।। ঐ তো তোমার ঘর।। কথা সাতকাহন।
- কি ব্যাটা কে নিয়ে এলি না কি রে!
- কই, দেখি, দেখি
রাস্তার পাশেই উঁচু ভিতের পাকা বৈঠক খানা ঘরের দাওয়ায় বসে আছেন এক বড়সড় চেহারার মধ্যবয়সী মহিলা।
- হ্যাঁ।
বলেই একটা সরু গলির মতো প্রবেশ পথে ঘরে প্রবেশ।
এ ঘর বাবার নয়। জ্যাঠা দের। পাশেই কাকার পাকা বাড়ি।
তার পিছনে একেবারে পিছনে একধারে বাবার ঘর।
তাকে সবাই দেখছে। জ্যাঠাইমা তাকে তার মায়ের গল্প শোনালো। সে মানুষ গুলো কে দেখছিল।
সমবয়সী জ্যাঠতুতো দাদা র সাথে সহজেই বন্ধুত্ব হয়ে গেল।
পরদিন ঘরের সামনের রাস্তা দিয়ে গ্রামের পশ্চিম দিকে।
এদিক টাই এসে তার খুব ভালো লাগলো। বিশাল দিঘী। সায়র। তার উত্তর দিকটা পাথর বাঁধানো। রাজাদের আমলের।
পাশাপাশি বেশ কয়েকটা পুকুর। লাল মোরামের রাস্তা চলে গেছে আর ও পশ্চিমে। দক্ষিণ দিকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে একটা
পাহাড়। পরে জেনেছে পঞ্চকোট। পশ্চিম দিকে বেশ কয়েকটি
ছোট পাহাড়। একটা পাহাড়ের মাথায় মন্দির দেখা যাচ্ছে।
ফুলবেড়িয়া। ওখানে না কি মেলা বসে পূজার সময়।
রাস্তার ধারে এক অশ্বত্থ গাছ। সেই গাছের নীচে দাঁড়িয়ে সে চারপাশ দেখতে লাগলো। এই দিকটা তার খুব ভালো লেগে গেল। মনে হল ঐ যে রাস্তা চলে গেছে উঁচু নীচু হয়ে - সেটা দিয়ে হেঁটে যায়। উঁচু চাতালের উপরে সাঁওতাল পাড়া।
সাইকেল নিয়ে একজন নেমে আসছে ঐ রাস্তা দিয়ে।
পশ্চিম দিকে শুঁড়ি পাড়া। তারা না কি বড়লোক। পাশেই ধোপা পাড়া। সেই পাড়াতে একটা কুয়ো। একজন মহিলা জল তুলছিল।হাতমুখ ধুয়ে , তার জল খেতে ইচ্ছে হল।
সঙ্গে আছে জ্যাঠতুতো দাদাভাই সাধন। তাকে তো চেনে। আমি কে জিজ্ঞেস করল। সে বলল আমার ভাই। কাকার ছেলে। প্রথম এসেছে।
- না ঠাকুর আমি জল দিতে পারবনা। আমার পাপ হবে।
সে ভাবতে লাগলো কিসের পাপ!
একটু জল দেবে মাত্র।
- চল ঘরে যাই। ঘরে গিয়ে খাবি।
রাতে বিছানায় শুয়ে সে ভাবতে লাগলো সেই যে এক চণ্ডালিনী বৌদ্ধ সাধুকে জল দিতে চায়নি,নীচু জাতের মেয়ে বলে, সেই
সেই মেয়ের হাত থেকেই তিনি জল খেয়েছিলেন। প্রথাও ভেঙেছিলেন।
তাহলে কি সেইসব পুরনো প্রথা রয়েই যাবে -
No comments:
Post a Comment