Saturday, 19 May 2018
সিংহ দরজা
সিং দরজা
----------------- প্রণব ভট্টাচার্য
অনেক জমি জায়গার মালিক সম্পন্ন গ্রামীণ গৃহস্থ
পরিবার গুলির গৃহসমষ্টির মূল দরজা দেখেই বোঝা যেত তাদের আভিজাত্য।
রাজবাড়ি র সিংহদুয়ার ই তাঁদের প্রেরণা।
রাজা না হোক ছোট ;বড় ;মাঝারি ;জমিদার তো বটে। মনে তো গর্ব আছেই। হ্যাঁ - মেজাজ টা ও।
তাই ঠাকুর দালান ; ঘরবাড়ি সমেত সীমানা প্রাচীরের মাঝামাঝি সিংদরজা।
পশুরাজ সিংহ। সর্বময় কর্তৃত্ব তার। দরজার উপরে দুপাশে তার মূর্তি না থাকলে কি নিজেদের চেনানো যায়!
অন্যরকম ও যে হতনা তা নয়।
মূল পরিবার ভাঙতে ভাঙতে ; জমি জায়গা হারাতে হারাতে সেই সব পরিবার গুলির এখন জীর্ণ দশা।
পুরোনো স্মৃতি ই সম্বল।
ঐ দরজার দিকে তাকালে - অনেক কিছুই মনে ভিড় করে আসে তো বটে ই।
-------------------_-------------------------------
এক ই খিদে
বড় দুর্দশা এদের
-----------------------প্রণব ভট্টাচার্য
এদেশে মহাবীর হনুমান জী র মন্দিরের বোধ হয় অভাব নেই। যদি বা এখানে ওখানে ফাঁক ফোকর থেকে থাকে তা আশা করি সামনের বছর গুলিতে
ঠিক ই ভরে যাবে।
এদিকে জ্যান্ত হনুমান গুলির কি দশা -
কি চরম খাদ্যাভাবে এরা ভুগছে।
সংখ্যায় বেড়েছে প্রচুর।
তাদের বাসা প্রাচীন বৃক্ষ গুলি প্রায় নেই ই।
প্রাচীন গাছপালা সব কেটে ফাঁক। জংগল ভুমি
তে আম জাম পিয়াল মহুয়া হরিতকি বহেরা ইত্যাদি ফল পাকুরের গাছ আর নাই।
নাই সে অনেক দিন ই।
এর মাঝে বন বিভাগ বিদেশ থেকে শিক্ষা গ্রহন
করে সরকার পঞ্চায়েত এর মাধ্যমে ব্যাপক বন সৃজন করেছেন। লাগিয়েছেন ইউক্যালিপটাস আর
( আহা) সাধের সোনাঝুরি।
এদের ফুল পাতা কিছুই খাওয়া যায় না।
আর চাষি দের তো চাষ ছেড়ে দেওয়ার
মতো অবস্থা। মাঠে সব্জী ও নেই।
যে দু চারটে ছিঁড়ে খাওয়া যায়।
নিম পাতা শিরীষ পাতা কি কাঞ্চন পাতা
তাও মিলছেনা।
কি ম্লান মুখে হেথা হোথা ছড়িয়ে বসে রয়েছে
ওরা।
মুখের অভিব্যক্তি যেন অসহায় ভাবে বলছে
মানুষ তোমরা আমাদের জন্য কিছু কর। মরে
যাচ্ছি যে।
অসহায় অবস্থায় মনুষ্যেতর জীবেরা মানুষের ই সাহায্য চায় কিন্তু।
খিদের জ্বালায় অস্থির হয়ে যাচ্ছে। ক্ষিপ্ত হয়ে মানুষ কে জ্বালাতন করছে। প্রবল লাফালাফি করছে। ঘরদোর এর অবস্থা খারাপ করে দিচ্ছে।
সব ই ঠিক।
কিন্তু মূল কারন খাদ্যাভাব।
আমি আর কি করতে পারি। কষ্ট পাচ্ছি।
এদের জন্য ভাববার মতো যদি কেউ
থেকে থাকেন তাঁদের কাছে আমার এই লেখাটা
যদি-
যদি পৌঁছাত।
-- ----+------------+----------
এক ই কষ্ট
এদের কষ্ট কে যে বোঝে
-------------------- প্রণব ভট্টাচার্য
এই সময় কালের মধ্যে আমাদের গাঁ ঘরের বাড়ি ঘর দোরের চেহারা অনেক বদলে গিয়েছ। বদল স্বাভাবিক। আর তা মানতেও হবে। কিন্তু- -
চাষবাস করে বেঁচে থাকা গাঁ য়ের মানুষ দের গোয়াল ঘর ছিল। গোয়াল ঘরের পিছনে দিনের বেলায় গোরু ছাগল দের বেঁধে রাখার জন্য ছিল গোয়াল চালা।
বর্ষা বাদলে বা শীতের রাতে সেখানেই
আশ্রয় নিত কুকুর ছাগল ভেড়া ইত্যাদি রা। হঠাৎ বৃষ্টি এলে পথচারী রাও মাথা গুঁজত।
গোয়ালঘর আর প্রায় নাই।পিছনের চালা তো নাই ই।
গো চারন ভূমি ও আর নাই। ঘরে বলদ পুষে চাষ আর পোষায় না। সব ট্রাক্টর দিয়েই হচ্ছে।
ঘরে বেঁধে ছাগল কে খাওয়ানো র লতা পাতা ডালপালা ই আর কোথা। চরে আর খাবে কি।
একপাল ছানা পোনা নিয়ে মা কুকুর টার করুন দশা। কোথাও জায়গা পাচ্ছেনা।
এই ঠাণ্ডা তে যে কোথায় একটু জায়গা মেলে।এদিক ওদিক করছে। ঠাঁই নাই।গাছতলাতে শুকনো পালা পাতা র উপরে
কোন রকমে গুটিসুটি। বড় জাড়।
অথচ এরাই রাত জেগে গাঁ ঘর পাহারা দেয়।
দুটো খেতেও কেউ দেয়না।
আবার জায়গা দেবে মাথা গোঁজার।
অথচ সেই মানুষ কেই ভরসা করে।
বহু বহু পুরনো বন্ধু।
সেই যে প্রথম পোষ মেনেছিল মানুষের।
কি করে ছেড়ে যায়।
--------------+-----------------+-------------
Subscribe to:
Posts (Atom)