিঘী র সামনে দাঁড়িয়ে জল দেখি। জল। অবিরল। বয়ে যায় স্রোত গভীর ভিতরে। এ যে কি যাপন। চার দিক জুড়ে শুধু ভাঙা। আর ভাঙ্গনের শব্দ। সুতীব্র গভীর বিষাদ যাপন। একসাথে মিলে যায় মানকর কবিরাজ বাড়ি, কালিকাপুর রায় বাড়ি, বারুইপুর পাল বাড়ি কি গৌরবাজার পাণ্ডে বাড়ি । কালস্রোতে সব পুরোনো ধনী জমিদার বাড়ির প্রায় একই অবস্থা। আজ অসহায় বর্তমান প্রজন্ম। দুঃ সহ যাপনের অসহ্য বিষাদ বেদনা র স্রোত বয়ে যায় অবিচ্ছিন্ন ভাবে।
Friday, 23 August 2019
যাপন চিত্র
এ এক অসহ্য যাপন। এবং দিন প্রতিদিন।
ঐ বিশাল ভগ্ন প্রাসাদ। তার ই এক অংশে
কোনমতে ভয়ে ভয়ে বাস। সামনে দেয়াল বেয়ে উঠেছে বট পাকুড়। নানা দিকে ছড়িয়েছে শিকড়ের জাল।
কখনও বা মনে হয় জড়িয়ে ধরে আছে যেন। কেননা দেওয়ালের মোটা কোনের জোড় ও তো ফেটে গেছে।
চূন সুরকী তাই টিঁকে আছে আজও। ইঁটে নোনা তো লাগার ই কথা। লেগেছে। তবু কিন্তু টিঁকে আছে। হয়তো এভাবেই কেটে যাবে আরও কিছু কিছু দিন।
মনে হয় যেন ভালো করে জড়িয়ে ধরছে বটপাকুড়ের
দশ হাত পা। না। জড়িয়ে ধরেছি আষ্টেপৃষ্ঠে। পড়তে দিচ্ছি না।
হ্যাঁ। ওঠে চিতি সাপ উঠে যায়। ঢুকে যায় ঢোঁড়া।
আর জল সে তো পড়বেই। বর্ষা য়। মেঝে ভিজে যায়।
এ সব নিয়ে ই তবু বাঁচতে হয়। উপায় তো না কিছুই নাই। এ যে কি বাঁচা। কে বুঝবে। নিজেরাই শুধু বুঝি। তাও কে কেমন ভাবে সে জানা যাবে না। স্বামী ; শাশুড়ি ; ছেলে ; নিজে। সবার অনুভব আলাদা আলাদা। আমি শুধু জানলার ধারে বসে ভাবি আমিকি না জমিদার বাড়ির বৌ। সামনের বাঁধানো ঘাটের দিঘী র সামনে দাঁড়িয়ে জল দেখি। জল। অবিরল। বয়ে যায় স্রোত গভীর ভিতরে। এ যে কি যাপন। চার দিক জুড়ে শুধু ভাঙা। আর ভাঙ্গনের শব্দ। সুতীব্র গভীর বিষাদ যাপন। একসাথে মিলে যায় মানকর কবিরাজ বাড়ি, কালিকাপুর রায় বাড়ি, বারুইপুর পাল বাড়ি কি গৌরবাজার পাণ্ডে বাড়ি । কালস্রোতে সব পুরোনো ধনী জমিদার বাড়ির প্রায় একই অবস্থা। আজ অসহায় বর্তমান প্রজন্ম। দুঃ সহ যাপনের অসহ্য বিষাদ বেদনা র স্রোত বয়ে যায় অবিচ্ছিন্ন ভাবে।
এ সব নিয়ে ই তবু বাঁচতে হয়। উপায় তো না কিছুই নাই। এ যে কি বাঁচা। কে বুঝবে। নিজেরাই শুধু বুঝি। তাও কে কেমন ভাবে সে জানা যাবে না। স্বামী ; শাশুড়ি ; ছেলে ; নিজে। সবার অনুভব আলাদা আলাদা। আমি শুধু জানলার ধারে বসে ভাবি আমিকি না জমিদার বাড়ির বৌ। সামনের বাঁধানো ঘাটের দিঘী র সামনে দাঁড়িয়ে জল দেখি। জল। অবিরল। বয়ে যায় স্রোত গভীর ভিতরে। এ যে কি যাপন। চার দিক জুড়ে শুধু ভাঙা। আর ভাঙ্গনের শব্দ। সুতীব্র গভীর বিষাদ যাপন। একসাথে মিলে যায় মানকর কবিরাজ বাড়ি, কালিকাপুর রায় বাড়ি, বারুইপুর পাল বাড়ি কি গৌরবাজার পাণ্ডে বাড়ি । কালস্রোতে সব পুরোনো ধনী জমিদার বাড়ির প্রায় একই অবস্থা। আজ অসহায় বর্তমান প্রজন্ম। দুঃ সহ যাপনের অসহ্য বিষাদ বেদনা র স্রোত বয়ে যায় অবিচ্ছিন্ন ভাবে।
