Saturday, 21 December 2024

একই খিদে ঃ খিদের জ্বালা

।। একই খিদে ঃ একই জ্বালা।। ২ পর্ব। 

 মাটি। মা - টি ই। জননী মৃত্তিকা। হে মহা প্রকৃতি। 
 প্রতিদিন পুড়ে যায়। কত মাটি। ইঁট ভাঁটা গুলির দিকে তাকাবেন। মাটির পাহাড়। এত মাটি পুড়ে যাচ্ছে। পাহাড় প্রমান এত উর্বর মাটি আসে কোথা থেকে। উত্তর দেবার দায় কেউ নেবেনা। ভূমি সংস্কার দপ্তর আছে কিন্তু! 
 প্রতিটি ভাঁটা বা ইঁটখোলায় কি পরিমান  ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহৃত হয়। 
 কত বিদ্যুৎ পোড়ে। 
 হিসাব! হায় হিসাব। হিসাব নাই। তা নয়। এখানে বিনিময় প্রথা আছে। বুঝতেই পারছেন। 
 ও!  বললেন না যে কত মানুষের কর্ম সংস্থান হয়। 
 ঠিকই তো। পুরুলিয়া, সীমান্তের ঝাড়খণ্ড থেকে শ্রমিকরা আসে। কয়েক মাসের সংসার পাতা। কাঁচা ইঁটের ঝুপড়ি তে। চেহারায় শুষ্কতা। দারিদ্রের ছাপ স্পষ্ট। না। ঘুচলনা এঁদের দারিদ্র্য। স্বাধীনতার এত গুলো বছর পরেও। 
 কথা হচ্ছে ইঁট ভাঁটা নিয়ে। লক্ষ্য করে দেখবেন যেখানে যত ভালো দোঁয়াশ মাটি সেখানে পাশাপাশি ইঁটের ভাঁটা। 
 কত মাটি প্রতিদিন পুড়ে যাচ্ছে। মাটির বিকল্প মাটি। 
 এর পূরণ হবেনা। এর সাথে পুড়ে মরে যাচ্ছে কত অনুজীব।কত ক্ষুদ্র প্রাণ। 
 সব ভাঁটাই চলে কয়লায়। কিছু কাঠ ও লাগে। কাঠ মানেই বৃক্ষছেদন। আর যে কয়লায় ভাঁটা চলে সে কয়লা বাহক দের দেখতে পাবেন, একদিন ভাঁটার সামনে দাঁড়ালে। 
 কি ভাবে যে অত ভার বয়, এক একটা মোটর সাইকেলে।  
 কয়েক কুইন্টাল কয়লা। নিশ্চয়ই বলে দিতে হবেনা এই কয়লা কালো। আরে কয়লা তো কালো ই। 
 কালো টাকার মতো এই কয়লা কালো। 
 আকাশ জুড়ে কালো ধোঁয়া। শীতকালে এই ইঁট তৈরী র মরশুমে এই গ্রামাঞ্চলেও  সন্ধ্যায় মারাত্মক ধোঁয়াশা। 
অজয় তীরের বনকাটি, বিদবিহার আর দামোদর তীরের সিলামপুর, আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ইঁট ভাঁটার রমরমা। 
 আর ভাঁটার ট্রাকটর। ট্রিপ। মাটি ভর্তি ট্রাকটর ছুটছে যেন মার্সিডিজ। খুবই বিপজ্জনক ভাবে ছুটছে এই ভারী গাড়িগুলো । আর চালাচ্ছে সব কমবয়সী, সমাজের তথাকথিত নিম্নবর্গীয় ঘরের ছেলেরা। আপত্তির কিছু নাই। 
 এদের কিন্তু কোন ট্রেনিং নাই। লাইসেন্স নাই।  না থাক! 

 বুঝছেন না কেন ইঁট মানেই উন্নয়ন। কত বিশাল বিশাল 
 হাই রাইজ তৈরী হচ্ছে। ইঁট ছাড়া নগরায়ন সম্ভব! 
 ইঁট তো শরীর কোষের মতো। 
 মাটির ইঁট আর ছাই এর ইঁট এক হল! 
 না। এক নয়। 
 আমি দেখছি এক ভাবে। আপনি দেখছেন অন্য ভাবে। 
 দেখা তো আলাদা হবেই। 
 অথচ ভাবা যেত পারত। মাটি যে নাই তা নয়। যথেষ্ট মাটি আছে। নদীর মাঝে মাঝে যে চর জেগেছে - সেই চরের মাটিকে ব্যবহার করা যেতে পারত। নদীর স্রোতের বাধা দূর হত। দুপারেরই উপকার হত। 
 জলাধার গুলি তে ড্রেজিং করা যায়। মাটি তুলে তাকে ব্যবহার করার উপযুক্ত পরিকল্পনা করতে হবে। কে করবে। সরকার কেই এগিয়ে আসতে হবে। সরকার অবশ্য তার অপারগতা প্রকাশ করেই আছেন। 
 অতএব ছাড়ুন তাঁদের হাতেই যাঁদের ক্ষমতা আছে। 
 যাঁরা রাতারাতি একটা গোটা পাহাড় কে হজম করে দিতে পারে। আরাবল্লীর, কত পাহাড়, টিলা চুরি হয়ে গেছে। 
 আমাদের পুরুলিয়া তে ও তাদের শ্যেন দৃষ্টি। 
 অনেক দামী পাথর, মূল্যবান খণিজ সম্পদে ভরপুর। 
  লাভ আর লোভের চোখ চকচক করছে। 
 ------------ ------------ ------------ ------------ ----------- ২ য় পাতা শেষ।

No comments:

Post a Comment