Wednesday, 25 October 2017

বিদবিহার : নাম কথা

আঞ্চলিক ইতিহাস : কাঁকসা জংগল  মহল।

বিদবিহার  : নাম কথা 
প্রণব ভট্টাচার্য

বিদবিহার।  একটি গ্রামের নাম। কয়েক ঘর মানুষের একটি ছোট্ট গ্রাম। আবার এই
নামেই গোটা গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম ও।
বিদবিহার নাম টি এসেছে বৌদ্ধবিহার থেকে। অপভ্রংশ।
অর্থাৎ একদিন এখানে বৌদ্ধবিহার ছিল।
যা এখনো  খুঁজে পাওয়া  যায়নি। অবশ্য
পণ্ডিত এরা বলেন ই  বাংলার ইতিহাস আছে বাংলার মাটির নীচে।
উত্তরে অজয়। ওপারে উত্তর রাঢ়।বজ্রভুমি। বজ্জভুমি। একদা দূর্গম লাঢ় এর জংগলাকীর্ণ  রুক্ষ পথহীন পথে হেঁটেছিলেন মহাবীর স্বামী।  তাঁর জৈন ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে। নানা ভাবে তিনি স্থানীয় রেঢ়ো মানুষ দের দ্বারা লাঞ্ছিত 
হয়েছিলেন।
পরে কিন্তু রাঢ়দেশ  জৈন দের কাছে পুণ্য ভুমি তে পরিণত হয়। রাঢ়দেশ এ জৈন ধর্ম বিকাশ লাভ করে।
কথিত আছে বুদ্ধদেব  বীরভূম এর উপর দিয়ে পুণ্ড্রনগর এ গিয়েছিলেন।
বাংলার বিখ্যাত পাল রাজাদের সময়ে
সহজযানী বৌদ্ধধর্ম রাঢ়দেশে যথেষ্ট বিস্তার লাভ করে।  সাধারণ মানুষ জাতপাত হীন এই ধর্মে আকৃষ্ট হয়।
প্রাচীন তন্ত্র ও বৌদ্ধতন্ত্র তখন মিলেমিশে
গেছে।নানা বৌদ্ধ দেবদেবী র মূর্তি পূজিত হচ্ছে নানা মঠ বিহার স্তুপে।
রাজহাট ; ঠাকুরানী বাজার ; দণ্ডেশ্বর; এসব  নামে সেই যুগের প্রভাব আছে।
নানা ভাঙ্গা দেব দেবী র মূর্তি  একসময়  ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল।  গাছতলা য়  পথের ধারে। সংরক্ষণ হয়নি।
প্রত্ন চোরে রা সব চুরি করে নিয়ে গেছে।

Saturday, 21 October 2017

আঞ্চলিক ইতিহাস : কাঁকসা জংগল মহল। বিদবিহার : নাম কথা প্রণব ভট্টাচার্য বিদবিহার। একটি গ্রামের নাম। কয়েক ঘর মানুষের একটি ছোট্ট গ্রাম। আবার এই নামেই গোটা গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম ও। বিদবিহার নাম টি এসেছে বৌদ্ধবিহার থেকে। অপভ্রংশ। অর্থাৎ একদিন এখানে বৌদ্ধবিহার ছিল। যা এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। অবশ্য পণ্ডিত এরা বলেন ই বাংলার ইতিহাস আছে বাংলার মাটির নীচে। উত্তরে অজয়। ওপারে উত্তর রাঢ়।বজ্রভুমি। বজ্জভুমি। একদা দূর্গম লাঢ় এর জংগলাকীর্ণ রুক্ষ পথহীন পথে হেঁটেছিলেন মহাবীর স্বামী। তাঁর জৈন ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে। নানা ভাবে তিনি স্থানীয় রেঢ়ো মানুষ দের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়েছিলেন। পরে কিন্তু রাঢ়দেশ জৈন দের কাছে পুণ্য ভুমি তে পরিণত হয়। রাঢ়দেশ এ জৈন ধর্ম বিকাশ লাভ করে। কথিত আছে বুদ্ধদেব বীরভূম এর উপর দিয়ে পুণ্ড্রনগর এ গিয়েছিলেন। বাংলার বিখ্যাত পাল রাজাদের সময়ে সহজযানী বৌদ্ধধর্ম রাঢ়দেশে যথেষ্ট বিস্তার লাভ করে। সাধারণ মানুষ জাতপাত হীন এই ধর্মে আকৃষ্ট হয়। প্রাচীন তন্ত্র ও বৌদ্ধতন্ত্র তখন মিলেমিশে গেছে।নানা বৌদ্ধ দেবদেবী র মূর্তি পূজিত হচ্ছে নানা মঠ বিহার স্তুপে। রাজহাট ; ঠাকুরানী বাজার ; দণ্ডেশ্বর; এসব নামে সেই যুগের প্রভাব আছে। নানা ভাঙ্গা দেব দেবী র মূর্তি একসময় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। গাছতলা য় পথের ধারে। সংরক্ষণ হয়নি। প্রত্ন চোরে রা সব চুরি করে নিয়ে গেছে।