অমাবস্যা দিন
বটে এ এক সময়।
না আজ আর দিকদশটা নয়
বৃত্তের অন্তর্গত সব কোন ই আজ ধর্তব্য
দিক শব্দ টা কি যথার্থ
যেমন জটিলতা শব্দটির ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে অনেক
বহু কৌনিক জটিলতার একটা সামগ্রিক নাম করন প্রয়োজন।
আবার এই সব হারানোর দিকে ছুটে যাওয়া সময়
এত দ্রুত তার প্রেক্ষিত পরিবর্তন।
এই সময়ের নামকরণ যজ্ঞের ঋত্বিকেরা নিশ্চয়ই বসেছেন নিজ নিজ নিশ্চিত আরামকেদারায়
আমি অস্থিরতার রোগাক্রান্ত এক অতিদ্রুত বাই পোলার মনোরোগী বড়জোর হিষ্টিরিয়া ছিলাম
ডাক্তারের দেখা নেই।
------------------+------------------
প্রণব ভট্টাচার্য। অমাবস্যা বৈশাখী।
সাতকাহনিয়া বাবাজী আখড়া
সাতকাহনিয়ার বাবাজী আখড়া।
অনেক পুরোনো গ্রাম। অজয়ের দক্ষিণ তীরে।
একদিন ছিল অনেক গুলো বৈষ্ণব আশ্রম বা আখড়া।
গাঁয়ের মাঝ খানে বিরাট পুরোনো বট জানান দিচ্ছে তার প্রাচীনত্ব।। নাম তার বাবাজী বটতলা। কোন বাবাজী যে রোপণ করেছিলেন -।
বটতলার পাশেই বৈষ্ণব সমাধি স্থল । পাশেই নবীন দাস বাবাজীর আখড়া। সে অনেক পুরনো। শতবর্ষের ও বেশী। আরও ছিলেন বুড়ো বাবাজী ; সনাতন বাবাজী ; গোপাল বাবাজীর মতো সহজ সাধকেরা।
আজ যদিও আর তাদের আশ্রমের চিহ্ন নাই। আছে কেবল এই নবীন দাস বাবাজীর আশ্রম।
সে ও টিকে গেছে এই আশ্রমে একদিন এসে ঠাঁই পেয়ে ছিল বালকমাতা দাসী। গৃহী বোষ্টম ঘরের বাল্যবিধবা।
আবার তাঁর কাছে ঠাঁই পেয়েছিলেন বামুন ঘরের প্রায় বাল্যবিধবা অন্নপূর্ণা দেব্যা।
বালকমাতা কে আমি মাতামা বলেই ডাকতাম। মা ও বলতাম। কোলে পিঠে করে মানুষ করেছেন। প্রায় কোলে চাপিয়ে নিয়ে যেত ওপারে ভিক্ষা বা মাধুকরী করতে।
বনে জঙ্গলে নানা লতা পাতা তুলতে।
কেন্দুলীর মেলায় নিয়ে যেত আমাকে। নানা আখড়ায় ঘুরতাম।
ছোট থেকেই সহজ সাধনার নানা গুহ্য প্রক্রিয়া সম্পর্কে আগ্রহ তৈরী হয়ে গিয়েছিল।
কত সাধক বাবাজী বাউল বোষ্টম যে এই সাতকাহনিয়ার
আশ্রমে এসেছেন। কত জনের গান শুনেছি তাদের কোলে বসে। আমি যে ছিলাম বালক মাতার পালিত ছেলের মতো। সবাই খুব ভালোবাসতেন।
পরিণত বয়সে মানে ১০১ বছর বয়সে মারা যান। কানে ভাসে তাঁর গুরু র সেই কথা " ওরে আমাদের গুরুর কোন শিষ্য ১০০র নীচে দেহ রাখবেনা রে "
তোর মাতার বয়েস ১০১ "
