আর কি হারালো -------------------------- প্রণব ভট্টাচার্য । গাঁ ঘরে রাস্তা বলতে তো কিছু ছিলনা। সে তো এই চল্লিশ বছর আগে মাত্র। ছিল কুলি। তাই পথ। আবার বর্ষা য় জল যাবার চওড়া নালা। যাই হোক - তাই সই।তাতেই গাঁয়ের লোকের চলে যেত। আর না গিয়েই বা উপায় কি। গাঁয়ের ভিতরে উঁচু পাকা রাস্তা আর বানাচ্ছে কে। অতএব গরমে ধুলো ওড়া। আর বর্ষায় কাদা মাখা পা। তাই এক বালতি জল পা ধোয়ার জন্য দরজার পাশে নামানো ই থাকতো। হাঁ তবে গাঁয়ের ছেলেদের একটা ভাল খেলা হত বর্ষার সময়ে।কুলি দিয়ে অবিরল জলের স্রোত। আর পাশের শিব মন্দির এর উঁচু দাওয়া থেকে সেই জলে ঝাঁপ। পুকুর গোড়ে ভাসিয়ে জল। মাছ ও ভেসে যাচ্ছে। ওস্তাদ রা ছেড়ে দেবে। ধরছে। মাথায় চটের বস্তার টোপা চাপিয়ে মেয়েরা কুলি থেকেই জল নিয়ে যাচ্ছে। যাই হোক এ নিয়েই গাঁ ছিল। বড় রাস্তা বা কুলি র ধারে মানে ঠিক মোড়ের উপরে সম্পন্ন গৃহস্থ বাড়ি। মূল ঘর রাস্তার দিকে পিছন করে হলেও রাস্তার দিকে মুখ করে একটা বৈঠক খানা ঘর থাকতো। সামনে বারান্দা।হয়তো দু দিকে বসার জন্য বান্ধানো ধাপ। গল্প তো চাই। আড্ডা। পরচর্চা পরনিন্দা র মতো জমাটি বিষয় আরকি হতে পারে। অন্য গপ্পোও যে হতো না তা বলা যাবেনা। তাস পাশা ও হত। সন্ধ্যায় অনেকে ই গলা ভেজাতেন। হারমনিয়াম তবলা ও কোথাও কোথাও বেজে উঠত। সংগে কন্ঠসাধন। এই বৈঠক খানা গুলি ই ছিল গাঁয়ের গপ্পকথার উৎস কেন্দ্র। পরদিন সব আসর ই সব আসরের খবর নিত।খবর লেন দেন এর লোক ও ছিল ঠিকঠাক। ভালো খবরে তাদের একটু বেশী ডোজ পাওনা হতো। সারা গাঁ ই মোটামুটি সব আসরের খবরা খবর নিয়ে তারপর মেতে থাকত। এই ই ষোলআনা বিনোদন।
No comments:
Post a Comment