Tuesday, 3 October 2017

অযোধ্যা -শ্যামবাজার এর তাঁতিপাড়া

তখন অযোধ্যা -শ্যামবাজার এর তাঁতিপাড়া সরগরম। ঘরেঘরে তাঁত। শাড়ী র পাড়ে চমৎকার সব ডিজাইন তুলছেন এখানকার দক্ষ তাঁতি রা।
বাইরে তার খুব কদর।পাকা রঙের সুতো আসে সুরুল ইলাম বাজার থেকে। নিলাম হয়। এখানে ও সুতো তে পাকা রঙ করা হয়।তাঁতিপাড়া - রাজনগর থেকে আসে তসর গরদ রেশম সুতো।এখানে বোনা হয় দামী শাড়ী।
তাঁতি দের অবস্থা ভাল হয়েছে।আরো ভাল হচ্ছে।
পুকুর কাটানো হচ্ছে।গোটা পাড়ার মালিকানা।নাম তাঁতি পুকুর। পাড়ে তার লাগানো হবে তাল গাছের সারি।
স্নান করে উঠে পুকুর পাড়ে গাছের গোড়ায় জল। লাগানো হল বটবৃক্ষ।
এখানকার তাঁতিরা গড়ে তুলছেন নিজস্ব পরিচিতি।
চাই দুর্গাপূজা। নিজেদের পাড়ার।
তাও চালু হল।ধুমধামের সাথে। বাড়ল মর্যাদা। আলাদা ইজ্জৎ।
এ হল সেই সময়।যখন এই এলাকা ধনেজনে পরিপূর্ণ। দেড় থেকে দু শো বছর আগে।
হাঁ। তাঁতি রা রয়েছেন এই গ্রামে।
কোন ঘরে আর তাঁত নাই।সে ই অবস্থা ও নাই।
মাঝে বন্ধ হয়ে যাবার পর - আবার কিছু মানুষের উদ্যোগে চালু হয়েছে দুর্গাপূজা। চলছে। পাড়াগত প্রচেষ্টা য়।
অধিকাংশ গরীব এর হাত থেকে মালিকানা বদল হয়ে গেছে পুকুরের।
নাম কিন্তু রয়ে গেছে সেই তাঁতিপুকুর।
পুকুর পাড়ের তাল গাছ সারি- সে কবেই শেষ হয়ে গেছে।

কোটালপুকুর গ্রামে সিং দের পুজো

জঙ্গল মহল।
উত্তরে অজয়। দক্ষিণে ঐ গড় জঙ্গল। গায়ে গায়ে গ্রাম। বনগ্রাম; নিমটিকুড়ি; দামোদরপুর: মসনা ; কোটালপুকুর।আর একটু দূরে গৌরাঙ্গপুর ; খেড়োবাড়ি।।আর একটু পশ্চিমে ' গড়ের মায়ের ' পুজো।দেবী শ্যামারূপা র।
এখানে সিং বা ড়িতে বিরাট ধুম।দুর্গাপূজো র। সিং রা ছত্রি বা ক্ষেত্রী রাজপুত।
তাঁদের পূর্বপুরুষ এক হায়াত সিং এসেছিলেন বর্ধমানের রাজা চিত্রসেনের আমলে। যুদ্ধনিপুণ। তাই কেল্লা পাহারার দায়িত্ব তাঁর। সে প্রায় দু- আড়াই শো বছর হচ্ছে।
চারপাশের গ্রামে সিং দের দারুন দাপট। বাঘে গরু তে একঘাটে জল খায়।সেই বাড়ির পুজো।
সেই পুজো এখন ও হয়। হচ্ছে।
তবে সে দিন তো আর নেই।
নানা জায়গা য় ছড়িয়ে আছেন এই সিং পরিবারের উত্তর পুরুষেরা।
তবে দুর্গাপুজার সময় অনেকে ই আসার চেষ্টা করেন।
অন্তত একটা দিন একসাথে কাটে।
কোটালপুকুর গ্রামে।
যদিও সেই গ্রাম আর নেই।

অযোধ্যা - বনকাটি এলাকার দুর্গোৎসব

অযোধ্যা - বনকাটি এলাকার ( থানা- কাঁকসা : প বর্ধমান) দুর্গোৎসব
অনেকগুলি ই পূজা। সব ই পারিবারিক। বা পাড়াগত।
অযোধ্যা গ্রামের ঘটক বাড়ি ; মুখোপাধ্যায় ; চট্টোপাধ্যায় পরিবারে র
প্রতিমা পূজা। বন্দোপাধ্যায় পরিবারে ঘট পূজা। পুজাগুলি প্রাচীন। 
তাঁতি পাড়ার প্রতিমা পূজা।
একসময় স্বর্ণকার দের পূজা ধুমধামের সাথে হত। এখন ঘট পুজা হয়। তেমন ই আর একটি ঘট পূজা হত। এখন সেটা উঠে গেছে।
একটি ছোট কিন্তু সুন্দর ধাতুমূর্তি র
দুর্গাপূজা হয় ঘটক পাড়ার প্রান্তে।
নবমী র দিন বনকাটির শ্মশান জঙ্গলে দেবী পাষাণচণ্ডী থানে ছাগ বলি হয়।
ঘটক রা পুরোহিত।
বনকাটি গ্রামে - মুখোপাধ্যায় ( ঘোষাল)
চট্টোপাধ্যায় ; রায় বা ড়ি ; কর্মকার ; স্বর্ণকার পরিবারে প্র তিমা পূজা হয়।
এক সময় দেড় দু শ বছর আগে এখানকার তাঁতি ; স্বর্ণকার ;কর্মকার দের আর্থিক অবস্থা যথেষ্ট ভাল ছিল।
ব্রাহ্মণেরা উপনিবিষ্ট হয়েছিলেন।
জমি জায়গা লাভ করেছিলেন।
পূর্বপুরুষ এরা চালু করেছিলেন দুর্গাপূজা। কিন্তু আজ আর সে অবস্থা নাই।গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতি বিপর্যস্ত।
পারিবারিক পূজা গুলি আজ প্রায় দায়।