আশ্রমের বাইরে এই তমাল টি হলুদ ফলে ফলে ভরে গেছে। বুড়ো বাবাজী তলার তমাল টি ২০০ বছরের কাছাকাছি।
আহা কি শীতল তার ছায়া।
আমার গ্রামের দশহরা উ ৎসব
অজয় এখানে বাঁক নিয়েছে পশ্চিম থেকে উত্তরে।
গাঁয়ের উত্তরে অজয়। গাঁয়ের নাম সাতকাহনিয়া। এখানকার দশহরা র ধূম জমজমাট। সে অনেক কাল আগে থেকেই। তখন নদী তে জল গড়াত।দু তিন ফুট জল।সে ছিল অন্য নদী। সে নদী আর নাই। ঠাকুর চান করাতেনদী যায়। সংগে সংগে ভক্তাদের দল। ধীবর দেয়াসী রা ঠাকুর কোলে করে নিয়ে যায়। ভর নামে তাদের। আরও কারো কারো। আর আমরা সবার আগে ছুটে ছুটে। খালি পায়ে। পায়ের তলা পুড়ে যায়। তো কি।
গিয়েই জলে ঝাঁপ। নীলবাড়ি র কলাবাগানের ঘাট থেকে শিমুল তলার ঘাট পর্যন্ত। চি ৎ সাঁতার। জল ই টেনে নিয়ে যায়। আমরা গাঁয়ের ছেলে। পুকুরে চান। কমবয়েস থেকেই জল খেয়ে খেয়ে সাঁতার শিখেছি। আমাদের আর ভয় কি। এই রকম দু তিনবার। তবে মাঝে মাঝে নদী র পশ্চিম দিকে একবার আর একবার পুব দিকে তাকাতাম।কোন দিক থেকে যে মা গঙ্গা কুমীরের মতো হাঙ্গরের না মকরের পিঠে চেপে ভেসে আসবে।
তারপর জল থেকে উঠে হালদার বাড়ি র বিরাট গামলায় চিঁড়ে প্রসাদ। মাঠে তখনও চলছে বটূ কোঁড়া ভোঁটা মাল ষষ্ঠী বাউরী দের দলের ষোট খেলা। তাল তাড়ির দম। গায়ে অসুরের শক্তি যেন। চারপাশে অনেক মানুষ। খেলা দেখছে। ওব্বো ওব্বো দিচ্ছে।
ঠাকুরের নদী স্নান পর্ব প্রায় দু ঘণ্টার। বেলা গড়ালে নদী থেকে ফেরা। পথে নানা জায়গায় থামা। মনস্কামনা পূরণের জন্য পথের উপর কেউ হত্যে দিয়ে পড়ে আছে।
সে মায়ের জবাব ভর এসেছে যে দেয়াসী র তার মুখ থেকে না শুনে পথ ই ছাড়েনা। আরও জোরে ঢাক ঢোল কাঁসর বাজে। ফুল পড়ে।
তারপর সেই বৈরাগি বটতলায়। সেখানেই তো মেলা। বহু লোকের ভীড়। দু চারটে দোকান।
এখানে বাণ ফুঁড়েছে একদল ভক্তা। তাদের তদারকি তদ্বির করছে ওস্তাদেরা।
মূল মন্দিরের সামনে আটচালায় চলছে মনসা মঙ্গলের পালা গান। দ্বিজ বংশী দাস ; ক্ষেমানন্দ দের পদ।
এখন বনকাটি গ্রামের সন্তোষ চক্রবর্তী আর তার দল ভালো গান করেন। আগে ডাঙ্গাল গ্রামের বৈরাগি দের দল গাইত। আগের রাত থেকে গান আরম্ভ হয়।
কমপক্ষে বারো চৌদ্দ বা কোনবার তার ও বেশী ছাগ বলি হয়। অনেকের মানত থাকে। আশেপাশে র পাঁচ সাতটা গ্রাম থেকে মানুষ জন আসে।মেয়ে রাই যে বেশী। ওরা না এলে কি মেলা পুজো কিছু জমে।
মেলা তলা জমে ওঠে নানা পসরায়।
একদিনের আয়োজন উৎসব পুজো। শেষ বিকেল পর্যন্ত চলে। রাতে সব ফাঁকা। আবার
কখনও কখনও চেষ্টা হয়েছে দু দিনের পরব করার। যাত্রা গান। ফাংশান এসব করার। পয়সা র অভাব। গরীব মানুষের গাঁ। কে দেবে এত পয়সা। তবে এবার কমবয়সী ছেলেরা উদ্যোগ নিয়েছে। নানা গাঁ য়ে ঘুরে চাঁদা আদায় করেছে। কাল রাতে জলসা হবে। এবার বাড়তি ঢাক ঢোল আনিয়েছে। নারানপুর উদয়পুরের ঢাক মাজুরিয়া র ঢাক ঢোল এসেছে। অযোধ্যা গ্রামের বাগদী পাড়ার দক্ষ ছেলেরা বাণ ফোঁড়ার আয়োজন করেছে।
আর এইসব মানুষ জনের আপ্যায়ন খাওয়া দাওয়া র দিক দেখতে তো লোক চাই। এমনি এমনি তো আর সব কিছু হয়ে যাবেনা।
সে সব দেখছে মাধব মধু কেষ্ট বাউরী রা।
আখড়ায় তার আয়েশ জমজমাট।
----------------৷ ৷ -------------------------------------
Saturday, 17 August 2019
রক্ষিত পুর।
একটি গ্রামের নাম। থানা - কাঁকসা। প বর্ধমান। মলানদিঘী গ্রাম পঞ্চায়েত।
গড় জঙ্গল। গড় কেল্লা।
হাজার বছর আগের ' রামগঞ্জ তাম্র শাসনের ' রাঢ়াধিপ মহা মাণ্ডলিক ঈশ্বরী ঘোষের ' ঢেকুর গড় '। দেবী শ্যামারূপার নামে ' শ্যামারূপা র গড় '। পরিধি ঘিরে
ঘন জঙ্গলের বেষ্টনী। 'মহাবৃক্ষ ' রূপ শাল জঙ্গল। গড় কে ঘিরে কাঁটা বাঁশের ঘন বেড়। প্রায় দুর্ভেদ্য।
জঙ্গল ভূমি র দক্ষিণ প্রান্তে এই গ্রাম।
পাহারা দিচ্ছে ' চুয়াড় ' দের গ্রাম চুয়া।
লোহাগড়। অস্ত্র সস্ত্র নির্মাণের গ্রাম। আজকের লোহাগুড়ি।
হরিতকী বনের গ্রাম হরিকী।
তার মাঝে এই রক্ষিত পুর। ধন সম্পদ সৈন্য সামন্ত রক্ষিত থাকে এখানে।
পুরনো গড়ের ধ্বংসাবশেষ উপর এখানেই কেল্লা বানিয়েছিলেন বর্ধমান রাজ বংশের রাজা চিত্রসেন।
১৭৪০-৪৪ এর মধ্যে পরগণা সেনপাহাড়ী র জমিদারি অধিকার লাভ করেছিলেন দিল্লির শাহী দরবার ; মহম্মদ শাহের থেকে।
তারপর এই পরগনার পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেন।
কেল্লা সুরক্ষিত করেন। কামান এনে বসান।
ইংরেজ দের সাথে তখন তাঁর প্রবল বিরোধ।
কেল্লা র পাহারায় ঘোড় সওয়ার বাহিনী নিযুক্ত করেন। আছে ঘোড় দৌড়ে র মাঠ।
রক্ষিত পুরের চট্টরাজ পরিবার এখানে আসেন পাহারা দার বাহিনী র অন্যতম সৈন্যাধ্যক্ষ হিসাবে।
ধীরে বিশাল ধনী হয়ে ওঠেন তাঁরা।
ছিল নিজেদের পোষ্য ডাকাত বাহিনী।
সে সময়টা য় প্রায় ই ঘটে ডাকাতি। এক ভূস্বামী অপরকে আক্রমণ করছে। লুঠ করছে অপরের ধন সম্পত্তি।
সবার ই আছে সুরক্ষা তথা ডাকাত বাহিনী।
এই চট্টরাজ পরিবার নির্মাণ করিয়েছিলেন নিজেদের জন্য অত্যন্ত সুরক্ষিত প্রাসাদ। ভূগর্ভ কক্ষ তো ছিলই।
ছিল না কি কামানের নল ও।
নির্মাণ করিয়েছিলেন শিব মন্দির। বিষ্ণু মন্দির।
আজ ঘন জঙ্গলে ঢেকে আছে সেই সব কিছু।
গভীর রাত্রে না ই সেই ভগ্ন প্রাসাদের ভিতর থেকে একরকমের ভূগর্ভ থেকে ওঠা আওয়াজ শোনা যায়। কেউ কেউ শুনেছেন।
আমাকে তারা বলেছেন।
Subscribe to:
Posts (Atom)